‘আয় চলে আয় রে ধূমকেতু,
আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু,
দুর্দিনের এই দূর্গশিরে
উড়িয়ে দে তোর বিজয় কেতন।
অলক্ষণের তিলক রেখা
রাতের ভালে হোক না লেখা,
জাগিয়ে দেরে চমক মেরে,
আছে যারা অর্ধচেতন।
-শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
‘বিদ্রোহী’ কবি যখন নিজ সম্পাদনার মাধ্যমে বাংলা ভাষার সবচেয়ে বিখ্যাত সাময়িকীর যাত্রা ঘটাবেন, তার মঙ্গলকামনায় যেসব স্তুতি কীর্তিত হয়, ‘বিশ্বকবি’র লেখনীই তার ভেতর প্রধান। সম্ভাষণটা যত বেশি পত্রিকার জন্য, তার থেকেও অনেক বেশি এর সম্পাদকের প্রতি। বাংলা সাহিত্যে এই বিশেষ ধূমকেতু উপাধিতে নজরুলকে অভিহিত করা একটা ট্রেডমার্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ যে তার পিছনে নেই, সেটিও বলা চলে না। আর নজরুলের নিজেরই ওতে প্রধান ভূমিকা। ‘অগ্নিবীণা’তে ‘ধূমকেতূ’ কবিতা লেখা, একি নামে পত্রিকা প্রকাশ হতে সেই যে শুরু করেছিলেন, আর থামলেন না। আত্মচরিত বলার বেলাও ঐ কথা বারবার। পরকালের লেখকেরা আর মাফ করবেন কোন দুঃখে? মদ বস্তাপঁচা হলেও লেবেলে ‘চিরন্তন’ ও ফলাফলে নিরাপদ। অথচ তার বেলায় উপমাটা কতটা সঠিক?
ধূমকেতুর আকস্মিক আগমনের মত নজরুলের খ্যাতির অভাবনীয়তা, বিস্তৃতি, দ্রুততা থাকলেও সেটি ক্ষণস্থায়ী নয় এবং তিনি আমাদের সাহিত্যে এক অমর প্রতিভা। কেবল রবীন্দ্রনাথ তার সাথে তুলনীয়। সভ্যতার ন্যূনতম ভিত্তি পেলেই এরা ঝলসে ওঠেন। তারার মতই নিজ ভুবন বানিয়ে প্রাণ সঞ্চারণ রয়েছে ক্ষমতায়। সমকালের প্রভাব এদের উপর পড়ে, তা সত্যি, কিন্তু অবস্থানের বদল তাতে ঘটে না, তারতম্য চলে। সেটি হয় চরিত্রবলের উপর ভিত্তি করে। ধূমকেতু বললে বলা উচিত মধুসূদনকে। তিনি প্রথম শ্রেণীর কবি। প্রতিভার সাথে কালযোগে এরা পূর্ণতা পায়। ধূমকেতুর মতই অপরের যোগে আরেক জ্বলে ওঠে। মধূসূদন বাংলা ভাষার লেখক হলেও সেটি সর্বভারতের জন্য লেখা। সেখানে তার অবস্থান বিশেষ ধাপে। প্রতিভার বিচিত্রতা, সাধনার প্রাবল্য ও চরিত্রবলের অভাব সব মিলিয়ে চমক দেবার মত আগমন। তার আলোচনায় একথা মনে রাখা প্রয়োজন।
এখন মধুসূদনের সাহিত্যে জীবনের প্রধান অবদান মেঘনাদবধ কাব্য। যেহেতু তা মহাকাব্য, সে কারণে সমকালীন ভারতীয় সমাজের কোন স্পষ্ট চিত্র তাতে অবশ্যই আছে। সকল মহাকাব্যই তাই। ব্যাকরণ মেনে লেখা বলে মেঘনাদবধ মহাকাব্য নয়, ও হলে বিশ্বসাহিত্যে মহাকাব্য আরো কয়েকশো থাকত।
মধুসূদনের কাব্যে আমরা তার ব্যক্তি ও সমাজ জীবনের চিত্র পাই। তবে এর মধ্যে ব্যক্তির সমাজ ব্যাঙ্গের যে চেষ্টা, সেটা সবাই জানে, কিন্তু সমাজ থেকে পাল্টা জবরদস্ত আঘাতও এসেছে তার মৃত্যুর পরে, আর সে আঘাত রবীন্দ্রনাথের। মধূসুদনকে নিয়ে তার সমালোচনা নিরর্থক নয়, ঐতিহাসিক বিচারে গুরুত্বের অধিকারী।
রবীন্দ্রনাথের ভক্ত তো বাদই দিলাম, নিরপেক্ষ গবেষকরাও হয়তোবা এ কথা মানতে চাইবে না যেহেতু তিনিই পরজীবনে বলেছেন-
‘ইতিপূর্বে আমি অল্প বয়সের স্পর্ধার বেগে মেঘনাদবধের একটি তীব্র সমালোচনা লিখিয়াছিলাম। কাঁচা আমের রসটা অম্লরস-কাঁচা সমালোচনাও গালিগালাজ। অন্য ক্ষমতা যখন কম থাকে তখন খোঁচা দিবার ক্ষমতাটা খুব তীক্ষ্ণ হইয়া উঠে। আমিও এই অমর কাব্যের উপর নখরাঘাত করিয়া নিজেকে অমর করিয়া তুলিবার সর্বাপেক্ষা সুলভ উপায় অন্বেষণ করিতেছিলাম। ’
প্রশ্ন হল- তার ভক্ত কিংবা মধুসূদনের সমর্থক, কেউ কি এ কথা নিজেরাও বিশ্বাস করেন?
ছোটবেলাতেই যিনি ব্যাস-বাল্মীকিকে ছাড়াবেন ভাবতেন, তার দ্বারা এমন ধৃষ্টতা কি স্বাভাবিক অথবা বলা উচিত মূর্খতা। পরবর্তী যুগে যে বিপদে পড়বেন তা একেবারেই ভাবেন নি? ‘রবি’ কবির এমন আচরণ প্রশ্নবিদ্ধ থেকেই যায়। ঠাকুরবাড়ির সন্তানের সাহিত্যচর্চার সময় ও প্রকাশের সুযোগ দুটোই তুলনামূলক বেশি। আমাদের লেখার সময় বের করতে কষ্ট হয়, প্রকাশে ঝামেলা। এমন ডেসপারেশন তাই অধমদের বেলা চলে, তার অত নামার প্রয়োজন কি? বাস্তবতা অন্য কিছু হবে সেটিই স্বাভাবিক। তাতে বালখিল্যতা থাকতে পারে, কিন্তু নীচ রকমের খ্যাতিলিপ্সা; মানা দুষ্কর। সত্য যদি অন্য কিছু হয়, সেটি বোঝার জন্য মধুসূদনের কালকে বোঝা প্রয়োজন।
তার জন্মলগ্নে ব্রিটিশরা ভারতকে উপনিবেশ বানিয়েছিল এবং ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিপ্লব দমন করে সেটির পূর্ণতা ঘটায়। এরা বাণিজ্য ও লুণ্ঠনেরই জন্য এসেছিল, তাদের মহৎ কোন উদ্দেশ্য ছিল না। বিধবা বিবাহ আইন, সতীদাহ প্রথা বন্ধ করা; কোন কিছু তারা আমাদের কথা ভেবে করে নি। বহুদিন এখানে থাকার সময় না চাইতেও আমাদের সাথে পাশ্চাত্যের সংস্কৃতির প্রয়োজনীয় উপাদানের সংযোগ ঘটাতে বাধ্য হয়। বাংলাসহ পুরো ভারতেই এর প্রভাব পড়ে। এতে ইশ্বরচন্দ্র, রামমোহন, বঙ্কিমদের যেমন আগমন হয়, তদ্রুপ ইয়ং বেঙ্গলদের যাত্রা ঘটে। প্রতিটি নিজ গুণে সমৃদ্ধ আর শেষেরটির শ্রেষ্ঠ সন্তান মাইকেল মধুসূদন দত্ত। এই সামাজিক বিবর্তন, নতুন শ্রেণীর উত্থান; অনুকরণের ফসল। ভারতে একই রকমের ঘটনা কি আগে ঘটেছিল? উত্তর হল- হ্যাঁ। আলেকজান্ডারের ভারত অভিযানের সময় ভারতের সংস্কৃতিতে যে গ্রিক প্রেরণা প্রবেশ করে সেই লগ্নে, যা ছিল হেলেনাইজেশনের অংশ। এর কোন বহিঃপ্রকাশ সাহিত্যে দেখা গিয়েছে? জবাব ইতিবাচক। তা হল কালীর উপাখ্যান।
এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং অক্ষরে অক্ষরে না হলেও ঘটনার মূল প্রায় প্রত্যেকেই জানেন। রাক্ষস বধে নিযুক্ত হয়ে কালী সবাইকে হত্যার পর এদের প্রধানের দিকে ছুটে যায়। নিরূপায় সেই শিবভক্ত ভগবানের আশ্রয় চাইলে তাকে রক্ষার খাতিরে সে কালীর পথে শুয়ে পড়ে। ক্রোধ ও তেজে উন্মত্ত কালী শিবের বুকে পা তুলে দেয়। কিন্তু যখন দেখতে পায় তা আর কেউ নয়, তার স্বামী স্বয়ং ভগবান, লজ্জায় বেরোয় জিভ। প্রধানকে রেহাই দিয়ে ফেরত যায় আপন স্থানে। কালীর মূল উৎস গ্রিকদের বিদ্যার দেবী হেলেনা। আলেকজান্ডার ভারত সম্পূর্ণ জিততে পারেনি এবং তার অনুসারীরা যেটুক ছিল তাও হারায়। কিন্তু গ্রিকদের সংস্কৃতি এখানে ব্যাপক প্রভাব রাখে। এর প্রমাণ তাদের ধাচে গড়া বিভিন্ন ভাস্কর্য, স্থাপত্যে। সাহিত্যেও যে তা ঘটেনি বলা যায় না। রামায়ণ-মহাভারতের কবি অতি বড় বলে মানবীয় সাহিত্যে রূপান্তরিত করতে পারেন যে কোন ধাচের কাজকেই। কিন্তু যে প্রবল দৈবিকতার আতিশয্যে শিল্পের যথাযাথ্য নষ্ট হচ্ছিল তা এর পরযুগে হ্রাস পায়। কালিদাসের রচনাগুলো তার প্রমাণ হতে পারে। দেবদেবীর উপাখ্যান তাতে কম এবং থাকলেও সেখানে দেবতা উপলক্ষ্য মাত্র। কোনকিছু নিশ্চিতভাবে বলা না গেলেও এটা ঠিক যে সে সময় ভারতে গ্রিক সংস্কৃতির ভক্ত একদল অনুকারকের আর্বিভাব ঘটে যারা কোন জোয়ার এনেছিল। তাদের উপমাই কালী।
এখন সেজন্য কালী শব্দের অর্থ ‘এন্ড অফ টাইম’ যার সেরা বাংলা হয় যুগ সংক্রান্তি। তা ছাড়া অনুকরণের থেকে জন্ম নেয়া বলে কালীর অপর নাম ‘শক্তি’। এটি বাহনবিহীন এবং তা তাৎপর্যময়। সাধারণত দেবদেবীর বাহনগুলো রূপক ও গুরুত্ববাহী। বিদ্যার দেবী সরস্বতীর বাহন সে জন্যই মকর বা হাঁস। এর কারণ হাঁস যেমন জন্মের পরেই পানিতে ভাসতে পারে, বিদ্যাও শত বিপদে স্থির, মানে সত্য নিত্য। তাছাড়া হাঁস দুধ জলের মিশ্রণে মুখ চুবিয়ে দুধ আলাদা করে নিতে পারে। বিদ্যাকে ধারণকারী অসংখ্য ধোঁয়াশা থেকে সত্যকে আলাদার ক্ষমতা রাখে। কালীর বাহন নেই যেহেতু সে শক্তি মাত্র। অনুকরণ থেকে তার যাত্রা, যা কোন মতাদর্শ ছাড়া পরিচালিত বলে উশৃঙ্খল। সমাজের সংস্কারকালে তাই সে ছিল উন্মত্ত। প্রথমে অনাচার দমন করলেও এক পর্যায়ে আবেগে অস্থির হয়ে পুরো সমাজকেই শেষে অস্বীকার করে বসে। এটি নতুন কোন চিত্র নয়। সাধারণত যে কোন অনুকরণের বেলা এ ঘটনা ঘটে। কালীর প্রধান রাক্ষসবধের চেষ্টা মানে সেই সমাজ লোপের চিত্রের প্রতিফলন। আর তারপরেই আসে শিব।
