ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বইমেলা

সকাল গড়িয়ে সন্ধ্যায় জমে মেলা

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১০ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২১
সকাল গড়িয়ে সন্ধ্যায় জমে মেলা ছবি: শাকিল

বইমেলা থেকে: সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মেলা ঘুরে পাঠকের সন্তোষজনক উপস্থিতি চোখে পড়েছে সন্ধ্যায়। যদিও সকালের দৃশ্যের ভিন্ন রূপ মেলে বিকেল গড়াতে শুরু করলে।

সে ধারাবাহিকতায় মেলার তৃতীয় দিনে নানা বয়সী পাঠক সমাগমকে আশাব্যঞ্জক বলছেন প্রকাশক ও লেখকরা। মেলার প্রথম দু’দিনের তুলনায় শনিবার (২০ মার্চ) শিশু ও অপেক্ষাকৃত কম বয়সী বইপ্রেমীদের আনাগোনা ছিল বেশি।

এদিন বইমেলা ঘুরে দেখা যায়, সন্ধ্যায় লোকসমাগম হয় মেলায়। নতুন বইয়ের সঙ্গে নিজেকে পরিচিত করে তোলেন পাঠক। কিনে নেন পছন্দ হলে। আর এভাবেই কেটে যায় বেলা।

বইমেলাতে প্রতি শুক্রবার ও শনিবার শিশুপ্রহর থাকলেও এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে তা নেই। ফলে হালুম-টুকটুকি বা ইকরির দেখা পাচ্ছে না শিশুরা। বেশ খা খা করছে শিশুচত্বর। আর অভিভাবকরাও অতিরিক্ত সতর্কতার কারণে বইমেলায় বাচ্চাদের নিয়ে আসছেন দেখেশুনে।

এ বিষয়ে এক অভিভাবক তন্ময় হালদার জানান, করোনা মহামারি চলছে বছরের বেশি সময় ধরে। এছাড়া ঢাকা শহরে খেলার মাঠেরও রয়েছে অভাব। ওরা যাবে কোথায়? শিশুদেরও তো চিত্তবিনোদনের প্রয়োজন আছে। তারা যদি বইমেলায় ঘুরে বই কিনতে পারে তাহলে তাদের মানসিক অবস্থা ভালো থাকবে।

প্রকাশকরাও বলছেন সকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলে বাড়ছে পাঠকের সংখ্যা। বিকিকিনিও এ সময় একটু ভালো। এভাবে চলতে থাকলে মেলা জমতে বেশি সময় লাগবে না।

এদিকে বিকেলে অমর একুশে বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় 'স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র' শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এ আয়োজনেই বক্তরা এমন কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে আবুল মোমেন লিখিত প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলা একাডেমির সহ-পরিচালক সাহেদ মন্তাজ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আবুল কাশেম ও ফওজুল আজিম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক খুরশীদা বেগম।

প্রাবন্ধিক বলেন, ৪ঠা সেপ্টেম্বর ১৯৭২ গণপরিষদে খসড়া শাসনতন্ত্র অনুমোদন উপলক্ষে প্রদত্ত ভাষণে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের আলোকে দেশের চারটি মৌলিক আদর্শ সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। ১২ অক্টোবর ১৯৭২ স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনের অধিবেশনে তিনি এ সংবিধানকে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য নির্দেশনা হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

তিনি বলেন, এটির মূল ভাবধারাকে স্থায়ী হিসেবে বিবেচনা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। ৪ঠা নভেম্বর ১৯৭২ সংবিধান বিলের ওপর দীর্ঘ ভাষণেও তিনি এর মূল চার স্তম্ভের কথা আবেগ দিয়ে আবারও বলেছেন। এভাবে স্বাধীনতার স্বপ্ন এক ব্যক্তি থেকে জাতির অন্তরে সঞ্চারিত হয়েছে, স্বপ্ন একদিন আকাঙ্ক্ষায় রূপ নিয়েছিল, তারপর তা হয়েছে অঙ্গীকার এবং শেষে ধরা দিয়েছে বাস্তবে। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র থেকে তা রূপ পেয়েছে বাস্তব স্বাধীন দেশে।

আলোচকরা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা ও ঘোষণাপত্র নিয়ে অনেক অযথা বিতর্কের জন্ম দেওয়া হয়েছে। এ সম্পর্কিত ইতিহাসকে রাষ্ট্রীয় প্রভাব খাটিয়ে বিকৃত করার চেষ্টা করা হয়েছে।

তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু এদেশের অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে স্বাধীনতার রূপকল্প একাত্তরের বহু আগেই তৈরি করে রেখেছিলেন। ১৯৭১-এর ৭ মার্চ তার ঐতিহাসিক বক্তব্যের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার সূত্রগুলো এদেশের জনগণের কাছে উপস্থিত করে, তাদের আসন্ন মুক্তিযুদ্ধের জন্য তৈরি করে ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এ নিয়ে কোনো বিভ্রান্তির অবকাশ নেই। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ রাষ্ট্রের নির্মাণ-কল্পনা প্রকাশ করেন, যা যুগ যুগ ধরে স্বাধীনতা সংহত করার প্রেরণা দিয়ে যাবে।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক খুরশীদা বেগম বলেন, বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এক ও অভিন্ন। বাংলা ও বাঙালি নেতা হিসেবে বস্তুত তিনিই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার অধিকার সংরক্ষণ করতেন এবং তার ঘোষণাতেই স্বাধীনতার সংগ্রাম আনুষ্ঠানিক রূপ পায়।

এদিকে শনিবার বইমেলার লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন বিশিষ্ট লেখক আবদুস সেলিম, শাহেদ কায়েস ও আঁখি হক।

আগামী রোববার (২১ মার্চ) অমর একুশে বইমেলার চতুর্থ দিন। এদিন মেলা চলবে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
 
বিকেলে বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে 'স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র' শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন অধ্যাপক নিরঞ্জন অধিকারী। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন কল্যাণী ঘোষ, বুলবুল মহলানবীশ ও আশরাফুল আলম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন রামেন্দু মজুমদার।

** করোনার প্রভাবে বেশি বই প্রকাশের আভাস

বাংলাদেশ সময়: ২১০৭ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২১
এইচএমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।