ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাজেট

বাজেট নির্দেশনা আয় বৃদ্ধি, বাড়বে করের বোঝা!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০০ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০১৪
বাজেট নির্দেশনা আয় বৃদ্ধি, বাড়বে করের বোঝা!

ঢাকা: বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটায় জাতীয় সংসদে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের ৪৩ তম বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

এটি তার অষ্টমবারের মতো বাজেট উত্থাপন।

এর আগে তিনি ১৯৮২-৮৩ সালে প্রথমবারের মতো অর্থবছরের বাজেট উত্থাপন করেন। সেবার বাজেটের আকার ছিল ৪,৭৩,৮২,৭০০ কোটি টাকা। এরপর তিনি ১৯৮৩-৮৪ বছরের বাজেট উত্থাপন করেন। এ অর্থবছরে তিনি উত্থাপন করেন ৫,৮৯,৬৩, ৪৮৩ কোটি টাকা।

এই দুটি বাজেট উত্থাপনের সময় আবুল মাল আবুল মুহিত সাবেক স্বৈরশাসক এরশাদের জাতীয় পার্টির অর্থমন্ত্রী ছিলেন।

আর বৃহস্পতিবার তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের (মহাজোট) আমলে ষষ্ঠতম বাজেট উত্থাপন করবেন। সংবাদমাধ্যম অনুসারে, এ বছর বাজেটের আকার হচ্ছে, ২ লাখ ৫০ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা।

তবে সংবাদমাধ্যমের বিশ্লেষণ অনুসারে, এবার বাজেটের দিক-নির্দেশনা থাকছে হয়েছে আয়ের দিকে। সে কারণে বাজেটে এবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর ও এর আওতা বাড়ানো হচ্ছে।   অর্থমন্ত্রীর ভাবনা অনুসারে, এ সবের একমাত্র লক্ষ্য দেশের প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৩ শতাংশে উন্নীত করা।

এ জন্য সরকারের আয় বাড়াতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আগামী অর্থবছরের জন্য ১ লাখ ৪৯ হাজার ৭২০ কোটি টাকা আদায় করতে হবে। এর মধ্যে আয়কর তথা প্রত্যক্ষ কর হিসেবে ৫৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং আমদানি শুল্ক বাবদ ৩৫ হাজার ৭২০ কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ ছাড়া মূল্য সংযোজন কর বাবদ (মূসক) ৫৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

অন্যদিকে, বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করতে নানা ছাড় দেওয়া হবে। সে কারণে অর্থমন্ত্রী বেসরকারি খাতের বিশেষ ছাড়ের প্রস্তাবনা উত্থাপন করবেন বলে জানা গেছে।

এ ছাড়া বাজেটে বেসরকারি খাতের স্থবিরতা থেকে উত্তরণের জন্য কর্পোরেট কর হার কমানো, ১৮টি খাতে কর অবকাশ সুবিধার মেয়াদ বাড়ানোসহ ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে কর অব্যাহতি এবং তৈরি পোশাকশিল্পের ক্যাশ ইনসেনটিভ উৎসে-কর হার কমানোর প্রস্তাব থাকছে।

সেই সঙ্গে নতুন শিল্পের জন্য বিশেষ কর-সুবিধা, পোলট্রি খাতে করহার কমানো, স্থানীয় কিছু ঋণপত্রে উৎসে-কর কমানো ও লোকসানি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের কর অর্ধেকে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করবেন অর্থমন্ত্রী। এর একটিই কারণ বাজেটকে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগবান্ধব করা।

যে ১৮টি খাতে কর অবকাশের সুযোগ থাকছে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, বস্ত্র, টেক্সটাইল, তৈরি পোশাক, পর্যটন, তথ্যপ্রযুক্তি, পোলট্রি, হিমায়িত খাদ্য রফতানি, সফটওয়্যার শিল্প ও অবকাঠামো নির্মাণ খাত। এ কর অবকাশ এ বছরের ৩০ জুন শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা সময় বাড়িয়ে করা হচ্ছে ২০১৯ সাল পর্যন্ত।

বাড়ছে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর:
এদিকে, বাজেটকে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগবান্ধব করতে সাধারণ মানুষের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করের বোঝা বাড়বে বলে জানা গেছে।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা গেছে, আয় বাড়াতে বাজেটে উচ্চবিত্তের আয়ের ওপর ৩০ শতাংশ কর, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া সব ক্ষেত্রেই ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট আরোপ, পরিবেশদূষণকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর ১ শতাংশ সারচার্জ, জমি বিক্রিতে কর হার বাড়ানো হবে।

এছাড়া উচ্চ মূল্যস্ফীতি সত্ত্বেও করমুক্ত আয়সীমা না বাড়ানো, সরকারি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের ওপর ২৫ শতাংশ করারোপ, সোনার ভরিতে কয়েক গুণ শুল্ক আরোপ, সেলফোন আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করার প্রস্তাব থাকবে। এ বাদেও বাড়িওয়ালাদের ওপরও নজর রাখা হয়েছে।

আর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর বৃদ্ধির কারণে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত সব শ্রেণীর মানুষের ওপরই করের চাপ বাড়বে, সে ইঙ্গিতই দিচ্ছে বৃহস্পতিবারের প্রস্তাবিত বাজেট।

এ বাজেট ২৯ জুন পাস হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৬ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।