ঢাকা: ইউএসএআইডি এবং ইউএনডিপি কর্তৃক পার্বত্য চট্টগ্রামের জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে পরিচালিত পার্বত্য চট্টগ্রামের সামগ্রিক উন্নয়ন কর্মসূচির ‘ওয়াটারশেড কো–ম্যানেজমেন্ট অ্যাকটিভিটি’-দ্বিতীয় পর্যায় (সিএইচটিডব্লিউসিএ-২) এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার (৩ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়।
ইউএনডিপি জানায়, বাংলাদেশ সরকার, স্থানীয় সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের অংশীদারিতে এবং ইউএনডিপি কর্তৃক বাস্তবায়িত এই নতুন প্রকল্পটি ইউএসএআইডি’র এক যুগব্যাপী সংরক্ষণ প্রচেষ্টারই ধারাবাহিকতা। আর এক্ষেত্রে বন, নদী, জলাভূমি এবং জলাশয় রক্ষায় পারস্পরিক জ্ঞান আদান প্রদানের নীতি গ্রহণ করেছে তারা এবং পুরো অঞ্চলে জলবায়ু সহনশীলতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৪-এর মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে ভূমি পুনরুদ্ধার, মরুকরণ এবং খরা সহনশীলতা, আর পরিবেশ দিবসের ঠিক আগে আগে প্রকল্পটির দ্বিতীয় পর্বের যাত্রা শুরু হলো। বাংলাদেশের ভূখণ্ডের ১০ শতাংশ জুড়ে বিস্তৃত পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলটি সাংস্কৃতিক ও পরিবেশগত বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ, যেখানে রয়েছে দেশের ৪৩ শতাংশ বনভূমি এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ নদী। ইউএসএআইডি, ইউএনডিপি, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, পার্বত্য জেলা পরিষদ, বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠী মিলে এই অঞ্চলের অনন্য পরিবেশকে রক্ষা এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য একসাথে কাজ করার প্রতিশ্রুতি জানান দেওয়া হয় এই সূচনা কর্মসূচিতে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোঃ মসিউর রহমান এনডিসি বলেন, পানির প্রাপ্যতা, কৃষি অনুশীলন ও সামাজিক সংহতিতে ইতিবাচক উন্নতি, এবং জলাশয় সংরক্ষণ ও বন্যপ্রাণী পাচার রোধে সাফল্য অর্জনের মধ্য দিয়ে প্রকল্পের প্রথম পর্যায়টি এই প্রয়াসকে সামনে আরও এগিয়ে নেওয়ার উৎসাহ যোগায়।
ইউএসএআইডি’র এশিয়া ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অঞ্জলি কৌর বলেন, আমরা আশা করি, এই অঞ্চলকে রক্ষায় আমাদের অতীত অর্জনগুলোর দ্বারা তৈরি পাটাতনের উপর দাঁড়িয়ে নতুন প্রকল্পটিও সফল হবে এবং এখানকার জনগণের জন্য আরও উজ্জ্বল, আরও সহনশীল ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
বাংলাদেশে ইউএসএআইডি’র মিশন ডিরেক্টর রিড এশলিম্যান বলেন, সংরক্ষণ প্রচেষ্টা যাতে অন্তর্ভুক্তিমূলক, সম্প্রদায়-দ্বারা এবং টেকসই হয়, সেটি নিশ্চিত করে আমরা প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের লক্ষ্যকে এগিয়ে নিতে আমাদের অংশীদারদের সাথে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বাংলাদেশ বন বিভাগের প্রধান বন সংরক্ষক আমির হোসাইন চৌধুরী সহযোগিতার গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভেবে বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় আমাদের অবশ্যই একযোগে কাজ করতে হবে।
সিএইচটিডব্লিউসিএ-২ এর লক্ষ্য জলবায়ু পরিবর্তন, অবৈধ গাছ কাটা এবং বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত অপরাধ মোকাবেলা করার পাশাপাশি জলবায়ু-অভিযোজন নির্ভর জীবিকার উদ্যোগগুলোকে সহায়তা প্রদান করা। এই প্রকল্পের লক্ষ্য, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস করা, প্রত্যন্ত অঞ্চলে পানি এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থা উন্নত করা এবং বন ও জলাভূমি ব্যবস্থাপনায় অংশীজনদের ভেতর সমতা রক্ষা করা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়-এর অতিরিক্ত সচিব ফাহমিদা খানম, রাজা দেবাশীষ রায়, ইউএসএআইডি বাংলাদেশ-এর ইকোনমিক গ্রোথ ডিরেক্টর ড. মুহাম্মদ খান, অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) প্রদীপ কুমার মহত্তম এনডিসি, এমওসিএইচটিএ, ইউএনডিপি বাংলাদেশ-এর সহকারি আবাসিক প্রতিনিধি সোনালী দয়ারত্নে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৯ ঘণ্টা,জুন ৪, ২০২৪
টিআর/এমএম