ঢাকা: কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে দোয়েল চত্বরে দেখা মিললো কোয়েল পাখির। কিন্তু দুর্ভাগা এ পাখিগুলো বন্দি বিক্রেতার খাঁচায়।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) হরতালের সকালে কুয়াশা তখনো কাটেনি। এমন সময় দেখা গেল দোয়েল চত্বরে কোয়েল পাখিগুলো নিয়ে বসে আছেন বিক্রেতা শফিকুল।
গ্রামে পৌষের শীতে দল বেঁধে কোয়েলের পেছনে ঘোরার আনন্দ এখন আর পাওয়া যায় না। বিষ মেশানো গম খেয়ে ঢুলু ঢুলু হয়ে উড়ে পালানোর চেষ্টা করতো কোয়েল পাখিগুলো।
কিন্ত দুরন্ত শিশুর দলের হাত থেকে রেহাই পাওয়া বেশ কঠিন ছিল তাদের। মাঠের পর মাঠ পাখির পেছনে দৌড়ে এক সময় শীতের পোশাক খুলে ফেলে শিশুরা।
কিন্তু বদলে গেছে সময়। যে পাখিগুলোর মুক্ত আকাশে কিংবা শীতের সকালে ফসলের ক্ষেতে উড়ে বেড়ানোর কথা তারা এখন শিকারির খাঁচায় বন্দি থাকে।
কোয়েল বিক্রি নিষিদ্ধ বিষয়টি জেনেও শফিকুল তা বন্ধ করেন নি। শফিকুলের সরল স্বীকারোক্তি ভ্রাম্যমাণ আদালত ছাড়া কেউ ধরে না। আর আমি কোয়েল ছাড়া অন্য পাখিতো বিক্রি করি না।
একশ’ ৬০ থেকে দুইশ’ টাকায় পাওয়া যায় এক জোড়া কোয়েল।
বিক্রেতা শফিকুল জানান, দুইশ’ টাকা জোড়ার কোয়েল যেদিন কেনা হবে সেদিনই ডিম দেবে। আর একশ’ ৬০ টাকা জোড়ার কোয়েল ডিম দিবে আরো মাস দেড় পর থেকে।
শুধু কোয়েল পাখি নয় কোয়েলের ডিমও বিক্রি করেন শফিকুল। তিনি জানান, এক হালি ডিম ১২ টাকায় বিক্রি করেন।
শফিকুল জানান, চার মাস বয়সী কোয়েল পাখিগুলো ডিম দেবে টানা ছয় মাস। আর বেঁচে থাকে দেড় থেকে দুই বছর পর্যন্ত।
সব মিলিয়ে ৪৮টি কোয়েল পাখি রয়েছে শফিকুলের কাছে। এসব পাখি সাভার থেকে কিনে এনেছেন তিনি। মুরগির খাবারই কোয়েলের খাবার বলে জানালেন শফিকুল।
তিনি বলেন, বছরের এই সময়টায় সবচেয়ে বেশি কোয়েল ধরা পড়ে। এছাড়া এখন খামারেই কোয়েল পাখি পালন করা হয়। শুধু ডিম নয়, কোয়েল পাখির মাংসেরও চাহিদা রয়েছে। রোগীদের স্যুপ করে দেওয়ার জন্য অনেকেই কোয়েল পাখি কেনেন বলে জানান, এ বিক্রেতা।
মামার সঙ্গে সকালে হাঁটতে বের হয়ে ছোট্ট ডিম দেখে থমকে দাঁড়ায় শিশু ফরহাদ। বিক্রেতা জানান, কোয়েল সম্পর্কে। পকেট থেকে ৫ টাকা বের করে, দুটো ডিম চায় ফরহাদ। কিন্তু ৬ টাকার নিচে দিতে রাজি নন বিক্রেতা। অবশেষে পাঁচ টাকাতেই পাওয়া গেলো দু’টি ডিম।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৪