সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা-কালিগঞ্জ সড়ক ধরে এগুতেই বাকাল চেক পোস্টের একটু আগে ডান পাশে চোখে পড়ল বাহারি কিছু ফুল। মোটরসাইকেল থেকে নেমে ছবি তুলে স্থানীয় বাসিন্দা ফরিদা আক্তারের কাছে গাছটি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা দাদগাছ।
পরে তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, আসলেই গুল্ম শ্রেণির এ গাছটির নাম দাদমর্দন। যার ইংরেজি নাম candle bush এবং বৈজ্ঞানিক নাম Senna alata.
বিশ্ব মুক্ত কোষ উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে, ময়লার ভাগাড় কিংবা পরিত্যক্ত স্থানে আপনাআপনিই জন্মে দাদমর্দন। কখনো কখনো ডোবার ধার, খেতের মধ্যবর্তী আইল বা অনাবাদি স্থানেও জন্মায়। দাদমর্দন গাছে কোনো সুমিষ্ট ফল হয় না, এর কাঠও মূল্যহীন।
দাদমর্দন মূলত ঔষধি গাছ হিসেবেই পরিচিত এটি। বিশেষ করে চর্মরোগে এ গাছ ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। তবে দাদ ও পাঁচড়ায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহার্য। দাদের বাহ্যিক নিরাময়ের জন্য টাটকা পাতা বেটে ব্যবহার করা হয়। আবার ঝলসানো পাতাও রেচক। এসব ছাড়াও যৌনরোগ চিকিৎসায় এবং বিষাক্ত পোকামাকড়ের কামড়ে দাদমর্দন সাধারণত টনিক হিসেবে কাজে লাগে।
দাদমর্দন দ্রুত বর্ধনশীল নরম-কাষ্ঠল গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। সাধারণত এক থেকে দুই মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। কাণ্ড পুরু ও হলদেটে। এর ফুল ফোটার মৌসুম সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারি। ডালের আগায় ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটার খাড়া ডাঁটায় হলুদ রঙের ফুল নিচ থেকে ওপরের দিকে ফোটে।
বর্তমানে আলংকারিক পুষ্পবৃক্ষের জন্য দাদমর্দন গাছ বিভিন্ন উদ্যানে রোপণ করা হয়। এরা ক্যাশিয়া জাতের ফুল। ক্যাশিয়ার আরেকটি বুনো জাতের নাম কালকাসুন্দা। দাদমর্দন গুল্ম শ্রেণির গাছ, যার ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে বা ঔষধি গাছ হিসেবে সংরক্ষণের প্রয়োজনে বিভিন্ন বাগানে রোপণ করা হয়। বর্তমানে গাছটি বিলুপ্তির পথে।
সাতক্ষীরার গাছের পাঠশালার পরিচালক ইয়ারব হোসেন বলেন, দাদমর্দন গাছের যেমন ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে, তেমনি এর ফুল খুবই আকর্ষণীয়। দাদমর্দন গাছ এখন সচরাচার দেখা যায় না। এটি বিলুপ্তির পথে। ঔষধি গুণাগুণ সম্পন্ন এ গাছ সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৩
এসআই