ঢাকা: আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া অমর একুশে বইমেলার জন্য স্টল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। সেসঙ্গে মেলায় বিভিন্ন মঞ্চ ও কেন্দ্র নির্মাণসহ বিভিন্ন চত্বর সাজানোর কাজও চলছে বেশ জোরেসোরে।
বুধবার (১২ জানুয়ারি) সরেজমিনে মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে এই দৃশ্য দেখা গেছে। এ সময় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি চত্বর ঘুরে বইমেলার মিডিয়া সেন্টার, সাংস্কৃতিক মঞ্চ, নজরুল মঞ্চ, লিটল ম্যাগ কর্নার, নামাজের জায়গা, শিশুচত্বর ও তথ্য কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ এগিয়ে নিতে দেখা যায়। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এসব কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ।
অমর একুশে বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. জালাল আহমেদ বলেন, বইমেলার জন্য স্টল নির্মাণ শুরু হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে মেলার জন্য বরাদ্দ করা স্টলের সঠিক সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যাবে। তিনি আরও বলেন, গত বছর কোভিডের কারণে বইমেলা তেমন না জমলেও আশা করা হচ্ছে এবারের বইমেলা জমজমাটভাবেই হবে। আমরা সেভাবেই প্রস্তুতি গ্রহণ করছি। আশা করছি, ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন প্রধানমন্ত্রী বইমেলা উদ্বোধন করবেন। আর করোনার সংক্রমণ বেশি হলে স্বাভাবিকভাবেই স্বাস্থ্যবিধি আরও কঠোরভাবে প্রতিপালন করা হবে। এছাড়া সংক্রমণ যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরের অবস্থায় চলে যায়, তখন সরকার বইমেলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ জানায়, স্টল বুকিংয়ের জন্য অনেক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান আবেদন পত্র জমা দিয়েছে। এগুলো যাচাই-বাছাই শেষ হলে বইমেলায় কতগুলো স্টল থাকছে তা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হবে। আশা করি ২০ থেকে ২২ তারিখের মধ্যে স্টলের লটারি হয়ে যাবে। তবে এর স্টল ও প্যাভিলিয়নের সংখ্যা প্রায় গতবারের মতোই হবে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, গতবারের মতোই এবারও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশাল এলাকাজুড়ে বসছে বইমেলা। টিএসসি এবং রমনা কালী মন্দিরের গেট ছাড়াও ইন্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটের পাশ দিয়েও আসা-যাওয়া করা যাবে বইমেলায়। গতবারের মতো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা জাদুঘরের আলোকস্তম্ভকে কেন্দ্র করে সাজানো হচ্ছে মেলার স্টলগুলো। বাঁশ পুঁতে এবং একটার সঙ্গে আরেকটা বেঁধে সেগুলোই এখন নির্মাণ করছেন শ্রমিকরা। আর স্টল নির্মাণ কাজ ছাড়াও বিভিন্ন মঞ্চ ও কেন্দ্র নির্মাণও শুরু হয়েছে।
প্রতিবছরের মাতো এবারের বইমেলাতেও লিটল ম্যাগাজিনের জন্য লিটল ম্যাগ কর্নার থাকবে। প্রকাশনা সংস্থা এবং ব্যক্তি উদ্যোগে যারা বই প্রকাশ করছেন তাদের বই বিক্রির জন্য থাকবে সহায়তার ব্যবস্থা। এছাড়া শিশু কর্নারে থাকবে শিশু বিষয়ক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে সুন্দর বিন্যাসে। বইমেলায় প্রচার কার্যক্রমের জন্য থাকবে তথ্যকেন্দ্র। তাৎক্ষণিকভাবে মেলা সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহের জন্য ব্যবস্থা থাকবে মিডিয়া সেন্টারে। চেতনাকে মননশীল করতে প্রতি সন্ধ্যায়ই থাকবে প্রবন্ধপাঠ-আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি চিত্তরঞ্জন সাহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বর্ধমান হাউজ প্রাঙ্গণে বটতলায় এক টুকরো চটের ওপর ৩২টি বই সাজিয়ে বইমেলার গোড়াপত্তন করেন। এরপর নানা রূপ-রূপান্তরের মাধ্যমে অমর একুশে বইমেলা আজ বাঙালির সবচেয়ে স্বনামধন্য বইমেলায় পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২১
এইচএমএস/এএটি