শিবের মূল উপাখ্যান অনেকেই জানেন। দক্ষযজ্ঞে সমস্ত দেবতা আমন্ত্রিত হলেও চণ্ডালদের প্রধান রুদ্রদেব ছিল অনুপস্থিত কারণ তাকে নিমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সেই কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে যজ্ঞে বিনাশ ঘটায়। পরিশেষে সন্ধি দ্বারা ভাগ প্রাপ্তির কারণে শান্ত হওয়া আর শিবমূর্তি ধারণ।
এর মানে ভারতে কোনকালে কোনস্থলে জনমানুষের আন্দোলন দ্বারা সমাজবাদ যাত্রা শুরু করেছিল। সমাজের শোষক উচু শ্রেণীর সাথে সংগ্রাম শেষে শোষিতেরা নিজেদের জন্য ভাগ বরাদ্দ করে। তাদের সে সংগ্রামী চেতনা রুদ্রে স্থাপিত। যে ছিল আগে চণ্ডাল, সেই হয় নতুন বিপ্লবের অগ্রদূত। শান্ত হয়ে নবরূপ গ্রহণের মানে আন্দোলন পরে শাশ্বত চেতনার দ্বারা কল্যাণরূপ নিয়ে স্থির হওয়া। পুনরায় ধ্যান মানে আরো মহত্বের জন্য সাধনা যা নতুন বিপ্লবের মাধ্যমে আরো মঙ্গল ঘটাবে। কিন্তু তখন পর্যন্ত এর যা অবদান, সেটি শাশ্বত মানবতার অংশ। তাই তার অপর নাম ‘Eternal Time’ বা চিরসত্য। কালীর উপাখ্যানে শিবের আগমন এ কারণেই।
সমাজ যখন নিজের সবকিছুই মিথ্যা শুনতে থাকে, তখন সে তার সত্যগুলো দাঁড় করাতে থাকে। রাক্ষসের শিব গমন এ কারণেই। অনুকরণ থেকে জন্মানো সে শক্তি তাকেও মাড়িয়ে দেয়, যা অনুকারকদের বেলা অহরহ ঘটে। কিন্তু তাতে তো তার অস্তিত্ব মিথ্যা হয়ে যায়। যে ভারত বহু ভাষাভাষী অসংখ্য সত্তাকে এক রাখতে পেরেছে, তার পুরোটাকে অসত্য বলা; সেতো পুরো অনাচার। এটি নিজেদের কাছে ধরা পড়ার সাথে সাথে অনুকারকেরা নিজেরাই লজ্জিত হয়, যার উপমা হল কালীর জিভ বেরিয়ে যাওয়া। তৎকালীন ভারতের জন্য এই উপাখ্যান সত্য। সেই সময় ভারত স্বাধীন, তৎকালীন পৃথিবীর বিরাট শক্তি। গ্রিক প্রেরণা একটি উৎকৃষ্ট সভ্যতা থেকে আরেকটি সমকালীন মহৎ সভ্যতায় গিয়েছে। দুটিই প্রাচীন যুগের। কিন্তু ভারতে বৃটেন আসার পরে যে চিত্র পাই, ও পুরোপুরি আলাদা। যেই জ্ঞান তারা এনেছে তা হল আধুনিক সময়ের। আমরা ছিলেম মধ্যযুগের। আগে স্বাধীন, এখন উপনিবেশ। দুটি এক হতে পারে না, হয়ও নি। যারা এবারকার মুগ্ধ অনুকারক, তারা কি ছিল, সেটির প্রমান মিলে মধুসূদনদের মাঝে। কিন্তু তা দেখাবার আগে কিছু বিষয় বোঝা প্রয়োজন।
রবীন্দ্রনাথ রামায়ণের থেকে আলাদা করে মেঘনাদবধের চিত্রায়নের জন্য মধুসূদনের নিন্দা করেছেন। দেখা যাক, তা যৌক্তিক কিনা?
