ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাজেট

৮০০ টাকা শুল্ক নিলে সঞ্চয় কমবে: সালেহ উদ্দিন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৫ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০১৭
৮০০ টাকা শুল্ক নিলে সঞ্চয় কমবে: সালেহ উদ্দিন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ

ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আবগারি শুল্ক বাড়ানোয় আমানতকারীদের সঞ্চয় করার প্রবণতা কমবে। কারণ ব্যাংকে টাকা জমা রাখে সাধারণ মানুষ। যেভাবে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, তাতে টাকা মানুষের হাতে থাকলে খরচ হয়ে যাবে।

একলাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক আমানতকারির আবগারি শুল্ক ৮শ’ টাকা নির্ধারণ করে ১ জুন ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেছে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

বাজেটোত্তর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সালেহ উদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন।


 
তিনি বলেন, এক লাখ টাকার উপর নগদ টাকা নিম্ন মধ্যবিত্তদের থাকে। তারা হুট করেই বাড়ি গাড়ি কিনেনা। সরকার বিনিয়োগ ৩২ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার কথা বলছে, সঞ্চয় না বাড়লে বিনিয়োগ বাড়বে কেমন করে। এখন বিনিয়োগ ২৭-২৮ শতাংশ। সম্পদ বাড়াতে হলে সঞ্চয় বাড়াতে হবে। ব্যবসায়ীরা আজ জমা দিলে কাল তুলে নেন। আমি জানি না কোন বিবেচনায় আবগারি শুল্ক বাড়াচ্ছে সরকার।  
 
সাবেক এই গভর্নর বলেন, আবগারি শুল্ক বাড়ানোয় গ্রামের মানুষ সমিতিতে সঞ্চয় করার প্রতি আগ্রহ দেখাবে। সমিতিগুলো টাকা নেয়, বিরাট রেট দেয়। কিছুদিন পর টাকা মেরে চলে যায়। যেমন যুবক, ইউনিপেটুর সমস্যা এখনো সমাধান হয়নি। মানুষকে জোর করে ওই দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা। আরেকটা বিষয় মানুষ ব্যাংকে টাকা না রেখে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করবে এ ধারণা থেকেও বাড়ানো হতে পারে।  
 
তিনি বলেন, ব্যাংকে টাকা জমার উপর আবগারি শুল্ক দ্বিগুন করা একেবারে অযৌক্তিক ব্যাপার। সাধারণ ভাবে লেভি বা ট্যাক্স হয় আয়ের উপরে। ব্যাংকে টাকা রাখলে এ শুল্ক আগে যা ছিল তার দ্বিগুন করেছে এটা মোটেও যুক্তিসঙ্গত না। এক্সাইজ ডিউটিটা শুরু হয়েছিল কোনো কিছু থেকে বিরত রাখার জন্য। যেমন মদ, সিগারেট খাওয়া।  

সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ডিপোজিটের উপর এক্সাইজ আরোপে প্রমাণ করে এটা একটি অবিবেচনা মূলক। এমনিতেই সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমে গেছে। দরকার হলো আর্থিক অন্তর্ভূক্তি উন্নয়ন, আমরা সবাই এটা চাই। সেজন্য ব্যাংকিং সেক্টরে লেনদেন সুরক্ষিত করতে হবে।  
 
সাবেক এই গভর্নর বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে সরকারকে ভুল উপদেশ দিয়ে সহজে জনগণের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কৌশল। আয় বেড়েছে, লেনদেন বেড়েছে মানুষের কাছ থেকে টাকা নিতে হবে। এটা তো কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ না। এতে সঞ্চয়, বিনিয়োগের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আল্টিমেটলি আমার কাছে ভালো মনে হচ্ছে না।  
 
সরকারি ব্যাংকের মূলধন যোগান দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, মূলধন ঘাটতি যোগান দেওয়া একেবারেই অযৌক্তিক। ব্যাংকগুলোতে দুর্নীতি অদক্ষতার কারণে টাকার ক্ষতি হয়েছে। এরমাধ্যমে প্রমাণ হয়, যারা দুর্নীতি করছে, অদক্ষ লোক তাদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। ২০০৭ সালে ব্যাংকগুলো বাণিজ্যিক করার উদ্দেশ্যই ছিল তারা জনগণকে সেবা দিবে এবং সরকারকে টাকা দিবে। উল্টো তাদের টাকা দেয়া মানে দুর্নীতি করার উৎসাহ দেওয়া। জনগণের টাকার অপচয়। কারণ জনগণের উপর ভ্যাটের চাপ বাড়াচ্ছেন। সেই টাকা নিয়ে আবার ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি পূরণ করছেন।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০১৭
এসই/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।