গ্রন্থমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ঢুকতেই চোখে পড়বে নান্দনিক এক বাগানের প্যাভিলিয়ন। কাঠের ফ্রেমের মাঝে ছোট ছোট গাছ দিয়ে সাজানো হয়েছে প্যাভিলিয়নটি।
অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রথমবারের মতো প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ পেয়েছে এ প্রকাশনীটি। দিনে এক রূপ আর সন্ধ্যার পর আরেক রূপ নিয়ে কথাপ্রকাশ ইতোমধ্যে মুগ্ধ করেছে মেলায় আগতদের।
এ ব্যাপারে প্যাভিলিয়নের ইনচার্জ ইউনুস আলী বাংলানিউজকে বলেন, 'প্রয়াত নিসর্গবিদ দ্বিজেন শর্মা গত বছর আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কথাপ্রকাশের প্যাভিলিয়নটি গাছ দিয়ে সাজানো হয়েছে। যার নকশা করেছেন সব্যসাচী হাজরা। '
রাজীব রায় করেছেন পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স প্যাভিলিয়নের নকশা। দৈত্যাকৃতির পাঠাগারের মতো এ প্যাভিলিয়নে সেলফি তুলতে ভিড় জমাচ্ছেন অনেকেই।
সম্পর্কে রাজীব রায় বলেন, এ নকশার মাধ্যমে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা হয়েছে, যাতে পাঠকরা মনে করেন তারা পাঠাগারের ভেতরে বসে বই পড়ছেন। '
কথা হলো এ স্টলের সামনে সেলফি তুলতে আসা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আনিকা তাবাসসুমের সঙ্গে। মেলার বিভিন্ন স্টলে ঘুরে ঘুরে ছবি তুলছিলেন তিনি।
বাংলানিউজকে বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরেই বইমেলা প্রাঙ্গণে দারুণ সব প্যাভিলিয়ন ও স্টল নির্মাণ হচ্ছে। এবারও হয়েছে। বন্ধুরা এসে ছবি তুলে নিয়ে গেছে। তাই বই কিনতে এসে নিজেও ছবি তুললাম। '
নান্দনিক সজ্জায় মেলায় রয়েছে আরো নানান স্টল। অন্যপ্রকাশের প্যাভিলিয়ন সজ্জাতে প্রতিবারের মতো এবারও রয়েছেন জনপ্রিয় কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদ।
কার্জন হলের আদলে তৈরি এ প্যাভিলিয়নটি মন জয় করছে মেলায় আসা পাঠক-দর্শনার্থীদের। অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বছরই হুমায়ূন আহমেদকে প্যাভিলিয়নের মধ্যে শৈল্পিকভাবে উপস্থাপন করা হয়, এবারও হয়েছে। বইমেলা তো শুধু বইয়ের মেলা নয়, এটি ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক।
‘তাই স্টলের সাজেও আমরা ঐতিহ্যবাহী কার্জন হলকে সবার সামনে তুলে ধরেছি। এর নকশা করেছেন মাসুম রহমান। ’
সাদার ছোঁয়া রয়েছে জার্নিম্যান বুকসের প্যাভিলিয়নে। এর স্বত্ত্বাধিকারী কবি তারিক সুজাত ও তার স্ত্রী নাজনীন হক মিমি যৌথভাবে করেছেন নকশা।
চারদিকে খোলা এ প্যাভিলিয়নের ছোট্ট ছোট্ট জানালার ফাঁকে দেখা মেলে বিভিন্ন ধরনের ফুলের গাছ।
রিকশাচিত্রের শিল্পী প্রশান্ত কুমার দাশের রিকশাচিত্র অবলম্বনে সাজানো হয়েছে নিমফিয়া পাবলিকেনন্সের স্টল। সেখানে ফুটে ওঠেছে রিকশার বিভিন্ন নকশা।
তাম্রলিপির প্রকাশক এ কে এম তারিকুল ইসলাম রনি ও তার স্ত্রী তাসনুভা আদিবা সেঁজুতি যৌথভাবে কমলা বর্ণের চারচালা ঘরের আদলে সাজিয়েছেন তাদের প্রকাশনা সংস্থার প্যাভিলিয়ন।
বাতিঘরের স্টলের নকশা করেছেন শাহিনূর রহমান। এ স্টলটি সাজানো হয়েছে লালবাগ কেল্লার আদলে।
স্থপতি সাঈদ খন্দকারের নকশায় সংবেদ এবং তৌফিকুর রহমান খানের নকশায় ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেডের স্টলও নজর কেড়েছে সবার। কেউ কেউ স্টলের ফাঁকে দাঁড়িয়ে ফটোও তুলছেন জমিয়ে।
গত কয়েক বছর ধরে নান্দনিকভাবে নিজেদের প্যাভিলিয়ন ও স্টলসজ্জা করছেন প্রকাশকরা। যাদের প্যাভিলিয়ন বা স্টল সবচেয়ে নান্দনিক হবে, তারা পাবেন ‘কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’।
গত বছর এ পুরস্কার পেয়েছিল বাতিঘর, সংবেদ ও পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৮
এইচএমএস/এমএ