ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাজেট

‘বাজেটে রাজস্ব আয়ে উচ্চাভিলাষী আকাঙ্ক্ষা সময়োপযোগী নয়’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৬ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২০
‘বাজেটে রাজস্ব আয়ে উচ্চাভিলাষী আকাঙ্ক্ষা সময়োপযোগী নয়’

ঢাকা: বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে উচ্চ জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রবৃদ্ধি ও রাজস্ব আয়ে সরকারের উচ্চাভিলাষী আকাঙ্ক্ষা সময়োপযোগী নয় বলে মনে করছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর।

শুক্রবার (১২ জুন) প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বাংলানিউজকে তিনি এ সব কথা বলেন।

পিআরআইর নির্বাহী পরিচালক বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে কতোগুলো প্রয়াস দেখা গেছে।

আবার কিছু কিছু জায়গায় অবাস্তব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। যা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। অবাস্তব লক্ষ্যমাত্রাগুলো হলো জিডিপির প্রবৃদ্ধি ও রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ক্ষেত্রে বিরাট গ্যাপ রয়ে গেছে। এ গ্যাপ সহজে মিটবে না। বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা কিন্তু ঠিক না। সারাবিশ্বেই এখন নেতিবাক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। একভাবে কোথাও ইতিবাচক প্রভাব দেখতে পারছি না। সেই হিসাবে প্রবৃদ্ধি ও রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অযৌক্তিক।

রাজস্ব আয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হবে না। লক্ষ্যমাত্রা বেশি হওয়ার কারণে কর্মকর্তারা একদিকে চাপে থাকবেন, অন্যদিকে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করতে না পারার একটা গ্লানি ভেতরে ভেতরে কাজ করবে। এক্ষেত্রে সরকারের তেমন কিছু করার নেই। তবে সরকার সিগারেটের দাম বা ট্যাক্স বাড়িয়েছে সেখানে কোনো আপত্তি নেই। সেখানে সরকার কিছু রাজস্ব পাবে। একমাত্র বড় সোর্স হচ্ছ এটা। এখানে চারটা ধাপ আছে সরকার সবচেয় নিচের ধাপটা বৃদ্ধি করায় ৩৭ টাকা থেকে ৩৯ টাকা হয়েছে। ফলে যে এক প্যাকেট সিগারেটের দাম ছিল ৪০ টাকা সে হিসাব চার টাকায় এক শলাকা পাওয়া যেত। এখন এক শলাকা ৫ টাকা হবে। কিন্তু সরকার পাচ্ছে দুই টাকা দাম বাড়ছে ১০ টাকা। এটা যৌক্তিক হলো না, এখানে সরকার দাম দুই টাকা না বাড়িয়ে ৫ থেকে ৭ টাকা বাড়াতে পারতো। তাহলে সরকার এক হাজার থেকে ১২০০ কোটি টাকা রাজস্ব বেড়ে যেতো।

এদিকে, বৃহস্পতিবার (১১ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা বাজেট প্রস্তাব করেছে সরকার। যা জিডিপির ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেটে পরিচালনসহ অন্যান্য ব্যয়বাবদ খরচ ধরা হচ্ছে ৩ লাখ ৬২ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা। রাজস্ব আয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে ৩ লাখ ৮২ হাজার ১৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হচ্ছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর বহির্ভুত কর থেকে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া কর ব্যতীত রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে মোট ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। যা জিডিপির ৬ শতাংশ। এ হার গত বাজেটে ছিল ৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৫ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২০
জিসিজি/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।