কেরানীগঞ্জ থেকে: ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জের কাওতাইলে বুড়িগঙ্গা নদীতে নেমেছে এমভি বসুন্ধরা লজিস্টিকস-৩৫।
সোমবার সকাল ১০টায় বসুন্ধরা শিপইয়ার্ড থেকে জাহাজটি পানিতে নামানো হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপ চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের প্রধান উপদেষ্টা মাহবুব মোর্শেদ হাসান, বসুন্ধরা গ্রুপের সিনিয়র ডিএমডি বেলায়েত হোসেন, সিনিয়র উপদেষ্টা লে. কর্নেল (অব.) খন্দকার আবদুল ওয়াহেদ, উপদেষ্টা (মিডিয়া) মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, বসুন্ধরা স্টিল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড ও বসুন্ধরা লজিস্টিকস লিমিটেডের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী পরিচালক ক্যাপ্টেন (অব.) মোহাম্মদ রুহুল আমীন, বসুন্ধরা স্টিল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের (বিএসইএল) হেড অব ডিভিশন ক্যাপ্টেন এস এম শাহ আলম ও অন্য কর্মকর্তারা।
বসুন্ধরা লজিস্টিকস-৩৫ একটি ২৫০০ মেট্রিক টন মালবাহী জাহাজ। বসুন্ধরা লজিস্টিকস-৩৫ সিমেন্টের ক্লিংকার বহন করার কাজে নিয়োজিত থাকবে। বসুন্ধরা সিমেন্টের জন্য জাহাজটি তৈরি করেছে বসুন্ধরা স্টিল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড (বসুন্ধরা স্টিল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের (বিএসইএল)।
বিশ্বমানের এই জাহাজটি আন্তর্জাতিক ক্লাসিফিকেশন বডি রিনা, ইতালির সনদপ্রাপ্ত। প্রসঙ্গত, রিনা ইতালি ১৮৬১ সাল থেকে বিশ্বের সমুদ্রগামী ও অন্যান্য জাহাজকে ‘আন্তর্জাতিক মান’-এর সনদ করে থাকে। বসুন্ধরার নির্মাণাধীন সব জাহাজের তত্বাবধান করছে রিনা।
এটি সমুদ্রসহ যে কোনো নৌপথে চলাচলের উপযুক্ত। জাহাজটির দৈর্ঘ্য ৭২ মিটার, প্রস্থ ১৩ দশমিক ৫ মিটার ও গভীরতা ৪ দশমিক ৭ মিটার। দেশীয় ডিজাইন প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড নেভাল আর্কিটেক্ট জাহাজটির মূল ডিজাইন করে।
জাহাজটি নির্মাণের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, মানসম্পন্ন যন্ত্রাংশ ও দক্ষ জনবল ব্যবহার করা হয়েছে। বসুন্ধরা স্টিল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের (বিএসইএল) নির্বাহী পরিচালক ক্যাপ্টেন (অব.) এসএম শাহ আলমের তত্ত্বাবধানে বসুন্ধরার নিজস্ব টিম সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে বিশ্বমানের এই জাহাজটি তৈরি করেছে।
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ বসুন্ধরা অন্যান্য সেক্টরের পাশাপাশি জাহাজ নির্মাণশিল্পেও বিএসইএলের মাধ্যমে নিজেদের সম্পৃক্ত করেছে।
প্রসঙ্গত, “মানবকল্যাণে জাহাজ নির্মাণ, দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণ” স্লোগান নিয়ে বসুন্ধরা স্টিল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড শুরু করে ২০০২ সালে। প্রথমে ছোট বালুবাহী জাহাজ নির্মাণের মাধ্যমে যাত্রা শুরু। এরপর তা থেমে থাকেনি। ক্রমান্বয়ে প্রতিষ্ঠানটি জাহাজ নির্মাণশিল্পে নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে।
উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের জাহাজশিল্প এগিয়ে যাচ্ছে। আর এই এগিয়ে যাবার ধারায় জাহাজ নির্মাণশিল্পে এক নম্বর প্রতিষ্ঠান হতে চায় বসুন্ধরা স্টিল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড (বিএসইএল)। সেই লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে চলেছে প্রতিষ্ঠানটি।
বিএসইএল এরই মধ্যে ৩৪টি বালুবাহী জাহাজ ও ১৩টি ড্রেজার তৈরি করেছে। এর মধ্যে তিনটি নাইজেরিয়াতে রফতানিও করেছে। ২০১০ সালে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন কে-২০ সনদপ্রাপ্ত দুইটি জাহাজ নির্মাণ করে বিএসইএল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা (প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া) মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, “বসুন্ধরা অন্যান্য সেক্টরের মতো জাহজ নির্মাণশিল্পেও অগ্রগামী। জাহাজ নির্মাণ একটি পরিবেশবান্ধব ও শ্রমঘন অপার সম্ভাবনাময় শিল্প। আমাদের দেশে জাহাজ নির্মাণশিল্প দেশের উন্নয়নে বড় অবদান রাখছে। আশার কথা যে, বাংলাদেশে বসুন্ধরাসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক মানের জাহাজ তৈরি করছে।
তিনি বলেন, বসুন্ধরা নিজেদের পণ্য ও কাঁচামাল পরিবহনে এখন জাহাজ তৈরি করছে। তবে বসুন্ধরা নিজেদের প্রয়োজনীয় জাহাজ তৈরি সম্পন্ন হবার পর জাহাজ রফতানি করার কথা ভাবছে।
বসুন্ধরা লজিস্টিকস লিমিটেডের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী পরিচালক ক্যাপ্টেন (অব.) মোহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, “আমাদের টিম নিজস্ব প্রযুক্তিতে শুধু ইঞ্জিন ছাড়া বিশ্বমানের একটি জাহাজের সব কাজ করতে সক্ষম। বসুন্ধরার এই শিপইয়ার্ডে ২৫০০ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ১৪টি জাহাজ তৈরি হচ্ছে। এ বছরই সবগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ হবে। ”
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১২
এমআইআর/ সম্পাদনা: নজরুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর/রানা রায়হান, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর