ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

অসময়ের মেলায় সুসময়ের প্রত্যাশা

দীপন নন্দী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০২১
অসময়ের মেলায় সুসময়ের প্রত্যাশা বইমেলায় পছন্দের বই খুঁজে নিচ্ছেন এক পাঠক | ছবি: রাজীন চৌধুরী

ঢাকা: রীতি ভেঙেছিল গতবারই। পহেলা ফেব্রুয়ারির বদলে মেলার দ্বার খুলেছিল ২ ফেব্রুয়ারি।

এবার পুরো এক মাস সতের দিনের ব্যবধানে শুরু হয়েছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতির কারণে ফেব্রুয়ারির মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে মার্চ-এপ্রিল জুড়ে। অসময়ের এই মেলায় সুসময়ের প্রত্যাশায় বুক বেঁধেছেন প্রকাশকরা।

প্রতিদিনই মেলায় আসছে নতুন বই, পাঠকের আনাগোনাও কম নয়। এসব মিলে করোনার কারণে গত এক বছরের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়ার প্রত্যাশা করছেন তারা।

মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) বইমেলার ষষ্ঠ দিনে প্রকাশকদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

সময় প্রকাশনের প্যাভিলিয়নে বসে নতুন বইয়ের পাণ্ডুলিপি দেখছিলেন প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার এবং জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ।

এবারের মেলায় কি গত এক বছরের ক্ষতি পোষাতে পারবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, এক বছরের ক্ষতি আরেক বছরে পুষিয়ে নেওয়া কোনো ব্যবসাতেই সম্ভব নয়। ক্ষতি পোষানোর জন্য কয়েক বছর লাগবে। তবে বইমেলার ধারাবাহিকতা বজায় রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এ ধারাবাহিকতা থাকলে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে ব্যবসায় নতুন গতিও সঞ্চার হবে।

বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বরের বাড়ির আদলে নিজেদের প্যাভিলিয়ন সাজিয়েছে অন্যপ্রকাশ। হুমায়ূন আহমেদের বইয়ের জন্য খ্যাত হলেও, প্রকাশনা সংস্থাটিতে রয়েছে নানা ধরনের বই। এ প্যাভিলিয়নে পাঠকও ভিড় জমাচ্ছেন প্রতিদিন।

পাঠকদের আগমনকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, গেলো এক বছরের ক্ষতি পোষানো সম্ভব নয়। এবারের মেলাটাও স্বাভাবিক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। করোনা পরিস্থিতিও খারাপের দিকে যাচ্ছে। এর উপরে যোগ হয়েছে ভয়াবহ গরম। এসব কারণে ক্ষতি পোষানোটা কঠিন। তবে মেলার ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং পাঠকের আগমনকে সাধুবাদ জানাই।

এবারের মেলা অসময়ে আয়োজন হলেও প্রকাশকরা কিছুটা হলেও উপকৃত হবে বলে মন্তব্য করেন অন্বেষা প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী এবং জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির যুগ্ম নির্বাহী পরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন।

তিনি বলেন, এবারের মেলার আয়োজনটা ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য। এক মাসের এ মেলা দিয়ে এক বছরের ক্ষতি পোষানো সম্ভব নয়। তবে আয়োজনের কারণে কিছুটা হলেও প্রকাশকরা উপকৃত হবেন।

মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, বিকেলের পর থেকেই মেলায় পাঠক-দর্শনার্থীদের আগমন বাড়ে। সন্ধ্যার পর পাঠকের আনাগোনা আরও বেড়ে যায়। আর এ সময়গুলোতে মেলার বিক্রিবাট্টাও খারাপ না বলে জানান বিভিন্ন প্রকাশনীতে দায়িত্বরতরা।

ঐতিহ্যের ব্যবস্থাপক আমজাদ হোসেন কাজল বলেন, অন্যান্য বছরের অনুপাতে বিক্রি একই রকম। আগামী শুক্রবার থেকে বিক্রি বাড়তে পারে বলে আমরা মনে হয়।

কিছুটা ভিন্নমত অবসর প্রকাশনের ব্যবস্থাপক মাসুদ রানার। তিনি বলেন, লোক অনুপাতে বিক্রি ভালো। কিন্তু এ বিক্রি দিয়ে করোনাকালের ক্ষতির ধাক্কা সামলানো সম্ভব নয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আশানুরূপ বিক্রি হওয়াটা কঠিন।

মঙ্গলবার মেলার দ্বার খোলে বেলা তিনটায়। এর পর থেকেই মেলায় আসতে শুরু করেন পাঠকরা। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই প্রবেশ করতে হয় পাঠকদের। তবে মাস্ক পরে মেলার ভেতরে প্রবেশ করলেও প্রাঙ্গণে অনেককেই মাস্ক খুলে ঘুরতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে মেলার তথ্যকেন্দ্র থেকে বারবার সর্তকবার্তা দেওয়া হয় দর্শনার্থীদের।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০২১
ডিএন/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।