ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

৩৫ মিনিটে কমলাপুর থেকে উত্তরায় পাড়ি

সুকুমার সরকার, সিনিয়র স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৬
৩৫ মিনিটে কমলাপুর থেকে উত্তরায় পাড়ি ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: রাজধানী ঢাকায় যানজট শব্দটি এখন সবার কাছে একটা বিভীষিকার বিষয়। ঘর থেকে বেরুলেই যানজটে পড়াটা একটা স্বাভাবিক নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সড়কগুলো সব সময় থাকে রিকশা, প্রাইভেট কার, বাস-মিনিবাসে ভরপুর। বাদ থাকে না পাড়ার অলি-গলিও। সেখানেও রিকশা-প্রাইভেট কারের জন্য যানজট সৃষ্টি হয়।

নিত্য এই যানজটের যন্ত্রণার মধ্যে মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) নতুন এক অভিজ্ঞতা হল। এদিন সকাল নয়টা চল্লিশ মিনিটে জামালপুরের তারাকান্দিগামী অগ্নিবীণা আন্তঃনগর ট্রেনে চেপে কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর স্টেশনে  পৌঁছানো গেল মাত্র ৩৫ মিনিটে। অনেকের কাছে এটা অবিশ্বাস্য ঠেকতে পারে।

অবশ্য বাসে বা প্রাইভেট কারে করে গেলে এটা হতো না। গাজীপুর নিবাসী এক সাংবাদিক বন্ধুর পরামর্শে রেলে চড়ে দারুণ এ অভিজ্ঞতা হলো।
 
ঢাকা থেকে বিমানবন্দরের দূরত্ব ১৩/১৪ কিলোমিটার। মহাখালী হয়ে কিংবা রামপুরা-নতুনবাজার হয়ে বাস বা অন্য যেকোন পরিবহনে করে এ পথটুকু পাড়ি দিতেই সময় লেগে যায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা। কোন কোন সময় এরও বেশি।

এখন আর কর্মদিবস বা ছুটি-ছাটার দিন বলেও কথা নেই। শুক্র-শনিবারও যানজট লেগে থাকে। রাজধানীর যেকোন প্রান্ত থেকে চার-পাঁচ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে দুই-এক ঘণ্টা সময় ব্যয় হওয়া কোন ব্যাপারই নয়।

রেল যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সড়ক পথে যানজটের কারণে গাজীপুর-টঙ্গী-উত্তরার অধিকাংশ লোক এখন রেলে করে কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে নামেন। এরপর ঢাকার কর্মস্থলমুখী হন।

তেমনি ঢাকার যারা বিমানবন্দর, টঙ্গি বা উত্তরায় কাজ করেন তারা এখন বাস বাদ দিয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনে ট্রেন ধরে বিমানবন্দর ও টঙ্গি রেল স্টেশনে এসে নামেন।

মঙ্গলবার সকালটা কমলাপুর এবং বিমান বন্দর রেলস্টেশন যাত্রী ভিড়ে ঠাসা দেখা গেল। যাত্রীরাও জানালেন, আগের চেয়ে রেলস্টেশনে এখন সব সময় যাত্রীতে ভরপুর থাকে।

তবে আন্তঃনগর ট্রেনগুলো সব স্টেশনে থামে না বলে অভিযোগ করলেন গাজীপুরের আতাউর রহমান। তিনি বললেন, বিমানবন্দর ছাড়া আন্তঃনগর কোন ট্রেনই ক্যান্টনমেন্ট ও তেজগাঁও রেলস্টেশনে থামে না। এতে অনেকেই অসুবিধায় পড়েন।

কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর রেল স্টেশনে লোকাল ও ডেমু ট্রেনের ভাড়া ১৫ টাকা। আন্তঃনগর ট্রেনের ভাড়া ৩৫ টাকা।

দেশের উত্তরাঞ্চল-দক্ষিণাঞ্চলসহ সিলেট, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রামের লোকাল বা আন্তঃনগর সব ট্রেন বিমানবন্দর রেলস্টেশন থামে। যে কারণে এ স্টেশনটি দিন-রাত সব সময় যাত্রী ভিড়ে সরগরম থাকে।

অফিসমুখী জয়দেবপুরের যাত্রীরা সকাল সাতটা দশ মিনিটে ট্রেনে উঠে সোয়া ঘণ্টার মধ্যে  কমলাপুর রেলস্টেশনে এসে পৌঁছান। এছাড়া সকালে দুটি ও রাতে দুটি করে চলাচল করছে টঙ্গি-কমলাপুর ডেমু সার্ভিস। এ চারটি ট্রেনেই যাত্রীরা থাকেন ঠাসাঠাসি করে।

অফিসটাইম ও ঘরে ফেরার কারণে এ ট্রেন চারটিতে যাত্রী ভিড় বেশি হয়। বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছাতে সময় লাগে ৩৫/৪০ মিনিট। রেলে চলাচল মানে সময় কম লাগা। তা ছাড়া ট্রেন পরিবেশ বান্ধবও।

ট্রেন ধরলে সময়মতো অফিসে পৌঁছাতে পারার বিষয়ে নিশ্চিত থাকার পাশাপাশি যানজটের বাড়তি টেনশন থেকে মুক্ত থাকেন যাত্রীরা। তাই রিলাক্স মুডে চলাচলের জন্য যাত্রীরা এখন বাস ছেড়ে ট্রেনের দিকে ঝুঁকেছেন।
 
এ প্রসঙ্গে বিমানবন্দর রেলস্টেশন মাস্টার মুহম্মদ ফজলুর রহমান ভুঁইয়া গর্বের সঙ্গে বাংলানিউজকে জানালেন, রেলের সুদিন দ্রুত এগিয়ে আসছে।

পদ্মাসেতু ও কক্সবাজার রেললাইন সম্প্রসারিত হলে রেলের যাত্রী বেড়ে যাবে বহুগুণ। মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুরের মানুষ বাড়ি থেকে ঢাকায় এসে চাকরি করে  স্বল্প সময়ে বাড়িতে ফিরে যেতে পারবেন। মানুষের চাপ কমে যাবে ঢাকার ওপর থেকে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৫
এসএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