কক্সবাজার: টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) রাতের পর থেকে চকরিয়া উপজেলার কিছু কিছু এলাকায় বন্যার পানি কমলেও উপকূলীয় অঞ্চল পেকুয়া উপজেলায় এখনো বন্যার পানিতে তলিয়ে রয়েছে বেশ কিছু জনবসতি।
স্থানীয়রা জানান, পাহাড়ি ঢলের তোড়ে মাতামুহুরী নদীর কমপক্ষে ১৫টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এসব ভাঙন দিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। মাতামুহুরী নদীর অববাহিকা এলাকার বাসিন্দারা চরম ভোগান্তিতে রয়েছে।
এদিকে গত তিন দিনে পাহাড় ধস, পানিতে ভেসে এবং সাপের কামড়ে চকরিয়া পেকুয়া রামু এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সাতজন মারা গেছে। চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার ধসকবলিত এলাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওই দুই উপজেলায় প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি)।
কক্সবাজারের ডিসি মুহাম্মদ শাহীন ইমরান আরও জানিয়েছেন এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার সব ইউনিয়ন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে বন্যাকবলিত এলাকায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল এবং সাত লাখ টাকা নগদ সাহায্য দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দুর্গত মানুষের মধ্যে শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বন্যাকবলিত এলাকায় উদ্ধার অভিযান ও খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন নৌবাহিনী কোস্টগার্ড ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
বন্যা ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে চকরিয়া উপজেলার কাকারা, সুরাজপুর-মানিকপুর, বরইতলী, হারবাং, পুর্ববড় ভেওলা, বিএমচর, পশ্চিম বড়ো ভেওলা, চিরিঙ্গা, লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল, ফাসিয়াখালী বদরখালী ঢেমুশিয়া কোনাখালী, চকরিয়া পৌরসভা, পেকুয়া সদর ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের সড়কগুলোও পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
উপকূলীয় এলাকার পানি নিষ্কাশনের বিভিন্ন স্লুইস গেইট এবং নির্মাণাধীন রেললাইনে পর্যাপ্ত কালভার্ট না থাকায় পাহাড়ি ঢলের পানি দ্রুত নিষ্কাশন হতে পারছে না বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের চকরিয়া উপজেলা কর্মকর্তা জামাল মোর্শেদ জানান, মাতামুহুরী নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, মাতামুহুরী নদীর ঢলের পানির তোড়ে কইন্যারকুম, বিএমচর, মেহেরনামা বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এছাড়া আরও একাধিক এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০২৩
এসবি/এএটি