অনেকে শিল্পের স্বাধীনতার কথা বলতে পারে, কিন্তু বর্তমানে বহু সিনেমায় যখন ইতিহাস বিকৃতি হয়, তখন তারাই ক্ষুব্ধ হন। এর মীমাংসা প্রয়োজন। মহাকাব্যের সাথে সমাজলগ্নতাও সে সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। রবীন্দ্রনাথ যৌবনে মহাকাব্যের সাথে সমকালীন সমাজের সম্পর্ক বলতে কি বোঝাতেন তা তার বক্তব্যে বোঝা যায়-
‘আমরা দেখিতেছি হোমরের সময়ে শারীরিক বলকেই বীরত্ব বলিত, শারীরিক বলের নামই ছিল মহত্ত্ব। বাহুবলদৃপ্ত একিলিসই ইলিয়াডের নায়ক ও যুদ্ধবর্ণনাই তাহার আদ্যোপান্ত। ’
‘অতএব দেখা যাইতেছে কবিরা স্ব স্ব সময়ের উচ্চতম আদর্শের কল্পনায় উত্তেজিত হইয়াই মহাকাব্য রচনা করিয়াছেন ও সেই উপলক্ষে ঘটনাক্রমে যুদ্ধের বর্ণনা অবতারিত হইয়াছে- যুদ্ধের বর্ণনা করিবার জন্যই মহাকাব্য লেখেন নাই। ’
এই বক্তব্যের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য খুব স্বাভাবিকভাবেই। যদি সমকালীন সমাজের প্রচলিত আদর্শের অনুসরণ লেখকের কাজ হয়, তবে পাঁড় হিঁদু চরিত্রের গুণগাণ ছিল রবীন্দ্রনাথের কর্তব্য। কিন্তু তা হলে রবীন্দ্রনাথ অদৌ কোথায় থাকতেন? বঙ্কিম যে পিছিয়ে পড়েছেন, এটিই সে জন্য দায়ী। সমকালীন শ্রেষ্ঠ বললে বলতে হয় বঙ্কিম, কিন্তু তা হলে সাম্প্রদায়িকতা আসে। ওতে বিশ্বকবি উপাধি মিলত না। বাস্তবে যে কোন প্রগতিই সমাজের প্রচলিত কিছুর বিনাশ করে হয়, ও কারণে এমন বক্তব্য পুরোপুরি হাস্যকর। সাহিত্যের কাজ চিরন্তন সত্য তুলে ধরা, কাল হিসেবে তার বাস্তবায়নের পথ ভিন্ন। সব সময়ই তা নিত্য আর মহাকবিরা তাই মেনেছেন; নাম হোমারই হোক আর বাল্মীকি। সেটির অনুধাবনের জন্য ‘শাশ্বতের’ সাথে ‘যুগোপোযোগিতার’ সম্পর্ক অনুধাবন প্রয়োজন। তার জন্য মহাকাব্যের প্রকরণ (পাশ্চাত্য আর ভারতীয়) বোঝানো আর এদের চরিত্রবিচার প্রয়োজন। সেসময়ই একইসাথে ইতিহাস রক্ষার মীমাংসা সম্ভব।
(রচনাটি চার কিস্তিতে ধারাবাহিকভাবে চলবে)
বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, ৮ জুলাই, ২০১২
সম্পাদনা: এম জে ফেরদৌস, নিউজরুম এডিটর
[email protected]