ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ক্যারিয়ার

বিসিএস পরীক্ষায় নার্ভাসনেস নয়, চাই পজিটিভ মাইন্ডসেট

ক্যারিয়ার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৭
বিসিএস পরীক্ষায় নার্ভাসনেস নয়, চাই পজিটিভ মাইন্ডসেট মঞ্জিলুর রহমান

মঞ্জিলুর রহমান। ৩৫তম বিসিএসে নিয়োগ পেয়েছেন প্রশাসন ক্যাডারে। অর্জন করেছেন মেধাতালিকায় দ্বিতীয় স্থান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগে অধ্যয়ন শেষে বর্তমানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছেন ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ডে। ৩৫ তম বিসিএসের চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশের পর তাঁর সাফল্যের গল্প শুনিয়েছেন বাংলানিউজ ক্যারিয়ার বিভাগকে। সাক্ষাতকার নিয়েছেন রায়হান আহমদ আশরাফী

বাংলানিউজ : বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন কবে থেকে?
মঞ্জিলুর রহমান: ক্যারিয়ার বিষয়ে আমার ভাবনাটা একটু ভিন্ন ধরনের। আমি কখনোই কোন পেশা নিয়ে স্বপ্ন দেখিনি।

ডাক্তার হব, নাকি ইঞ্জিনিয়ার হব বা প্রশাসক হব এমন কোন চিন্তা কখনই আমার ছিলোনা। বরং ক্যারিয়ার বিষয়ে আমার চিন্তার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে কিভাবে অবদান রাখা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশনি করানোর সময় ভাবতাম কিভাবে আমার ছাত্রকে তাঁর সামর্থ্যের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যায়। ফ্রিল্যান্সিং করার সময় কিভাবে সবচেয়ে ভাল সেবা দিয়ে সবচেয়ে বেশি অর্থ উপার্জন করা যায় তাই ভাবতাম। তেমনি জীবনের এই পর্যায়ে আমার ভাবনা হল কিভাবে দেশের মানুষের জীবনে অবদান রাখা যায়। আর বিসিএস প্রশাসন সেক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে এমন একটি জায়গা যেখান থেকে মানুষের জন্য কাজ করা যাবে।

বাংলানিউজ : কিভাবে স্বপ্ন পূরণের প্রস্তুতি নিয়েছেন?
মঞ্জিলুর রহমান: প্রস্তুতির কথা যদি বলেন তাহলে আমি বলব প্রস্তুতিটা জীবনব্যাপী। মানে হল, পরীক্ষার আগে সিলেবাস ধরে ধরে সেভাবে কোন প্রস্তুতি নেই নি। কিন্তু স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে এপর্যন্ত যা কিছু শিখেছি তার সবকিছুই বিসিএস পরীক্ষা দিতে কাজে লেগেছে।

বিগত বছরের প্রশ্ন থেকে জেনেছি এই পরীক্ষার সিলেবাস মূলত আমরা স্কুল-কলেজ লেভেলে যা পড়ি সেখান থেকেই। তাই বাংলা, ইংরেজী, গণিত, বিজ্ঞান ও সাধারণ জ্ঞানের বিষয়গুলো এর আগের অর্জিত জ্ঞান থেকে উত্তর করা সম্ভব হয়েছে। তাছাড়া নিয়মিত টিউশনি করাতাম বলে স্কুল-কলেজের যা পড়েছি তা ভুলে যাইনি। একটা বিষয় হল, মানুষ পড়ার চেয়ে পড়ানোর সময় বেশি শেখে। একারণে টিউশনির অভিজ্ঞতাটা এক্ষেত্রে কাজে লেগেছে।

তবে আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী জানার জন্য বই পরে বৈদেশিক সম্পর্ক ও কূটনীতির খুঁটিনাটি আয়ত্ত্ব করেছি। এছাড়া আমি সবসময় সাম্প্রতিক খবরের দিকে নজর রাখি। তাই সাম্প্রতিক বিষয়াবলী নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতেও কোন সমস্যা হয়নি। নিয়মিত ব্লগে লিখি বলে লেখার অনুশীলন হয় সব সময়। বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় ভাল করার পিছনে এর একটা অবদান আছে।

বাংলানিউজ : প্রস্তুতির পথে নানা বাঁধা বিপত্তি ছিল কি?
মঞ্জিলুর রহমান: আমি নির্দিষ্ট কোন ছকে বাঁধা নিয়মে প্রস্তুতি নেইনি। বাঁধা-বিপত্তি ছিল কিনা জানিনা তবে চ্যালেঞ্জ ছিল। এই যেমন- ক্লাসের পড়াশুনার পাশাপাশি গবেষণা প্রকল্পে কাজ করা, পাশাপাশি টিউশনি, উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি ও বিসিএস পরীক্ষা দেওয়া এগুলোর মধ্যে ভারসাম্য রাখাটা বেশ কঠিন ছিল। সময় ব্যবস্থাপনা একটু এদিক ওদিক হলেই তাঁর প্রভাব পরীক্ষা বা অন্য ক্ষেত্রে দেখা যেত। তাই আমি নিজের সময় ভাগ করে নিতাম যে, কোনটার জন্য কতটুকু সময় দিব। একারণে মাস্টার্সে পড়ার পাশাপাশি প্রিলিমিনারী পরীক্ষা দেয়া সম্ভব হয়েছে, বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতির পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। আবার বিদেশ থেকে দেশে এসে ভাইভা পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

ফর্ম দেওয়া থেকে বিসিএসের গেজেট হতে সময় লেগেছে প্রায় দুই বছর। এই দুইবছরে আমি বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি দুইটি মাস্টার্স ডিগ্রি করেছি। এটা সম্ভব হয়েছে সবকিছুর ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য।

এক কথায় জীবন তো আসলে একটা সংগ্রামের জায়গা, বাঁধা-বিপত্তি যেখানে নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার সেখানে চ্যালেঞ্জের কথা চিন্তা না করে আমি আমার চেষ্টা করে গেছি। আর তাঁর ফলাফল পেয়েছি হাতে নাতে। বিসিএসের মতো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় কিন্তু নিজের জ্ঞানের থেকে নিজের মাইন্ডসেটটাই আসল হয়ে দাঁড়ায়। নার্ভাসনেসের কারণে অনেকে জানা প্রশ্নও ভুল লিখে আসে আর পজিটিভ মাইন্ডসেটের কারণে অনেকে একটু জানা প্রশ্নের উত্তরও দারুণভাবে লিখে আসে।

সাক্ষাতকারের বাকি অংশ পড়ুন >>

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।