কি, অবাক হচ্ছেন? বলছিলাম পুরান ঢাকার বিখ্যাত এবং ঐতিহ্যবাহী শাহী জিলাপির কথা। ৮০০ গ্রাম থেকে শুরু করে একটি জিলাপিতেই যার ওজন গড়ায় পাঁচ কেজি পর্যন্ত।
বেশ মোটা, প্যাঁচানো এ জিলাপি দেখলে জিভে জল চলে আসবে অনায়াসে। মাসকলাইয়ের ডাল, বেসন, ঘি, ডালডা, আর ময়দা দিয়ে তৈরি এ শাহী জিলাপির স্বাদের কারণেই তা এখনো রয়ে গেছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে।
শাহী জিলাপির মধ্যে সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী হলো আড়াই কেজিরটি। আকার যতো বড়, দামও ততো বেশি। তবে দাম যাই হোক, ভোজনরসিক মানুষদের কাছে মিষ্টি জাতীয় খাবারের মধ্যে শাহী জিলাপিই সবচেয়ে প্রিয় এখানে। আর তাইতো এটি যুগ যুগ ধরে বহন করে আসছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্য।
চকবাজারের জিলাপি বিক্রেতা আলী হোসেন বাংরানিউজকে বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকেই পুরান ঢাকায় জিলাপি খুবই জনপ্রিয় খাবার। তাদের কাছ থেকেই এটি তৈরি করা শিখে আমিও এখন এ পেশায়ই আছি। তবে রমজানে যে জিলাপি তৈরি করি, তার মধ্যে পেশার থেকে নেশাটাই থাকে বেশি। আর শাহী জিলাপি ছাড়াতো এ এলাকার মানুষের ইফতারই জমে না। একদিকে দ্রুত বানাই আর অন্যদিকে নিমিষে শেষ হয়ে যায়। শেষ বেলায় আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক কেজি শাহী জিলাপির দাম পড়ে ১৮০ টাকা। দেড় কেজি হলে ২৫০ টাকা, দুই কেজির হলে ৪০০ টাকা এবং আড়াই কেজির একটি জিলাপির দাম হয় ৪৭০ টাকার মতো। তবে পাঁচ কেজি বা তার ঊর্ধ্বে যে জিলাপিগুলো, সেগুলো সাধারণত বানানো হয় অর্ডার নিয়ে। শুধু শাহী জিলাপি নয়, এর পাশাপাশি চকবাজারে আরো রয়েছে চিকন জিলাপি, বোম্বে জিলাপি, রেশমি জিলাপি, প্যাঁচ জিলাপি আর আমিত্তি। এ জিলাপিগুলো শুধু নামে নয়, স্বাদেও রয়েছে ভিন্নতা। আর এগুলোর দাম পড়বে কেজিপ্রতি ১২০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে।
যানজট ঠেলে অনেক কষ্ট করে চকবাজারে শাহী জিলাপিসহ বিভিন্ন ধরনের ইফতার কিনতে এসেছিলেন রাজধানীর গ্রিন রোড এলাকার ফয়জুর আহমেদ।
তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, প্রতি বছরই রমজানে পরিবারের সদস্যদের জন্য ইফতারের মেনুতে শাহী জিলাপি রাখার চেষ্টা করি। কারণ ইফতারে মিষ্টি আইটেম না থাকলে স্বাদের পরিপূর্ণতা আসে না। আর সে পূর্ণতা আনতে শাহী জিলাপির তুলনা নেই। এর স্বাদ ঠিক যেনো বাদশাহি খাবারের মতো।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৮
এইচএমএস/টিএ