প্রতিষ্ঠিত কবিদের পাশাপাশি প্রতিবছর প্রচুর তরুণ কবিদের বই প্রকাশ হয় মেলাতে। এবারের বইমেলাও তার ব্যতিক্রম নয়।
মেলায় কবিতার এতো প্রকাশ নিয়ে কথা হয় কবি নির্মলেন্দু গুণের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘সব দেশেই ছোট-বড় কবি আছেন। বড় কবি সর্বকালে হয় না। একজন নতুন বা তরুণ কবি কিছুটা দুর্বল কবিতা লিখবেন এটাই স্বাভাবিক। তাই বলে তাকে নিরুৎসাহিত করা যাবে না। বরং তাকে স্বাগত জানাতে হবে। তারপর সতর্ক করে ভাষাটা আরও সমৃদ্ধ করা আরও সাবলীলভাবে লেখার কথা বলতে হবে। ’
কবি আসাদ চৌধুরী বলেন, ‘ইউরোপ, আমেরিকার মিথ, জাপান ও চীনের হাইকু- ইত্যাদির ব্যবহার করছেন বর্তমান সময়ের তরুণ কবিরা। তারা আমাদের সাহিত্যের পুনর্গঠনে ভাষার উৎস সন্ধান করে চলেছেন। সময়ের সঠিক ধ্বনি তারা ধরতে পেরেছেন, যা তাদের কবিতায়ও প্রতিফলিত হতে দেখি। ’
এ বছর মেলায় এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত এবং তরুণ কবিদের বেশকিছু বই প্রকাশ হয়েছে। প্রায় তিন বছর পর মেলায় এসেছে কবি নির্মলেন্দু গুণের কবিতার নতুন বই ‘একটি সন্তানসম্ভবা পাখির গল্প’, কাকলী থেকে এসেছে লেখকের ‘রচনাবলী পঞ্চম খণ্ড’, অন্যপ্রকাশ থেকে এসেছে সৈয়দ শামসুল হকের নতুন কাব্যগ্রন্থ ‘উৎকট তন্দ্রার নিচে’, চারুলিপি প্রকাশ করেছে সৈয়দ শামসুল হকের ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’, অনন্যা থেকে এসেছে মহাদেব সাহার ‘অনন্তের বাঁশি’, ইত্যদি গ্রন্থ প্রকাশ থেকে এসেছে মোহম্মদ রফিকের ‘কবিতাসমগ্র’, অন্বেষা প্রকাশন থেকে এসেছে রফিক আজাদের ‘প্রেম ও প্রকৃতির কবিতা’। পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স এনেছে পিয়াস মজিদের ‘নাচ, মারবেল ও গোধূলি’, ঐতিহ্য থেকে এসেছে একই কবির ‘ছোটকবিতা’, জুননু রাইনের ‘এয়া’, আগামী থেকে কাজল শাহনেওয়াজের ‘কবিতাসমগ্র’, অনিন্দ্য থেকে কামরুল হাসানের ‘ছেলেটা বৃক্ষ হতে চেয়েছিল’, অন্যপ্রকাশ থেকে মারুফুল ইসলামের ‘নতুন করে পাব বলে’, মূর্ধন্য থেকে তাহসিনা অ্যানির ‘ব্যস্ত পিঁপড়ার মতো ব্যস্ততা’, বলাকা প্রকাশনী থেকে এসেছে মারজু মুনের ‘স্পর্শের আড়ালে তুমি’, অন্যধারা এনেছে ফারহানা হোসেনের ‘নিষুপ্ত নিষাদ’, বটেশ্বর বর্ণন থেকে এসেছে হাসান মোস্তফার ‘সুবর্ণগায়ে যাবো’, অন্যপ্রকাশ থেকে দিলরুবা শাহাদৎ-এর ‘বসন্ত স্বপ্নের আলোছায়ায়’, ইসমত সুলতানার ‘আমি চিত্রাঙ্গদা’, তাম্রলিপি থেকে আশরাফুল আলমের ‘স্বপ্নচূড়া’, র্যামন পাবলিশার্স থেকে অংশুমানের ‘মাটির মৃত মগজ’ ইত্যাদি।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) মেলার দ্বার খোলা হয় বিকেল ৩টায়। এদিন মেলায় এসেছে নতুন ১০২টি বই। বিকেল গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় রুশ বিপ্লবের শতবার্ষিকী শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইমতিয়ার শামীম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ডা. সারওয়ার আলী ও সৈয়দ আজিজুল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক পবিত্র সরকার।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিচালনা করেন আবুল ফারাহ মো. তোয়াহার পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর’, মুজতবা আহমেদ মুরশেদের পরিচালনায় ‘স্বভূমি লেখক শিল্পী কেন্দ্র’ এবং মো. শহিদুল্লাহর পরিচালনায় ‘সারেগামাপা সঙ্গীত পরিষদ’।
১২ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১২তম দিন। এদিন মেলা চলবে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেলে অনুষ্ঠিত হবে শিক্ষা শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন আবুল মোমেন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন রাশেদা কে চৌধূরী, আতিউর রহমান এবং এ এম মাসুদুজ্জামান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মনজুর আহমেদ। সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক আয়োজন।
বাংলাদেশ সময়: ০১২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৮
এইচএমএস/আরবি/