ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

বরগুনায় চরাঞ্চলের ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৭ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২৪
বরগুনায় চরাঞ্চলের ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে

বরগুনা: ঘূর্ণিঝড় রিমালের আতঙ্কিত হয়ে উপকূলীয় জেলা বরগুনার চরাঞ্চলের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। কেন্দ্রগুলোতে রোববার (২৬ মে) সকাল থেকে বিভিন্ন চরের নিম্নাঞ্চল থেকে মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

 

জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

আশ্রয়কেন্দ্রে আসা মানুষদের মধ্যে খাবার পানি, মুড়ি, চিড়া, বিছানা, কম্বল এবং বিদ্যুতের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এদিকে, এখনও ঝুঁকিপূর্ণ অনেক চরের বাসিন্দারা আশ্রয়কেন্দ্রে আসেননি। তবে দুর্গম চরাঞ্চলের যেসব বাসিন্দারা আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করতে অপরাগতা প্রকাশ করছেন, তাদের অতি দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান অথবা নিরাপদ স্থানে থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন বরগুনা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুহা. রফিকুল ইসলাম।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বরগুনার পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যানুযায়ী, রোববার জোয়ারের উচ্চতা ছিল ২ দশমিক ৩২ মিটার. যা বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপরে।  

এদিকে জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় প্লাবিত হয়েছে জেলার নিম্নাঞ্চল। ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে গেছে। তলিয়ে গেছে মাছের ঘের। রাস্তা ঘাটে কোমর সমান পানি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন মানুষ। কুমড়াখালী, আমতলীর আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের পশুরবুনিয়া গ্রামে বেড়িবাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে পুরো গ্রাম। ঝড়ো হাওয়ার পাশাপাশি বৃষ্টি হচ্ছে। ক্ষণে ক্ষণে শক্তি বাড়িয়ে আগ্রাসী রূপ ধারণ করছে ঘূর্ণিঝড়টি। নদীর পানি বেড়ে উপকূল ছাপিয়ে ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে। ভেঙেছে বাঁধ।  

পাউবো তথ্য অনুযায়ী, বরগুনার ৮০৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে নলটোনা, পালের বালিয়াতলী, কালমেঘা, রামনা এবং কালিকাবাড়ী নামক পাঁচটি জায়গায় প্রায় এক কিলোমিটার বাঁধ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। পরিকল্পিত আর টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় প্রতিবছরই ভাঙনের কবলে পড়তে হয় উপকূলবাসীর। বন্যার কথা শুনলেই আশ্রয় নিতে হয় সাইক্লোন শেল্টারে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার আগেই রিমাল আতঙ্কে উপকূলবাসী।  

বরগুনা ডিসি কার্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী মিলনায়তনে গতকাল জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  

সেখানে জানানো হয়েছে, জেলায় ৬৪২ টি আশ্রয়কেন্দ্র, তিনটি মুজিব কিল্লা প্রস্তত রাখা হয়েছে। যেখানে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৫১০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। পাশাপাশি ৯ হাজার ৬১৫ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন। জেলার ছয়টি উপজেলায় ছয়টি কন্ট্রোল রুম এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটিসহ সাতটি কন্ট্রোল রুম সার্বক্ষণিক খোলা রাখা হয়েছে। জেলার ৪২টি ইউনিয়নে ৪২টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া ৪২২ মেট্রিক টন জি আর খাদ্যশস্য এবং ১৭ লাখ ৩ হাজার ৫০০ টাকা মজুদ আছে।

বরগুনা ডিসি মুহা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আমরা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে আছি। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে মাইকিং করা হচ্ছে।  

তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে। এছাড়া জেলার পায়রা-বিষখালী নদীতে ১৪টি খেয়া পারাপার বন্ধ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।