গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলা। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বইমেলার অংশের স্টলগুলোর প্রায় ১০০ ভাগ সম্পন্ন।
এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম লিটলম্যাগ চত্বর। মেলার তিনদিন অতিবাহিত হলেও 'অনাদরে' রয়েছে বহেরাতলার লিটলম্যাগ চত্বর। এখনও অর্ধেক স্টলের কাজ শেষ হতে বাকি। অসম্পূর্ণ লিটলম্যাগ চত্বর নিয়ে কর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
লিটল ম্যাগাজিনের লেখক, সম্পাদক নিজেই প্রকাশকের ভূমিকা পালন করেন। ক্ষুদ্র প্রকাশনা সংস্থা বা ব্যক্তি উদ্যোগে লিটল ম্যাগাজিন বের করা হয়। ৫শ’ টাকা দিয়ে বইমেলায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের বহেরাতলায় উঠতি লেখক ও প্রকাশকদের স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়। পাঠকের ভিড় ও বিক্রি কম হওয়ায় গ্রন্থমেলার এদিকটা অনেকটা উপেক্ষিতই বলা যায়।
পুথিনিলয় প্রকাশনীর কর্মকর্তা তুষার প্রসণু বাংলানিউজকে বলেন, অল্প টাকায় স্টল বরাদ্দ নেওয়া হয় বলে লিটলম্যাগ চত্বরে স্টল নির্মাণের কাজ শেষ হয় দেরিতে। কিন্তু আমার মতে, এসব লেখক-প্রকাশকদের আরও বেশি পৃষ্টপোষকতা করা উচিৎ। এরা বাণিজ্যিক দিক চিন্তা করে মনের তাগিদে বই বের করে। এখান থেকে ভবিষ্যতে বড় লেখক হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।
এবারের মেলায় লিটল ম্যাগ কর্নারে মোট ১৩৬টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। লিটল ম্যাগ কর্নারে বইপ্রেমীদের আনাগোনাও কম।
লিটলম্যাগ চত্বরের 'বইনিউজ' প্রকাশনার লেখক মিজান বলেন, লিটলম্যাগ কর্নারের বিশৃঙ্খল অবস্থা। আগামী তিন-চারদিনেও এর কাজ শেষ হবে না। আমরা বরাবরের মতো এবারও উপেক্ষিত। বড় প্রকাশনী আমাদের মতো তরুণদের লেখা ছাপাতে চান না। নিজেদের উদ্যোগে বই প্রকাশ করি, প্রচারণা পাই না, সহযোগিতাও পাই না।
লিটলম্যাগ চত্বর প্রসঙ্গে বইমেলার সদস্য সচিব ড. জালাল বাংলানিউজকে বলেন, ‘এবার প্রথমে লিটলম্যাগ কর্নার সোহরাওরার্দী উদ্যানে করার কথা ছিল। অর্ধেক কাজও সম্পন্ন হয়। কিন্তু লিটলম্যাগ লেখক ও প্রকাশকরা আগের স্থানে এই কর্নারকে ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব করলে নতুন করে সব প্রস্তুতি নিতে হয়েছে।
তিনি বলেন, লিটল ম্যাগাজিনের লেখক-প্রকাশকরা নিজেরা দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন। গতবার তারা বলেছিলেন, তাদের বড় জায়গা দরকার, এবার তারা বলছেন, ঐতিহ্য ধরে রাখবেন। এই দুইয়ের মধ্যে লিটলম্যাগ কর্নার তৈরি করতে সময় লাগছে। আশা করি, দুই-একদিনের মধ্যে লিটল ম্যাগ চত্বর সম্পূর্ণ প্রস্তুত হবে।
লিটল ম্যাগাজিন লেখকদের সহযোগিতা করা হয় না -এ বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ৫শ’ টাকায় কি স্টল পাওয়া যায়? শ্রমিক খরচ, কাঠ, বাঁশ, ব্যানার সব আমরা দিচ্ছি। গতবার ১০০টা লিটল ম্যাগাজিনের স্টল ছিলো এবার ১৩৬টি। লেখকের সংখ্যা বাড়ছে, আমরা তাদের বড় জায়গা দিতে চাইলাম তারা সহযোগিতা করলো না। এই ছোট স্থানের তাদের সংকুলান হচ্ছে না।
‘ভিন্ন চোখের' লেখক প্রকাশক আলী আফজাল খান বলেন, লিটল ম্যাগাজিনের স্থান পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছিলো। বহেরাতলার এই কর্নারটা লিটল ম্যাগাজিনের জন্য ঐতিহ্য। যতদিন বইমেলা হবে, ততদিন এখানেই লিটলম্যাগ থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৮
এমসি/আরআর