ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

শুক্রবারের বিক্রিতে খুশি প্রকাশকরা

মাজেদুল নয়ন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৭
শুক্রবারের বিক্রিতে খুশি প্রকাশকরা শুক্রবারের বিক্রিতে খুশি প্রকাশকরা- ছবি: আনোয়ার হোসেন রানা

একুশে গ্রন্থমেলা থেকে: অমর একুশে গ্রন্থমেলার ২৪তম দিনে জমে উঠেছিল মেলা প্রাঙ্গণ। বিগত যেকোনো উৎসবের দিন বা ছুটির দিনের তুলনায় বিক্রি ছিল অনেক বেশি।

প্রকাশকরা জানান, মেলার শেষ দিনগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেশি হচ্ছে।

ইত্যাদি প্রকাশনীর প্রকাশক আদিত্য অন্তর বাংলানিউজকে বলেন, উৎসবের দিনগুলোতে ভিড় বেশি হয় ঠিকই।

কিন্তু বিক্রি বেশি হয় অন্য দিনগুলোতে। মেলার শেষ দিনগুলোতে বিক্রি স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যায়। অনেকেই এই শেষ দিনগুলোর জন্যে অপেক্ষা করেন।

মেলায় ধানমন্ডি থেকে আসা চাকরিজীবী রাহুল বলেন, মেলার মাঝামাঝি সময়ে আসলে সব বই পাওয়া যায় না। তবে একুশে ফেব্রুয়ারির মধ্যে উল্লেখযোগ্য বইগুলো চলে আসে। তাই এরপর থেকেই কেনা শুরু হয়।

শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) মেলা শুরু হয় সকাল ১১টায় এবং চলে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। এদিন নতুন বই এসেছে ১৪৬টি এবং ৫৩টি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।
 
অমর একুশে উদযাপন উপলক্ষে সকালে গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার। বিচারকমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে ছিলেন শিল্পী কল্যাণী ঘোষ, সালাহউদ্দীন আহমেদ, কিরণচন্দ্র রায়। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান।

প্রতিযোগিতায় ক-শাখায় প্রথম হয়েছেন মাহির আবিদ অক্ষ, দ্বিতীয় হয়েছেন সিনাতা আহ্মেদ (রিসা) এবং তৃতীয় হয়েছেন দিবা রানী দেব অর্পা। খ-শাখায় প্রথম হয়েছেন অনামিকা সরকার সোমা, দ্বিতীয় হয়েছেন মাশুক কায়সার ইভান, এবং তৃতীয় হয়েছেন তানিশা জাহান নরিকা।

অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতা কমিটির আহ্বায়ক রহিমা আখতার কল্পনা।

বিকেলে গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘ব্যারিস্টার আবদুল রসুল: জীবন ও কর্ম’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মামুন সিদ্দিকী। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন তাবেদার রসুল বকুল এবং সুভাষ সিংহ রায়। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক গোলাম কিবরিয়া ভূঁইয়া।

প্রাবন্ধিক মামুন সিদ্দিকী বলেন, বিশ শতকের প্রথম দুই দশকে বাংলার সমাজ ও রাজনীতিতে আবদুল রসুল একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। হিন্দু-মুসলিম ঐক্য ও সম্প্রীতি, ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রভাবনা, অর্থনৈতিক মুক্তি, স্বায়ত্বশাসন ইত্যাদি প্রসঙ্গে তার চিন্তাধারা ও ভাবাদর্শ বাঙালি সমাজকে বিপুলভাবে নাড়া দিয়েছিল। উন্নত সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে তার চিন্তাধারা তখন ততটা গুরুত্ব লাভ না করলেও আজ তার বিপুল প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে। বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলন, স্বদেশী আন্দোলন এবং সংবাদ-সাময়িকপত্র প্রকাশনা এবং নানাবিধ সমাজকর্মের মাধ্যমে তিনি একটি আদর্শ সমাজ গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন।

আলোচকরা বলেন, বাংলার রাজনীতির বিচিত্র পরিক্রমায় ব্যারিস্টার আবদুল রসুল এক ব্যতিক্রমী নাম। তিনি যেমন বাংলার রাজনীতির ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র গঠন করতে চেয়েছেন তেমনি জনলগ্নতাকে তার রাজনৈতিক ভাবনার কেন্দ্রে প্রতিস্থাপন করেছেন।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক গোলাম কিবরিয়া ভূঁইয়া বলেন, আবদুল রসুল একজন অসাম্প্রদায়িক-জাতীয়তাবাদী নেতা হিসেবে নিজেকে অনন্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। বঙ্গভঙ্গবিরোধী জনমত গঠনে তার ভূমিকা বাংলার ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল অধ্যাপক লিয়াকত আলীর পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্র’, শাহ্ সাদিয়া আফরিন মল্লিকের পরিচালনায় ‘হামিবা সাংস্কৃতিক একাডেমি’ এবং ‘ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী’র সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

বাংলাদেশ সময়: ২৩০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৭
এমএন/আরআর/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।