ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

মেলায় ছিল ক্রেতাদের ভিড়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৭
মেলায় ছিল ক্রেতাদের ভিড় অমর একুশে গ্রন্থমেলা/ছবি: জিএম মুজিব‍ুর

গ্রন্থমেলা থেকে: দুদিনের সাপ্তাহিক ছুটির পর রোববারের মেলায় ছিল পাঠকদের ভিড়। ছুটির দিনগুলোতে মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড় বেশি থাকলেও এদিন পাঠক-ক্রেতাদের ভিড় বেশি ছিল বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মেলার ১৯তম দিনে নতুন বই এসেছে ১১৫টি। এরমধ্যে মেলায় ৪৭টি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয়েছে।

নতুন বইয়ের মধ্যে কবিতার বই ৪৩, উপন্যাস ১৮, গল্পের বই ১২, প্রবন্ধ ২, ছড়া ৯, গবেষণা গ্রন্থ ৪, শিশুতোষ বই ২, জীবনীগ্রন্থ ৪টি, রচনাবলি ১টি, মুক্তিযুদ্ধের বই ২টি, ভ্রমণের বই ২টি, ইতিহাসের বই ২টি, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যের বই ২টি, অনুবাদ গ্রন্থ ৩ টি এবং অন্যান্য ৯টি।

বিকেলে মেলায় আসেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি মেলায় অন্যপ্রকাশের স্টলে কিছুক্ষণ বসেন এবং কয়েকটি বই কেনেন।

বিকেলে গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় যোগীন্দ্রনাথ সরকারের সার্ধশত জন্মবার্ষিকী শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আবুল মোমেন।

আলোচনা করেন রফিকুল হক, আলী ইমাম এবং সুজন বড়ুয়া। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ।

প্রাবন্ধিক আবুল মোমেন বলেন, যোগীন্দ্রনাথ সরকারের রচনাসহ বাংলাভাষার শ্রেষ্ঠ শিশুসাহিত্য কোনোভাবে বিস্মৃত হওয়া ঠিক হবে না। এসব সৃষ্টিকে বলা যায় বাংলাভাষার ধ্রুপদী শিশুসাহিত্য। এর মধ্যে যোগীন্দ্রনাথ সরকার শিশুসাহিত্যে অলঙ্করণ, সজ্জা এবং মুদ্রণে নতুন মাত্রা এনে দিয়েছিলেন। আজ হয়ত মুদ্রণশিল্পে ব্যাপক উন্নতির ফলে আরও সুন্দর পরিপাটি ঝকঝকে বই মিলছে, কিন্তু বইয়ের আধেয়ের দিক থেকে ধ্রুপদী শিশুসাহিত্যের স্থান বরাবর উচ্চতায় থাকবে।

তিনি বলেন, যোগীন্দ্রনাথ সরকারের সার্ধশত জন্মবার্ষিকীর সময় আমরা দেশের সকল মানুষের কাছে বাংলা শিশুসাহিত্যের অমূল্য ভাণ্ডারটিকে শিশুদের সামনে খুলে ধরার, যথাযথ পারিপাট্যে যুগোপযোগী প্রকাশনায় উপস্থাপনের অনুরোধ জানাব। সেভাবেই আমরা এই অমর শিশুসাহিত্যিকের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাতে পারি।

আলোচকবৃন্দ বলেন, বাংলা ভাষার প্রতিটি অক্ষরকে রক্ষা করতে আমাদের ভাষা শহিদরা যেমন বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন, তেমনি ধ্বনিময় ও ঝঙ্কারময় করে তুলেছিলেন যোগীন্দ্রনাথ সরকার।

বক্তারা আরও বলেন, নীতিকথা ও উপদেশমূলক পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি শিশুদের জন্য হাস্যরসাত্মক সাহিত্য সৃষ্টি করে বাংলা শিশুসাহিত্যে একটি সমৃদ্ধ ধারার সূচনা করেন। শিশুর মানসিক উৎকর্ষ সাধনে এবং জীবন ও জগৎ সম্পর্কে শিশুর কৌতুহল জাগিয়ে তোলার জন্য শিক্ষার সাথে সাহিত্যের অপূর্ব সম্মিলন ঘটিয়েছেন যোগীন্দ্রনাথ সরকার।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ বলেন, জ্ঞানের প্রতি তৃষ্ণা একটি জাতিকে তৈরি করার মূল প্রেরণা। যোগীন্দ্রনাথ সরকারের মতো উনিশ শতকের সাহিত্যিকেরা সেই দায়বদ্ধতা থেকেই শিশুসাহিত্য রচনায় ব্রত হয়েছিলেন। কিন্তু আমাদের শিশুসাহিত্যের ধ্রুপদী বইগুলো বর্তমানে ততটা সহজলভ্য নয়। যোগীন্দ্রনাথ সরকারের ধ্রুপদী বইপত্র শিশুদের হাতে হাতে পৌঁছে দিতে পারলে তার সার্ধশত জন্মবার্ষিকী সার্থক হবে।

সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল আমানুল হকের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ ব্যালে ট্রুপ’-এর পরিবেশনা। এছাড়া সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী লাকী সরকার, বদিয়ার রহমান, অনিমা মুক্তি গোমেজ, শরণ বড়ুয়া, শাপলা পাল এবং মো. মুরাদ হোসেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৭
এমএন/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।