ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

দূষণ না কমলে মাছও মাইগ্রেট করবে!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৫
দূষণ না কমলে মাছও মাইগ্রেট করবে! ছবি: রাশেদ/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: অনুকূল পরিবেশ বা উন্নত জীবনমান না পেয়ে মানুষ মাইগ্রেট করে অন্যদেশে যায়। তেমনি পানি দূষণ না কমালে মাছও অভিযোজন (মাইগ্রেট) করে অন্য দেশে চলে যাবে।

তখন আর প্রোটিনের চাহিদা মেটানো যাবে না।
 
শুক্রবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘পলুশন ইন ওয়াটার ওয়েস অব বাংলাদেশ, দ্য রিস্ক অন ইকোসিস্টেম অ্যান্ড হিউম্যান হেল্থ অ্যান্ড আদার বেনিফিসিয়াল ওয়াটার ইউজেস’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
 
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সাইন্স অ্যান্ড ফিশারিজ (আইএমএসএফ) এ সেমিনারের আয়োজন করে।
 
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. সেলিনা আফরোজা। তিনি বলেন, মানুষ দারিদ্রের মধ্যে যখন বাঁচতে পারে না তখন অন্য দেশে মাইগ্রেট করে। তেমনি মাছ যখন বাঁচার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ না পায় তখন অন্য কোথাও চলে যায়। দেশের নদীগুলোতে এবং সাগরে যে হারে পানি দূষণ হচ্ছে এতে মৎসকূল অভিযোজন (মাইগ্রেট) করে অন্য দেশের নদী বা সাগরে চলে যাবে। মাছ আমাদের ৬০ শতাংশ প্রোটিনের চাহিদা মেটায়। তখন এই চাহিদা পূরণ হবে না।
 
সেলিনা আফরোজা বলেন, ইলিশ তো চলেই গিয়েছিলো, অনেক উদ্যোগ নেওয়ার পর আবার ফিরে এসেছে। কারণ ইলিশের বিচরণ ক্ষেত্র তৈরির জন্য রুলস রেগুলেশনের কার্যকর প্রয়োগ করা হচ্ছে। একইভাবে পানি দূষণ রোধেও সামগ্রিকভাবে আইন কানুন মেনে চলতে হবে।
 
বিশেষ অতিথি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (মেরিন অ্যাফেয়ার্স ডিভিশন) রিয়ার এডমিরাল (অব.) খুরশেদ আলম বলেন, আমাদের ১৮০ হাজার বর্গ কিলোমিটার সমূদ্র অঞ্চল রয়েছে। কিন্তু পানিতে জমিতে সব জায়গায় দূষণ। কোথাও দূষণ কমছে না। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে মাছ অন্যত্র চলে গেলে তখন খাবার জন্য আর মাছ থাকবে না। যেহেতু মৎস সম্পদের অর্থনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে, তাই এটা শুধু গবেষকদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সচেতনতা সৃষ্টি করে পানি দূষণ রোধ করতে হবে।

অস্ট্রেলিয়ার আরএমটি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক গোলাম কিবরিয়া বলেন, বিভিন্ন শিল্প কারখানা থেকে আসা বর্জ্যের ভেতর ব্যাপকভাবে মারকারি, ক্যাডমিয়াম ও ইউরোনিয়াম থাকে। যা পানিকে বিষাক্ত করে তোলে। প্রাকৃতিক মৎস প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত হালদা নদীতে সবচেয়ে বেশি ক্যাডমিয়াম রয়েছে। এটা খুব ভয়ঙ্কর বিষয়। এই পানি ফসলের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি পানি দূষিত হয় চট্টগ্রাম, ঢাকা ও খুলনাতে। এসব এলাকায় শিপ ব্রেকিং শিল্প, পেপার মিল ও সারকারখানা থেকে নির্গত ক্যাডমিয়াম, মারকারি ও ইউরেনিয়াম বর্জ্য হিসেবে পানিতে মিশে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দীন চৌধুরী। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব হংকং-এর অধ্যাপক রুডলফ হিমারস, অধ্যাপক এম মারুফ হোসেন প্রমুখ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।