ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাজেট

প্রতিবন্ধী-তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীকে চাকরি দিলে কর ছাড়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪১ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২২
প্রতিবন্ধী-তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীকে চাকরি দিলে কর ছাড়

ঢাকা: প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর লোকজনকে চাকরি দিলে বিশেষ কর ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে।

২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে শুধুমাত্র তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীকে চাকরি দিলে বিশেষ কর ছাড় দেওয়া হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকেলে জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ প্রস্তাব করেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্বে অধিবেশনে উপস্থিত রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অর্থমন্ত্রী বলেন, যদি কোনো প্রতিষ্ঠান মোট কর্মচারীর ১০ শতাংশ বা ১০০ জনের বেশি তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের নিয়োগ দেয়, তবে উক্ত কর্মচারীদের পরিশোধিত বেতনের ৭৫ শতাংশ বা প্রদেয় করের ৫ শতাংশ, যেটি কম, তা নিয়োগকারীকে কর রেয়াত হিসেবে অনুমোদনের বিধান চালু রয়েছে।

বর্তমান বিধান সংশোধন-পূর্বক উভয় ক্ষেত্রে যদি কোনো প্রতিষ্ঠান তার মোট কর্মচারীর ১০ শতাংশ বা ২৫ জনের অধিক প্রতিবন্ধী বা তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের নিয়োগ দেয় তবে উক্ত কর্মচারীদের পরিশোধিত বেতনের ৭৫ শতাংশ বা প্রদেয় করের ৫ শতাংশ, যেটি কম, তা নিয়োগকারীকে কর রেয়াত হিসেবে অনুমোদনের প্রয়োজনীয় বিধান সংযোজনের প্রস্তাব করছি।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার দেশের প্রান্তিক ও সুবিধা-বঞ্চিত মানুষকে সমাজ ও অর্থনীতির মূলধারায় অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রান্তিক ও সুবিধা-বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অন্যতম একটি অংশ হচ্ছে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। এ জনগোষ্ঠী অন্যদের চেয়ে আর্থ-সামাজিকভাবে পিছিয়ে আছে এবং তারা সমাজের মূলধারার বাইরে রয়েছে।

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, কর্মক্ষম ও পিছিয়ে পড়া এ জনগোষ্ঠীকে উৎপাদনমূখী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে পারলে সামাজিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের কর্মসংস্থান, জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক আত্তীকরণের লক্ষ্যে বর্তমানে চালুকৃত বিশেষ কর প্রণোদনাকে আরও প্রসারিত করার প্রস্তাব করা হলো।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে এটি স্বাধীন বাংলাদেশের ৫১তম বাজেট। বর্তমান সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের চতুর্থ বাজেট। এটি আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ১৪তম বাজেট। এবং অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের চতুর্থ বাজেট।

বাজেটটি প্রস্তুত হয়েছে ‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ শিরোনামে।

প্রস্তাবিত বাজেটে প্রাধিকার পাবে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। এবারের বাজেটে সঙ্গত কারণেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কৃষি খাত, স্বাস্থ্য, মানবসম্পদ, কর্মসংস্থান ও শিক্ষা খাতসহ বেশ কিছু খাতকে। বাজেটের আকার চূড়ান্ত করা হয়েছে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে যা ছিল ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে নতুন বাজেটের আকার বাড়ছে ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা। কিন্তু ব্যয়ের বিপরীতে অর্থের সংস্থান কম।

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরে ছিল ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। বাজেটের ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ০৬৪ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছর ছিল ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা।

মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। যা গত অর্থবছর ছিল ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০২২
পিএম/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।