বইমেলা থেকে: অমর একুশে বইমেলার শেষ সময় ঘনিয়ে আসতে এখনো প্রায় অর্ধেক মাস বাকি। তবে হঠাৎ লকডাউনের ঘোষণায় মাঝপথেই বিদায়ের সুর বাজতে শুরু করেছে বইমেলায়।
শনিবার (৩ এপ্রিল) অমর একুশে বইমেলার ১৭তম দিন। এ সময়টায় মেলায় উচ্ছ্বাস থাকলেও বিদায়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন গ্রন্থমেলার লেখক, পাঠক ও প্রকাশকরা। মাসব্যাপী চলা বাঙালির প্রাণের এ মেলার উচ্ছ্বাসে করোনা পরিস্থিতির কারণে বাজতে শুরু করেছে ভাঙনের সুর!
যদিও লকডাউন নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত সঠিক কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না বইমেলা নিয়ে, তবুও দেশে লকডাউন হলে বইমেলা বন্ধ করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না বলেই জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ জানিয়েছেন, লকডাউন হলে তো সবই বন্ধ থাকবে, বইমেলাও বন্ধ থাকবে, তাই তো হওয়ার কথা। কালকের (রোববার) দিনটা দেখি, কালকের বইমেলা পর্যন্ত।
তিনি বলেন, এখনো কোনো প্রজ্ঞাপন আসেনি, কিন্তু কোভিডের কারণে তো সমাবেশ নিষিদ্ধ আছে, সেক্ষেত্রে ভাবতে হবে, লকডাউন দিলে তো বইমেলা চালানোর সুযোগই নেই। শুধু মিল-ফ্যাক্টরি খোলা থাকবে হয়তো, বাকি সবকিছু বন্ধ। যেগুলো খোলা থাকবে, সেগুলোও স্বল্প পরিসরে।
তবে বইমেলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আগামীকাল রোববার নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে লকডাউন দিলেও লকডাউনের পর বইমেলা চালু রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বিভিন্ন প্রকাশকরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ বলেন, বইমেলার চলবে কিনা সে বিষয়ে শনিবার পর্যন্ত কিছুই জানি না। এ বিষয়ে বারবার যোগাযোগ করার পরেও বাংলা একাডেমির সঙ্গে বৈঠকে বসা হয়নি। সব মিলিয়ে প্রকাশকরা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।
এ সময় তিনি সব প্রকাশকদের পক্ষে জানান, আমরা চাই লকডাউনের পরে বইমেলা সচল হোক। কারণ এক বছর পর বইমেলা করতে এসে প্রকাশকরা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
শনিবার বিকেলের পর থেকেই মেলার চিত্র দেখা গেছে বেশ জমজমাট। এদিন যারা বই মেলায় এসেছেন তাদের প্রত্যেককেই বই কিনে ফিরতে দেখা গেছে। বিশেষ করে লকডাউন এবং বইমেলা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় অনেকেই নির্দিষ্ট বইগুলো সংগ্রহের চেষ্টা করেছেন দ্রুত। ফলে অনেক প্রকাশনীর বিকিকিনি হয়েছে বিগত কয়েক দিনের তুলনায় একটু ভালো।
নতুন বই: শনিবার মেলায় নতুন বই এসেছে ১৪৪টি। এরমধ্যে বলাকা প্রকাশন এনেছে তৌহিদ আহমেদের ‘শেখ মুজিবের ছবি’, রাহানুমা প্রকাশনী এনেছে কাজী রোজীর ‘এরই নাম স্বাধীনতা’ এবং আসলাম সানীর ‘ছন্দ ছড়ায় জীবন গড়া’, ময়ূরপঙ্খী এনেছে মঞ্জু সরকারের ‘অপুর দাদু গাছ’, চারুলিপি এনেছে সনজীদা খাতুনের ‘বালক রনির কীর্তিকা', ক্রিয়েটিভ এনেছে মিলু শামসের ‘অতসীর স্কুল’, অনুপম এনেছে মিনার মনসুর সম্পাদিত ‘মুক্তিযুদ্ধের উপেক্ষিত বীর যোদ্ধারা’, জনপ্রিয় প্রকাশনী এনেছে শ্যামসুন্দর সিকদারের ‘নীল রঙের সাহস’, পেন্সিল এনেছে মনিজা রহমানের ‘হৃদয়বোধক চিহ্ন’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
আগামীকাল রোববার মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায়। চলবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০২১
এইচএমএস/এমআরএ