বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বইমেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, যেসব শিশুরা সারাদিন ব্যস্ত থাকে চকোলেট কিংবা ফুল বিক্রিতে কিংবা প্লাস্টিকের বোতল ও কাগজ কুড়িয়ে বেড়ায় তারাও অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে মিশে গেছে বইমেলায়। সাধারণত পথশিশুদের বিভিন্ন স্থানে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বইমেলার শিশু চত্বরে নেই কোনো মানা।
কায়েস চকোলেট বিক্রি করে গত এক বছর যাবৎ। খেলায় এখন সে চোর! হাত দিয়ে তার চোখ চেপে রেখেছে আরেকজন। তার মাথায় টোকা দিচ্ছে অন্যরা। চোখ খোলার পর তাকে বলতে হবে কে প্রথমে তাকে টোকা দিয়েছে। না পারলে আবার চোর সেই! এভাবে খেলা চলছে।
খেলায় মত্ত থাকা অবস্থায় কায়েস বলে, এরকম খেলার জায়গা তো আর পাই না। সব জায়গা থেকা আমগোরে তাড়ায় দেয়। কিন্তু এহানে কেউ কিছু কয় না। আবার সবাই আইসা ছবি তুইলা নিয়া যায়, ভালাই লাগে। সকালে চকলেট বেচি আর দুপুরের পর থেইকা এহানে খেলি।
রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ফুল বিক্রি করে রিয়াজ। সে বলে, হারাদিনে ২০০ নাইলে ৩০০ টাকার ফুল বেচি। কিন্তু এহন একটু কম অয়। বিকালে বেচি না। সকালে আর সন্ধ্যার পর বেচি। বিকালে এহানে খেলি। এহানকার ভাইরা কিছু কয় না।
আবার একই মঞ্চে এসব পথশিশুদের পাশাপাশি অন্যান্য শিশুরাও আনন্দের স্বাদ নিতে ব্যস্ত। তারা একই সাথে মিলেমিশে যাচ্ছে খেলতে খেলতেই। মঞ্চটির পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিশুদের অভিভাবকদেরও কোনো বাধা নেই পথশিশুদের সাথে খেলাধুলায়।
মিরপুর থেকে আগত শিশু সোনিয়ার মা মমতা বলেন, আমার বাচ্চাটা ওদের সাথে মিলেমিশে একসাথে খেলছে। অনেক আনন্দ করছে। আমার কোনো বাধা নেই। কারণ, শিশুদের মধ্যে আবার বিভেদ কিসের? হয়তোবা ওরা কিছুটা নোংরা থাকে। তা এখন ছেড়েই দিয়েছি শুধু আনন্দের কথা মাথায় রেখে। এছাড়া বইমেলার মতো স্থানে এসে এরকম বিভেদের কথা চিন্তা করাটা আসলেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৮
এমএএম/এমজেএফ