ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

কাটতি বেশি উপন্যাসের, প্রকাশে এগিয়ে কবিতা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২২
কাটতি বেশি উপন্যাসের, প্রকাশে এগিয়ে কবিতা বইমেলার একটি স্টলে পছন্দের বই খুঁজে নিচ্ছেন পাঠকরা | ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: নানা শঙ্কা নিয়ে শুরু হওয়া অমর একুশে বইমেলায় এখন সন্ধ্যা হলে আর পা রাখার জায়গা থাকে না। সপ্তাহ পেরুতেই বদলে গেছে মেলার আবহ।

করোনার ভয় কাটিয়ে সময় গড়ানোর সঙ্গে লেখক, পাঠক ও প্রকাশকদের পদচারণায় জমজমাট এখন বইমেলা প্রাঙ্গণ। মেলায় আগত বইপ্রেমীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বেচা-বিক্রি। তার সঙ্গে আসছে নতুন বইও।

বইমেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে জানা গেছে, বিক্রির তালিকার শীর্ষে রয়েছে উপন্যাস। নতুন লেখকের নতুন লেখার পাশে আবেদন অটুট রেখেছে পুরনো উপন্যাসও। এর পরই বিক্রির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে গল্পের বই। রাজনীতি ও অনুবাদের বইয়ের বিক্রিও ভালো। পাশাপাশি শিশুদের বইও বিক্রিতে ভালো একটা জায়গা করে নিয়েছে।

তবে বিক্রিতে কথাসাহিত্য এগিয়ে থাকলেও প্রকাশে এগিয়ে রয়েছে কাব্যগ্রন্থ। বাংলা একাডেমির তথ্যমতে এবারের বইমেলার প্রথম ৮ দিনে কবিতার বই এসেছে মোট ২২৯টি। অপরদিকে একই সময়ে নতুন উপন্যাস এসেছে ১২০টি।

বিক্রয় প্রতিনিধি ও প্রকাশকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের মেলায় নতুন লেখকদের উপন্যাসের যেমন বিক্রি আছে, তেমনি শরৎচন্দ্র ও রবীন্দ্রনাথের উপন্যাসের আবেদনও আছে জাজ্বল্যমান।

অন্বেষা প্রকাশনীর বিক্রিত বইয়ের মধ্যে উপন্যাসের সংখ্যা বেশি। হুমায়ূন আহমেদের ‘রূপা’ থেকে শুরু করে নতুন লেখক জুয়েল আহসান কামরুলের উপন্যাস ‘কী মনো কন্যা’ যেমন আছে, তেমনি কাটতি আছে মোস্তাক শরীফের ‘আলমপনাহ’ উপন্যাসটির। এছাড়া পাঠক প্রিয়তা পেয়েছে সুজন দেবনাথের ‘হেমলোকের  নিমন্ত্রণ’।

উপন্যাসের পরেই বিক্রির তালিকায় অবস্থান করে নিয়েছে আত্মউন্নয়নমূলক বই ও গল্পের বই। অন্বেষা প্রকাশনীর এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ বিক্রিত বই ‘ব্রেইন গেইম’। আত্মউন্নয়নমূলক বা মোটিভেশনাল বইটি দিনে কম করে হলেও শত কপি বিক্রি হয় বলে জানিয়েছেন অন্বেষার বিক্রয় প্রতিনিধি আকাশ। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ক্রেতাদের তালিকায় গল্প ও উপন্যাসের প্রাধান্য বেশি দেখেছি। তবে পুরনো অনুবাদের বইগুলোও বেশ বিক্রি হচ্ছে আমাদের এখানে।



শোভা প্রকাশনীর স্টলে বেশি বিক্রি হচ্ছে শরৎচন্দ্র ও রবীন্দ্রনাথের উপন্যাস। শরৎচন্দ্রের দেবদাস, দেনা-পাওনা, গৃহদাহ, শ্রীকান্ত (অখণ্ড) ছাড়াও রবীন্দ্রনাথের চোখের বালি, শেষের কবিতা উপন্যাসের কদর এখনও রয়ে গেছে।

এর পরে দেশি ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি নিয়ে লেখা নতুন ও পুরাতন বইয়ের বিক্রি সবচেয়ে বেশি।

মেলায় আগত আবেদা খানম বলেন, বাংলা ভাষাকে সহজ, সুন্দর ও সাবলীলভাবে জানা বোঝার জন্য রবীন্দ্রনাথ পড়ার কোনো বিকল্প নেই। আমাদের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

শিশু-কিশোরদের বইয়ের মধ্যে থ্রিলার, নীতিকথামূলক, রূপকথা ও আঁকার বই বিক্রি হচ্ছে বেশি। মাওলা ব্রাদার্স, কথা প্রকাশ ও জাগৃতি প্রকাশনীর স্টলগুলোতে কথা বলে জানা যায়, ক্রাচের কর্নেল, যদ্যপি আমার গুরু বইগুলোর কাটতি বেশি। শিশুরা বেশি কিনছে নীতিকথা, ভূতের গল্প ও ছবি আঁকার বইগুলো।

ঘাসফুল প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি সাথী আক্তার বলেন, মেলার শুরু থেকেই আমাদের বিক্রি সন্তোষজনক। শিশুরা রঙ্গিন আঁকার ছবি, ভূত ও ঈশপের গল্পের মতো নীতিকথামূলক বইগুলো বেশি কিনছে।

রাজনীতি, অনুবাদের বইও বিক্রি হচ্ছে উল্লেখযোগ্য হারে। রাজনীতি নিয়ে বিশ্লেষণমূলক বইয়ের মধ্যে বেশি বিক্রি হচ্ছে তারেক শামসুর রেহমানের সর্বশেষ লেখা বই ‘করোনা পরবর্তী বিশ্বরাজনীতি’।

সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা প্রকাশের বিপণন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুন্নবী বলেন, এবারের বিক্রি ভালো। নতুন-পুরনো উপন্যাস বিক্রি হচ্ছে সব থেকে বেশি। এছাড়া গল্প ও ইসলামি ধাচের বইগুলোর বিক্রি বাড়ছে ধীরে ধীরে। তবে পাঠকরা নতুন বইয়ের তুলনায় পুরনো বই বেশি চাচ্ছে। তবে আমাদের এখানে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির বইও তুলনামূলক বেশি বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২২
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।