ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাজেট

বাড়ছে ভাতা ও ভাতাভোগীর সংখ্যা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৩ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০১৮
বাড়ছে ভাতা ও ভাতাভোগীর সংখ্যা বাজেট বক্তব্য দিচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ছবি: পিআইডি

ঢাকা: বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, অস্বচ্ছল যুদ্ধাহত ও অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের স্ত্রী, পুত্র ও কন্যা অথবা নাতি-নাতনিদের সহায়তা দেবার জন্য আগামী বাজেটে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বয়স্ক ও বিধবা ভঅতা বাড়ানো ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সম্মানী ভাতা এবং উৎসব ভাতার পাশাপাশি বার্ষিক ২ হাজার টাকা হারে বাংলা নববর্ষ ভাতা চালু করা হবে। 

বৃহস্পতিবার (৭ জুন) জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন তিনি। এ সময় অর্থমন্ত্রী আগামী অর্থবছরের জন্য সামাজিক সুরক্ষা খাতের আওতা বাড়ানোর প্রস্তাবসমূহ তুলে ধরেন।

অর্থমন্ত্রী জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিজয় দিবস উপলক্ষে জনপ্রতি পাঁচ হাজার টাকা করে বিশেষ সম্মানী ভাতা চালুকরণ, অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা ৮ লাখ ২৫ হাজার হতে ১০ লাখে বৃদ্ধি, প্রতিবন্ধী ছাত্র/ছাত্রীদের উপবৃত্তির হার বাড়িয়ে প্রাথমিক স্তরে ৫০০ টাকা হতে ৭০০ টাকা, মাধ্যমিক স্তরে ৬০০ টাকা হতে ৭৫০ টাকা এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ৭০০ টাকা হতে ৮৫০ টাকায় বৃদ্ধি এবং ভাতাভোগীর সংখ্যা ৮০ হাজার হতে ৯০ হাজার জনে বৃদ্ধি প্রস্তাব দেন।  

তিনি বলেন, হিজড়া, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উপবৃত্তির হার প্রাথমিক স্তরে ৩০০ টাকা হতে ৭০০ টাকা, মাধ্যমিক স্তরে ৪৫০ টাকা হতে ৮০০ টাকা, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ৬০০ টাকা হতে ১ হাজার টাকা এবং উচ্চতর স্তরে ১ হাজার টাকা হতে ১ হাজার ২০০ টাকা বৃদ্ধি ধরা হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উপকারভোগীর সংখ্যা ৩৬ হাজার থেকে ৬৪ হাজারে উন্নীত করা হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষ ভাতা ভোগীর সংখ্যা ২৩ হাজার হতে ৪০ হাজারে এবং শিক্ষা উপবৃত্তির সংখ্যা ১১ হাজার হতে ১৯ হাজারে উন্নীত করা হয়েছে।

‘ক্যানসার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড ও জন্মগত হৃদরোগীদের আর্থিক সহায়তা কর্মসূচির উপকারভোগীর সংখ্যা ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজারে বৃদ্ধি, চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচির উপকারভোগীর সংখ্যা ৩০ হাজার হতে ৪০ হাজারে বৃদ্ধি, দরিদ্র মার জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা মাসিক ৫০০ টাকা হতে ৮০০ টাকায় বৃদ্ধি এবং ভাতার মেয়াদ ২ বছরের স্থলে ৩ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে নতুন অর্থ বছরের জন্য। ’

আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ভাতার হার ও ভাতাভোগীর সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমকে লক্ষ্যভিত্তিক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করার জন্য আমরা তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সংস্কার কার্যক্রম তথা জি-টু-পি (গভর্নমেন্ট টু পারসন) পদ্ধতির প্রবর্তন করেছি। এর আওতায় প্রত্যেক উপকারভোগী সরকারি কোষাগার থেকে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের মাধ্যমে নিজ নিজ পছন্দের ব্যাংক হিসাব বা মোবাইল হিসাবে মাসের নির্দিষ্ট তারিখে ভাতা পাবেন।  

‘পাশাপাশি জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সঙ্গে সংযোগ রেখে প্রত্যেক সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির জন্য ডিজিটাল তথ্য-ভাণ্ডার প্রস্তুত করা হচ্ছে, যা উপকারভোগী নির্বাচনে দ্বৈততা পরিহারে সহায়তা করবে। ’

তিনি জানান, বাজেট প্রস্তাবনায় নতুন ভাতার আবেদন, অভিযোগ ব্যবস্থাপনা, অর্থবরাদ্দ, অর্থছাড় ইত্যাদি বিষয়ও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। ফলে সরকারি সম্পদ ও সেবায় সাধারণ জনগণের সহজ অভিগম্যতা ও অধিকার নিশ্চিত হবে। পাইলটভিত্তিতে মাতৃত্বকাল ভাতা কর্মসূচির সাতটি উপজেলায় জি-টু-পির মাধ্যমে ভাতা বিতরণ পদ্ধতির সূচনা করা হয়েছে।  

‘বয়স্কভাতা বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা এবং প্রতিবন্ধী ভাতা ১১টি জেলায় জি-টু-পি পদ্ধতিতে বিতরণের প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি, আগামী অর্থবছরে সারাদেশে এটি সম্প্রসারণ করতে পারবো। এক্ষেত্রে নিরাপত্তা ঝুঁকি এড়াতে আমরা যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করবো,’ বলেন অর্থমন্ত্রী।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৭ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০১৮
এইচএমএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।