ঢাকা: ফলসা আমাদের কাছে বুনোফল হিসেবেই পরিচিত। গ্রামে একসময় প্রচুর পরিমাণে দেখা গেলেও ইদানীং বেশ দুর্লভ হয়ে উঠেছে গাছটি।
একসময় পথের ধারে, পতিত জায়গায় আপনা আপনিই জন্মাত। বীজ ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটি করত পাখিরা। শহরে এ গাছ খুঁজে পাওয়া অনেকটা সৌভাগ্যের ব্যাপার। কারণ এই ফল শিশুদের পাশাপাশি পাখিদেরও অনেক প্রিয়।

সম্ভবত কাকেরাই সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে। ফলসা পাকার মৌসুমে সারাদিনই ওদের আনাগোনা চোখে পড়ে। হয়তো আরো অনেক প্রাণী এ ফল খেয়ে বেঁচে থাকে। শুধু ফলের কথা বাদ দিলেও ফলসা গাছ হিসেবেও অনন্য। বড় বড় পাতার এই গাছ ডালপালা ছড়িয়ে ছাতার মতো দাঁড়িয়ে থাকে। সারা বছর তামাটে রঙের নতুন নতুন পাতা এগাছের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

ফলসা মাঝারি আকৃতির পাতাঝরা গাছ। এগাছ সাধারণত ৫ থেকে ৭ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। পাতা খসখসে, রোমশ ও কিনারা দাঁতানো। হালকা হলদে রঙের ক্ষুদ্রাকৃতির ফুল ফোটে মার্চ-এপ্রিলে। আর ফল পাকতে শুরু করে মে-জুন মাসের দিকে। ফল দেখতে অনেকটা মটর দানার মতো, গোলাকার। ফলের কাঁচা রং সবুজ, তখন স্বাদে টক। পাকা ফলের রং কালচে বাদামি, তখন স্বাদ টক-মিষ্টি ধরনের।
এই ফলের রস গরমে ক্লান্তিনাশক। তাছাড়া স্কোয়াশ ও অন্য কোমল পানীয় তৈরিতেও কাজে লাগে। প্রতি ১০০০ গ্রাম ফল থেকে ৭২৪ ক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। মায়ানমারে এ গাছের বাকল সাবানের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া বাকলের আঠাল উপাদান খাদ্যদ্রব্য শোধনেও কাজে লাগে। বৈজ্ঞানিক নাম : Grewia asiatica.
বাংলাদেশ সময়: ০৮০৫ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০১৪