ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বইমেলা

একুশের বইমেলা

জঙ্গি জিয়া বাইরে, হামলার ঝুঁকি উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২২
জঙ্গি জিয়া বাইরে, হামলার ঝুঁকি উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ

ঢাকা: মার্কিন নাগরিক অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা জঙ্গি মেজর জিয়া এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় বইমেলায় একেবারে ঝুঁকি নেই বলা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।

রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, অভিজিৎ রায়ের হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হয়েছে, এতে জঙ্গিরা ক্ষিপ্ত হওয়া স্বাভাবিক। তাদের মূলহোতা মেজর জিয়া এখনও বাইরে রয়েছেন, তাই ঝুঁকি একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছি না। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে বইমেলায় সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, মেজর জিয়াকে গ্রেফতারে বিদেশ থেকেও পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে, আমরাও তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।

২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় লেখক ও ব্লগার মার্কিন নাগরিক অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করে জঙ্গিরা। এ ঘটনায় জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সংশ্লিষ্টতা পায় আইন-শৃঙ্খল বাহিনী। তবে সংগঠনটির প্রধান সেনাবাহিনী থেকে বহিস্কৃত মেজর জিয়া এখনও পলাতক রয়েছেন। এ অবস্থায় গত ডিসেম্বরে মেজর জিয়ার সন্ধান পেতে যুক্তরাষ্ট্র ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে।

মেলায় নজরদারি সাপেক্ষেও বিভিন্ন সময় বিতর্কিত বই পাওয়া যায়, এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, মেলায় প্রতিবছর কিছু আপত্তিকর বই বের হয়। বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে প্রতিদিন বের হওয়া এতো বই মনিটরিং করা কষ্টসাধ্য।

তাই এবার বাংলা একাডেমির লিটল ম্যাগ চত্ত্বরে সিটি এসবি সদস্য নিয়োজিত থাকবে। তারা বইয়ের বিষয়ে নজরদারি করবেন। মেলা বন্ধের পরে গভীর রাতে যদি এমন কোন বই মেলায় ঢুকানো হয় তাহলে এর দায়-দায়িত্ব ওই স্টলের মালিক ও প্রকাশককে নিতে হবে।

বইমেলার সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, মেলা কেন্দ্রীক নিরাপত্তার পাশাপাশি শহীদ মিনার কেন্দ্রীক ও শাহবাগ-নীলক্ষেত কেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।

বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশে তল্লাশি দল থাকবে, সন্দেহজন কিছু দেখলে তারা তল্লাশি করবেন। মূল মেলা প্রাঙ্গনে প্রবেশের আগে প্রতিটি প্রবেশপথে আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর থাকবে। এছাড়া, কাউকে সন্দেহ হলে তাকে পৃথক কক্ষে নিয়ে তল্লাশি করা হবে।

মেলা প্রাঙ্গনসহ আশপাশ এলাকার প্রতিটি ইঞ্চি জায়গা সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গনে সাদা পোষাকে পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি পর্যাপ্ত সংখ্যক পোষাকধারী সদস্য মোতায়েন থাকবে।

মেলার আশে-পাশে মোটরসাইকেল ও গাড়ি টহল থাকবে। এছাড়া, সিটিটিসি, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, ক্রাইম সিন ভ্যান ও ডগ স্কোয়াড প্রস্তুত থাকবে। যে কোন জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলা সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, মেলায় মেডিক্যাল টিম ও ফায়ার সার্ভিস মোতায়েন থাকবে। ডিএমপি কন্ট্রোল রুমের ভেতরে ব্রেস্ট ফিডিং কক্ষ থাকবে। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নিয়মিত মেলা প্রাঙ্গনে আসবেন ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন।

মেলায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দর্শনার্থীদের সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, মাস্ক পরিধান করতে হবে। প্রবেশপথে তামপাত্রা মাপার ব্যবস্থা থাকবে, মাস্ক ছাড়া কেউ ঢুকতে পারবে না। স্টলের কর্মীরা টিকা দিয়েছেন মর্মে কার্ড রাখতে হবে, অন্যথায় তাদেরকে মেলায় থাকতে দেওয়া হবে না।

যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি থাকলেও কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে না- এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, প্রাণের মেলা নির্বিঘ্নে শেষ করতে সবার সহযোগিতা কামনা করছি। আশা করছি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যাবস্থা নিশ্চিত করতে পারব।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রক্টর গোলাম রাব্বানী বলেন, নিম্ন মানের এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত বই প্রকাশ হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কিছু বই আছে রাতের অন্ধকারে মেলায় ঢোকে। আমি প্রস্তাব করেছি একটা গেট দিয়ে বইগুলো ঢুকবে, সেখানে আমাদের সার্ভিলেন্স টিম থাকবে। তাহলে এটা ঠেকানো সম্ভব।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৭ ঘণ্টা, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
পিএম/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।