ঢাকা: আগামী অর্থবছরের (২০২১-২২) প্রস্তাবিত বাজেটকে স্বাগত জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই)।
ঘোষিত বাজেটকে অর্থনৈতিক পুনঃরুদ্ধারে অন্তর্ভুক্তিমূলক বাজেট হিসেবে অভিহিত করে এর বাস্তবায়ন, ঘাটতি মোটানো এবং রাজস্ব আদায় ও সম্প্রসারণে আরও বেশি নজর দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
বৃহস্পতিবার (৩ জুন) জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপনের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এ মতামত ব্যাক্ত করেন ডিসিসিআইর নেতারা।
বিশ্ব অর্থনীতি যখন কোভিড-১৯ এ বিপর্যস্ত, এই কঠিন সময়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে ঘোষিত জাতীয় বাজেট ২০২১-২২ এ প্রবৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে ৭ দশমিক ২ ও ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। এই সময়ে এরূপ অগ্রগতিমূলক ও অর্জনযোগ্য প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা আমাদের মধ্যে আশার সঞ্চার করছে। কোভিডের মধ্যে দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ২ শতাংশ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। যেখানে সারা বিশ্বে জিডিপির প্রবৃদ্ধি নেগেটিভ। তাই এ ধরনের উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে অর্থনীতির সবক্ষেত্রে উত্তরণ ঘটাতে হবে যা অনেকাংশে চ্যালেঞ্জিং। তবে বাজেটে কোভিড নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত বরাদ্দ, প্রণোদনা ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া, বিনিয়োগ বাড়ানো, কৃষি পুনর্বাসন, সামাজিক নিরাপত্তাবলয় বৃদ্ধিকরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ডিসিসিআইর নেতারা।
বিশেষত আয়কর ও ভ্যাট হার হ্রাস, গ্রস রিসিট, গবেষণা এবং আমদানি কাঁচামালের ওপর অগ্রিম কর হ্রাস করা, স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় বৃদ্ধি ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করায় ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তাছাড়া কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো সময়োপযোগী। তবে, প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঘোষিত সরকারি সহায়তা সহজতর উপায়ে ব্যবসায়ীদের দেওয়া গেলে চলমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঘোষিত বাজেট সহায়ক হবে বলে ডিসিসিআই মনে করে।
এছাড়া অর্থনৈতিক ক্ষতি যথাযথভাবে নিরুপণ করে প্রণোদনা প্যাকেজের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করছে। বর্তমান বাজেটে রাজস্ব ঘাটতি ও অর্থায়ন একটি চ্যালেঞ্জ। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী জিডিপির এই উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে করোনা সংক্রমণরোধ করা এবং সবার জন্য করোনা টিকা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। যদিও এটি একটি ব্যয়বহুল বাজেট, এর মাধ্যমে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, ব্যবসায়ীদের আর্থিক প্রণোদনা, সামাজিক নিরাপত্তা ব্যয় বৃদ্ধি ও জনগণকে করোনা পরবর্তী পরিস্থিতি থেকে রক্ষায় বরাদ্দে উদ্যোগ থাকার কারণে জীবন-জীবিকার ভারসাম্য রক্ষায় এটি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক বাজেট হয়েছে বলে ডিসিসিআই বিশ্বাস করে। তবে, এত বড় বাজেট বাস্তবায়ন অনেকটা চ্যালেঞ্জিং হবে, তাই রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ জানাচ্ছে ডিসিসিআই।
বাজেটে নতুন শিল্পে যেমন: হোম অ্যাপলায়েন্স, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, অটোমোবাইল, তথ্য-প্রযুক্তি কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। ওয়ান পার্সন কোম্পানির ক্ষেত্রে কর্পোরেট কর হার ২৫ শতাংশ র্নিধারন করা হয়েছে। আমরা এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।
তবে পর্যায়ক্রমে এই কর হার আরও কমানোর জোর দাবি জানাচ্ছি তাতে করে ক্ষুদ্র ও ছোট বিনিয়োগকারীরা উৎসাহিত হবে।
বাজেটে দেশীয় শিল্পের বিকাশে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশে হোম অ্যাপ্লায়েন্স সামগ্রী, তথ্যপ্রযুক্তি, সিমেন্ট, স্টিল, ইলেকট্রনিক ও আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, যা একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।
করোনার মধ্যে বিশ্বব্যাপী রপ্তানি চাহিদা হ্রাস পেয়েছে, তাই রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্প, চামড়া, পাট ও পাটজাতদ্রব্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাতপণ্য এবং ওষুধ পণ্যসমূহের কাঁচামাল আমদানিতে অগ্রিম আয়কর অব্যাহতি যৌক্তিককরণের পাশাপাশি আমদানি করা ফল ও সবজিতে ৫ শতাংশ হারে কর বাড়ানো হয়েছে তা হ্রাস।
বাংলাদেশ সময়: ০১২১ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০২১
এসই/এএটি