ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০১ জিলকদ ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

দাওয়াতী কাজের নামে চলছে ছাত্রী সংস্থার কার্যক্রম

চবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:৫৫, এপ্রিল ২, ২০১৪
দাওয়াতী কাজের নামে চলছে ছাত্রী সংস্থার কার্যক্রম

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও  বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দাওয়াতী কাজের নামে চলছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র সহযোগী সংগঠন ছাত্রী সংস্থা’র কার্যক্রম। স্কুলের কোমলমতি ছাত্রীদের টার্গেট করেই চলছে এ কার্যক্রম।



গত এক সপ্তাহ ধরে ছাত্রী সংস্থার নেত্রীরা বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের কাছে বিভিন্ন বই ও দাওয়াতী কাজের নামে তাদের সংগঠনের লিফলেট বিতরণ করছে। এসব লিফলেটে সংগঠনের ইতিহাস, কার্যক্রম, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বর্ণনা করা হয়েছে।

ইসলামী ছাত্রী সংস্থার লিফলেট বিতরণের বিষয়টি স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজের উপাধ্যক্ষ রওশন আরা বাংলানিউজকে বলেন,‘বিদ্যালয়ের গেইট দুটি উন্মুক্ত থাকায় বিদ্যালয়ে যে কেউ প্রবেশ করতে পারে। ফলে কে কখন এসব বই ও লিফলেট বিতরণ করছে তা আমাদের জানা নেই। ’

তিনি বলেন,‘গত শনিবার বিষয়টি আমি নিশ্চিত হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের কিছু ছাত্রী বিদ্যালয়ের  সপ্তম ও অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রীদের সহযোগীতায় এসব কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ’

এসব ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিরব ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিরাজ-উদ-দৌল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, যদি ছাত্রী সংস্থা এসব কাজ করে থাকে কারা করছে তাদের সনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 
লিফলেটে ছাত্রী সংস্থার আহ্বান :

আল্লাহর প্রদত্ত জীবন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে এমন শ্লোগানে শুরু হয়েছে তাদের আহ্বান। সেখানে আরো বলা হয়েছে যখন মানব রচিত মতাদর্শ জীবনের সর্বত্রই ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে, প্রগতির নামে উশৃঙ্খলতা যখন নারী সমাজের মর‌্যাদা প্রতিষ্ঠা ও উন্নতির পথকে করেছে রুদ্ধ, তখন আর বসে থাকা নয়, প্রতিটি আত্মসচেতন বিবেকবান ছাত্রীদেরই প্রয়োজন ইসলামী জীবন আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে নিজেদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসা।

আর এ এগিয়ে আসায় সহযোগী হবে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্থা। ছাত্রীদের যেকোন  গঠনমূলক দাবি আদায়েও এ সংগঠন কাজ করবে বলে লিফলেটে উল্লেখ করা হয়।

দাওয়াতী কাজের নামে চলছে সংগঠনের কার্যক্রম :

তিন ধাপে চলছে ছাত্রী সংস্থার দাওয়াতী কার্যক্রম। প্রথম ধাপে দাওয়াত এরপর সংগঠন ও প্রশিক্ষন দেওয়া। সর্বশেষ ধাপে সমস্যা সমাধানে ব্যক্তিগত কিছু কার্যক্রম পরিচালনা।

দাওয়াতী কার্যক্রমে রয়েছে ছাত্রীদের ব্যক্তিগত ও সাংগঠনিকভাবে ইসলামী জ্ঞান চর্চায় উদ্বুদ্ধ করা, সাপ্তাহিক ও মাসিক সাধারন সভা, তাফসির ক্লাস, সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম।

শিক্ষা বৈঠক, নৈশ ইবাদত ও শিক্ষা শিবিরের মাধ্যমে দেওয়া হবে প্রশিক্ষণ। সর্বশেষ ধাপে ছাত্রীদের সমস্যা সমাধানে ছাত্রী কল্যাণ ফান্ড, লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা, নোট ও প্রশ্নপত্র বিলি এবং ফ্রি কোচিং ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে লিফলেটে।

সংগঠনের কর্মীদের আর্থিক সাহায্য, শুভাকাঙ্খী সুধীদের আর্থিক সহযোগীতা ও সংস্থার প্রকাশিত পুস্তিকার বিক্রয়লব্ধ অর্থ থেকে এসব কার্যক্রমের আয়ের উৎস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের সপ্তম শ্রেনীর এক ছাত্রী বাংলানিউজকে বলেন, গত কয়েকমাস ধরে কয়েকজন বড় আপু ইসলামী বই, লিফলেট ও চকলেট বিতরণ করছেন। তারা বলছেন, ইসলামে নারীদের যথাযোগ্য সম্মান দেওয়া হয়েছে। দেওয়া হয়েছে উপযুক্ত অধিকার। আর এ অধিকার আদায়ে ছাত্রী সংস্থার বিকল্প নেই।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৮ সালের ১৫ জুলাই বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্থার যাত্রা শুরু হয়। এটি একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সংগঠন।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

চট্টগ্রাম প্রতিদিন এর সর্বশেষ