কোনো কোনো স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে নতুন বইয়ের পাতা উল্টিয়ে বুক ভরে ঘ্রাণ নিচ্ছে তারা। দেখে মনে হলো, পড়তে না পারলেও ঘ্রাণেই বইটাকে আত্মস্থ করার চেষ্টা করছে।
সাতজন রয়েছে এক দলে। মেলার সোহরাওয়ার্দী চত্বরে ঘুরছে আর মাঝে মাঝে একে-অপরের সঙ্গে খুনসুঁটিতে মেতে উঠছে। দেখে মনে হলো, বইমেলা তাদের প্রাণের স্পন্দনকে শতগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।
জন্মান্ধ বইপ্রেমী এ শিক্ষার্থীরা অধিকাংশই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি)। বইমেলার ঘোরার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী শাহনাজ বলেন, বইমেলা আমাদের অহঙ্কার। এ মেলার সঙ্গে মিশে আছে প্রাণের স্পন্দন। বই পড়া থেকে হয়তো আমি বঞ্চিত হচ্ছি, তবে নতুন বইয়ের ঘ্রাণ আমাকে আকুল করে তোলে। এজন্য ঘ্রাণ নিতে হলেও আসি।
দলের আরেক ঢাবি শিক্ষার্থী শাহিনুল হক জয় বলেন, বই মেলায় সবসসময় ঘুরতে ভালো লাগে। আমার সীমাবদ্ধতার কারণে আসতে পারি না। তবে সময় পেলে বা একজন সঙ্গী (গাইড) পেলে দলেবলে ঘুরতে আসি।
এই শিক্ষার্থীরা সবাই উচ্চা শিক্ষার দোরগোড়ায়। তাদেরও পড়তে ইচ্ছা করে উপন্যাস, কবিতা ও প্রবন্ধের বই। ব্রেইল অক্ষরে আটকে থাকায় বইয়ের বিশাল জ্ঞানের সম্ভারে প্রবেশের সুযোগ হয়ে ওঠে না তাদের। তারাও চায় সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে অনেক বই ব্রেইলে অনুবাদ হোক।
এ প্রসঙ্গে ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হাসান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা যে কোনো ধরনের বই হাতের নাগালে পেতে চাই। উপন্যাস, কবিতাও পড়তে চাই। যদিও পর্যাপ্ত বই ব্রেইল পদ্ধতিতে নেই, এ কারণে জ্ঞানের চর্চায় উপেক্ষিত। ঢাবি থেকে উচ্চশিক্ষিত হলেও ব্রেইল পদ্ধতির বইয়ের অভাবে জ্ঞানের পরিধি কমে যাচ্ছে।
এবারের বইমেলাও দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য 'স্পর্শ' নামে একটি স্টল রয়েছে। যেখানে ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখা দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য বই পাওয়া যাচ্ছে। যা একেবারেই অপর্যাপ্ত বলে জানান এ শিক্ষার্থীরা।
**বইমেলায় সাহিত্য আলোচনা, আছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৮
এমসি/আরআর