আর বইমেলার শিশুচত্বরে সিসিমপুর মঞ্চে হৈ-হুল্লোড় শেষ করে বাবা যখন সিয়ামকে ডাকলেন বই কেনার জন্য, তখন সে বাবার হাত ধরেই অনেকটা আদুরে সুরে বাবার কাছে বায়না করলো- ও বাবা, একটা বই কিনে দাও না গো প্লিজ!
অনেকে তো আবার মেলায় এসে ‘মেলা-ই খুঁজে পায়নি’, তাই ভারাক্রান্ত মন নিয়ে শুধু বই কিনেই বাড়ি ফিরেছে। তবে শিশুপ্রহরের সিসিমপুর আর নতুন বইয়ের ঘ্রাণ মুগ্ধ করেছে তাদের সবাইকে।
শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে গ্রন্থমেলায় শিশু প্রহর থাকায় সকাল থেকেই বাবা মায়ের হাত ধরে মেলায় আসতে থাকে শিশু কিশোররা। আনন্দ, হৈ-হুল্লোড় আর বইয়ের সঙ্গে ভালোবাসায় পার করে নিজেদের সময়গুলো। সেজে এসেছিল নিজেদের পছন্দ করা সুন্দর পরিপাটি পোশাক আর হাত অথবা গলায় আল্পনা নিয়ে। অনেকের মাথায় তো আবার ছিল ফুলের মুকুট। ঠিক যেন রূপকথার রাজপুত্র, রাজকুমারী।
মোহাম্মদপুর থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে বইমেলা দেখতে এসেছিল ছোট্ট সোনামণি রায়ানা। কিন্তু তার মন খারাপ, কেননা সে মেলায় এসে মেলা খুঁজে পায়নি! তার সঙ্গে কথা বলতে গেলে সে বললো- বাবা বলেছিল এখানে মেলা আছে। কিন্তু আমিতো মেলা-ই খুঁজে পেলাম না! এখানে শুধু বই আর বই। ভূতের বই, রাক্ষসের বই, আরো কত...! তাই বই নিয়েই বাড়ি যাচ্ছি!
সেজেগুজে বইমেলার সিসিমপুরে এসেছে ৩ বছর বয়সের রূপকথা। তার বাবা জোয়ারদার তাবেদুল নবী জানান, টেলিভিশনে দেখা কার্টুন চরিত্রের সিসিমপুরে আসতে পেরে ভীষণ খুশি ছোট্ট রূপকথা। তাকে কিনে দেওয়া হয়েছে বর্ণমালার বই। এছাড়া দুই ছেলে তুর্য্য এবং দীপ্তকেও তাদের পছন্দের বই কিনে দেবেন বলে জানান তিনি।
এদিকে শিশু কর্নারের প্রকাশনা স্টলগুলোর সামনেও ছিল উপচেপড়া ভিড়। বাচ্চাদের জন্য বাবা-মায়েরা যেমন বই কিনে দিয়েছেন, তেমনি শিশুরা নিজেরা পছন্দ করেও দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে ‘পঙ্খিরাজ’ স্টলের বিক্রয়কর্মী সায়মা আঞ্জুমান নবনী জানান, সকাল থেকে বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে শিশু কর্নারের স্টলগুলোতে। অভিভাবকেরা যেমন পছন্দ করে বাচ্চাদের বই কিনে দিচ্ছেন, তেমনি শিশুরা নিজেদের পছন্দেও কিনছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৯
এইচএমএস/জেডএস