ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

সাড়ে চার হাজারে মানসম্মত বই ৪৮৮, বিক্রি ৭০ কোটি টাকা

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮
সাড়ে চার হাজারে মানসম্মত বই ৪৮৮, বিক্রি ৭০ কোটি টাকা গ্রন্থমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে পুরস্কার প্রদান করা হয়-ছবি- ডি এইচ বাদল

অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে: নতুন বইয়ে গতবারের রেকর্ড ভেঙেছে এবারের গ্রন্থমেলা। রেকর্ড গড়েছে বিক্রিতেও। তবে হাজারো বইয়ের ভিড়ে এবার মানসম্মত নতুন বই এসেছে মাত্র ৪৮৮টি।

২০১৮ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় মোট ৭০ কোটি ৫০ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে বাংলা একাডেমির বিক্রির পরিমাণ এক কোটি ৫১ লাখ টাকা।

২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্টল মালিকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং মেলার শেষ দিন বুধবারের (২৮ ফেব্রুয়ারি) সম্ভাব্য বিক্রি যুক্ত করে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলা একাডেমি। এছাড়া এবারে মেলায় রেকর্ড সংখ্যক ৪৫৯১টি বই এসেছে। এরমধ্যে মানসম্মত বইয়ের সংখ্যা মাত্র ৪৮৮টি।

বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বাংলা একাডেমির গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত সমাপনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন গ্রন্থমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব জালাল আহমেদ। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান।

এসময় অধ্যাপক আসিনুজ্জামান মানসম্মত বই সম্পর্কে বলেন, শত বই না লিখে সৃষ্টির জন্য একটি বই-ই লিখুন। প্রয়োজনে সময় নিয়ে লিখুন।

২০১৭ সালের তুলনায় এবারের বই বিক্রি ৭ কোটি টাকা বেশি। গতবারের তুলনায় বই বেশি ৯৪৫টি।

এর আগে ২০১৭ সালে ৬৫ কোটি ৪০ লাখ, ২০১৬ সালে ৪২ কোটি ৫০ লাখ, ২০১৫ সালে ২১ কোটি ৯৫ লাখ এবং ২০১৪ সালে ১৬ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছিলো।

এবার নতুন বইয়ের মধ্যে কবিতার বইয়ের সংখ্যা বেশি। ২০১৮ সালের বইমেলায় কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে ১৪৭২টি। এরপর রয়েছে গল্প ও উপন্যাসের স্থান। এবার গল্পের বই ৭০১টি, উপন্যাসের বই ৬৪৩টি প্রকাশিত হয়েছে।

মননশীল বইয়ের মধ্যে প্রবন্ধ ২৫৭টি, গবেষণা ১২২টি, জীবনীগ্রন্থ ১০৭টি, রচনাবলী ১৫টি, নাটকের ২৩টি বই, ভ্রমণ ৯১, ইতিহাস ১১০টি বই প্রকাশিত হয়েছে। এবার মুক্তিযুদ্ধের বই প্রকাশিত হয়েছে ৯১টি।

এছাড়া নতুন বইয়ের মধ্যে বিজ্ঞান বিষয়ক ৭৬টি বই, ভ্রমণ ৯১টি, ইতিহাস ১১০টি, রাজনীতি ২২টি, চিকিৎসা/স্বাস্থ্য ৩৩টি, রম্য ধাঁ ধাঁ ২১টি, ধর্মীয় ২৬টি, অনুবাদ বিষয়ে ৪৮টি বই প্রকাশিত হয়েছে। শিশুতোষ বই এসেছে ১২৫টি, ছড়ার বই এসেছে ১১২টি।  

তরুণ পাঠকের আগ্রহের শীর্ষে থাকা সায়েন্স ফিকশন ও গোয়েন্দা বিষয়ক বই এসেছে ৬৫টি। এছাড়া অভিধান বিষয়ক বই এসেছে ৭টি, অন্যান্য বিষয়ে এসেছে ৪২৪টি বই।

অনুষ্ঠানের শেষ অংশে অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৮ উপলক্ষে বাংলা একাডেমি পরিচালিত চারটি গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এসময় অতিথিরা নির্দিষ্ট প্রকাশনীর প্রকাশকদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

২০১৭ সালে প্রকাশিত বিষয় ও গুণমানসম্মত সর্বাধিক সংখ্যক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য প্রথমা প্রকাশনকে 'চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার-২০১৮, গুণমান ও শৈল্পিক বিচারে ২০১৭ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে অলকানন্দা প্যাটেল রচিত ‘পৃথিবীর পথে হেঁটে’ গ্রন্থের জন্য বেঙ্গল পাবলিকেশন্স, সুফি মুস্তাফিজুর রহমান রচিত ‘বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক উত্তরাধিকার’ গ্রন্থের জন্য জার্নিম্যান বুক্স, এবং মঈন আহমেদ সম্পাদিত ‘মিনি বিশ্বকোষ পাখি’ গ্রন্থের জন্য সময় প্রকাশনকে মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০১৮ প্রদান করা হয়েছে।

শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্যে ২০১৭ সালে প্রকাশিত গুণমান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য চন্দ্রাবতী একাডেমিকে রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার-২০১৮ এবং ২০১৮ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে থেকে নান্দনিক অঙ্গসজ্জায় সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে কথা প্রকাশকে শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০১৮ প্রদান করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮
এইচএমএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।