বইটির অনুবাদক অনন্ত উজ্জল জানান, পোল্যান্ডের রূপকথা বই-এ অন্তভুক্ত রয়েছে ভাভেল পাহাড়ের ড্রাগন, ভানদা, ব্যাঙ রাজকুমারী, কিনগা, ভিস্টুলা নদীর মৎসকন্যা, জীবনের জল, ব্যাঙ রাজকুমার এবং বাঁশির অসমপ্ত সুর নামে মোট ৮টি অনুবাদ রূপকথা। এ বইয়ে যে গল্পগুলো অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সেগুলো সুদূর অতীতকালের।
তিনি বলেন, পোল্যান্ডের লোকগল্প সংগ্রহকদের সংগৃহীত গল্পগুলো মূলত পোল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের কৃষক সম্প্রদায়ের লোকচারিতাকে প্রতিনিধিত্ব করে। পোল্যান্ডের এ অঞ্চলটি ‘সাদা রাশিয়া’ নামে পরিচিত। পোল্যান্ডের লোকগল্প সংগ্রহকরা এ অঞ্চলের কৃষকদের সঙ্গে মিশে, তাদের বাড়িতে থেকে এবং ক্ষেত-খামারে ঘুরে ঘুরে গল্পগুলো সংগ্রহ করে, পরে লিখিতভাবে সেইসব কৃষকের ভাষায় বর্ণনা করেছেন।
মূল গল্পগুলো ছিল গীতধর্মী অথবা এমন এক গদ্য-পদ্যের সংমিশ্রণে রচিত যা শুধু প্রাচীন গীতিকাব্যের মধ্যেই পাওয়া যায়। অনুবাদের প্রয়োজনে গীতিকাব্যে রচিত গল্পগুলোর গদ্যরূপ দেওয়া হয়েছে এবং গল্পের ক্রমাগত পুনরাবৃত্তি কোনো কোনো ক্ষেত্রে ছোট করা হয়েছে। যদিও প্রতিটি গল্পেই রয়ে গেছে মূল গল্পের হাস্য-কৌতুক, রসবোধ এবং নীতিশিক্ষা। বিশেষ করে এ গল্প বলার ধরনের সঙ্গে জার্মানি, ভারতীয় এবং সেলেটিক জাতিসমূহের লোককাহিনী বলার ধরনের সঙ্গে গভীর মিল রয়েছে, যা সহজে সাধারণ মানুষের হৃদয়ের গভীরে পৌঁছে যায়।
অন্য গল্পগুলো রাজকুমারীদের, পিশাচ এবং জাদুকরের। রাজা রানীর কাহিনীতে তাদের অনেকেরই আছে রাজ্য, রাজত্ব, দূর্গ এবং প্রাসাদ। কাহিনী গুলোতে উল্লেখিত স্থানসমূহের অস্তিত্ব এখনো পোল্যান্ডে পাওয়া যায় এবং বিভিন্ন উপলক্ষে মানুষ এখনো এসব স্থানসমূহে বেড়াতে যায়। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় ক্রাকোভ শহরের পুরাতন মার্কেট ঘুরতে ঘুরতে এখনো শোনা যায় সেই বাঁশির সুর।
ভিয়েলেস্কা লবণ খনির গভীরে প্রবেশ করলে এখনো দেখা যায় খনিজ লবণ দিয়ে তৈরি রাজকুমারী কিনগার মূর্তি। অথবা ভাভেল পাহাড়ের পাদদেশে ভিস্টুলা নদীর তীরে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা মনের আনন্দে হেঁটে বেড়ানো যায়। এ ভাভেল পাহাড়ই পোলিশ সভ্যতার প্রাচীন নিদর্শন। রাজার বাড়ি এবং ভানদার স্মৃতিজড়িত শহর অথবা আগুন মুখো ড্রাগনের আবাসস্থল।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮
আরএম/আরআইএস/