ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টিতে ভাসছে রাজশাহী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩
৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টিতে ভাসছে রাজশাহী

রাজশাহী: রাজশাহীতে আজ সকাল থেকে অঝোর ধারায় বৃষ্টি ঝরছে। রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত থেমে থেমে বৃষ্টি চলছেই।  

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানিয়েছে, আজ রাজশাহীতে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ড করা হয়েছে। আর এই পরিমাণ বৃষ্টিতেই ভাসছে রাজশাহী শহর। বিশেষ করে শহরের মধ্যাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলে হাঁটুপানি জমে গেছে। চারিদিকে বৃষ্টির পানি কেবল থৈ-থৈ করছে।

রাজশাহী শহরের সড়ক ঘেঁষে থাকা ড্রেনের পয়োনিষ্কাশনের নোংরা আর বৃষ্টির পানিতে একাকার হয়ে গেছে পুরো রাজপথ। আর নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। কেবল আজই নয়, একটু বৃষ্টি হলেই এ অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। বছরের পর বছর ধরে চলছে এই দুর্ভোগ। রাজশাহী শহরের রাস্তা-ঘাট, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও সৌন্দর্য বর্ধনে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হলেও বর্ষণমুখর দিনগুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় তা ম্নান হচ্ছে। এত উন্নয়ন হলেও শহরের বিভিন্ন এলাকায় ‘জলজট’ ও জলাবদ্ধতা নিরসন হয়নি আজও।

এবার বর্ষায় বৃষ্টি না হলেও শরতের শুরু থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে রাজশাহীতে। প্রতিদিন বৃষ্টি হচ্ছে। আর তাই জলজট নিয়েও দুর্ভোগ কাটছে না মহানগরবাসীর। আজ সকাল থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে রাজশাহীতে। আর এই অল্প সময়ের বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। বিশেষ করে মহানগরের সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, গণকপাড়া, তালাইমারী মোড়, শিরোইল মাস্টারপাড়া, কাদিরগঞ্জ, বর্ণালী মোড়ের পেছনে, লক্ষ্মীপুর, ঝাউতলা, ভাটাপাড়া, কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার সামনে, রাজশাহী পর্যটন মোটেল রোড, সপুরা গোরস্থানের মোড় থেকে উপশহর মোড়, গৌরহাঙ্গা রেলগেইট, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মোড়, শালবাগান, মালদাহ কলোনিসহ বেশ কিছু এলাকায় বৃষ্টি মানেই অবর্ণনীয় দুর্ভোগ।

এছাড়া বৃষ্টি হলেই রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়, কোর্ট চত্বরে জমেছে হাঁটুপানি। সকাল থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই দপ্তরগুলোয় পানি মাড়িয়ে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হয়েছে সংশ্লিষ্ট সবাইকেই বৃষ্টি হলেই রাজশাহী শহরের অনেক রাস্তায় পানি জমে যায়। আর পাড়া-মহল্লার ছোট রাস্তায়ও জমে যায় হাঁটুপানি তাই বৃষ্টি হলেই সড়কের জলাবদ্ধতা নিয়ে চরম আশঙ্কায় থাকেন নগরবাসী। কারণ সবাইকেই পড়তে হয় চরম দুর্ভোগ আর ভোগান্তিতে। তবে বৃষ্টি থামার ৩/৪ ঘণ্টার মধ্যেই এসব এলাকার সড়কের পানি নেমে যায়। কিন্তু বর্তমানে প্রায় প্রতিদিন থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। তাই জনদুর্ভোগ অনেকটা স্থায়ী রূপ নিয়েছে। পানি একদিক দিয়ে নামছে আবার আরেক দিক দিয়ে জমছে। ডুবছে সড়ক। আর নিচু এলাকার পানি নামতে এক থেকে দুই সপ্তাহ লেগে যাচ্ছে।

গুরুত্বপূর্ণ প্রধান সড়কে তাই জলজটের কারণে যানজটও লেগে থাকছে। এরপর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে অনেক এলাকায় ড্রেন পরিষ্কার কার্যক্রম চলছে। সকাল হলেই পয়োনিস্কাশন বর্জ্য সড়কের ওপরে তুলে রাখা হচ্ছে। এরপর যখন বৃষ্টি হচ্ছে তখন সেই দুর্গন্ধময় পয়োনিষ্কাশন বর্জ্য আর বৃষ্টির পানি মিলেমিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে। সেই পানি মাড়িয়ে চলাচল করায় অনেকে জটিল চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ওই নোংরা পানি মাড়িয়ে মসজিদে গিয়ে অনেকে নামাজও আদায় করতে পারছেন না। এর মধ্যে আবার কিছু কিছু এলাকায় উন্নয়ন কাজ চলছে। তাই সেগুলোতে দুর্ভোগের মাত্রা আরও বেশি।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাজীব খান বলেন, গত তিনদিন থেকেই রাজশাহীতে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে আজকে বৃষ্টির পরিমাণ বেশি। শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজশাহীতে তিন মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এরপর শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে ৫ দশমিক ৮ মিলিমিটার। আর আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রাজশাহীতে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ড করা হয়েছে।

আকাশে মেঘ রয়েছে থেমে থেমে বৃষ্টি চলছে। তাই বৃষ্টির এই পরিমাণ আরও বাড়বে বলেও জানান, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের এই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।