ঢাকা: বাংলাদেশে সম্পূর্ণ নতুন বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ এক প্রজাতির ব্যাঙের সন্ধান পেয়েছেন গবেষকরা। এর বৈশিষ্ট্য হলো কোনো নির্দিষ্ট মৌসুমে নয়, সারা বছরই এরা সন্তান উৎপাদন করে।
সম্প্রতি একটি জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে গবেষকরা বলেন, অধিকাংশ প্রজাতির ব্যাঙের নির্দিষ্ট প্রজনন মৌসুম থাকে। কিন্তু বাংলাদেশি এই প্রজাতির ব্যাঙ সারা বছরই সন্তান উৎপাদন করে, এমনকি শীত মৌসুমেও।
গবেষণায় নেতৃত্বদানকারী প্রধান গবেষক ফিনল্যান্ডের দ্য ইউনিভার্সিটি অব হেলসিনকি’র বায়োসায়েন্স বিভাগের ডক্টরাল শিক্ষার্থী সাজিদ আলী হাওলাদার বলেন, ১৭৯৯ সালে জার্মান পরিবেশ বিজ্ঞানী জে. জি. শনেইডার প্রথম এ ধরনের এক প্রজাতির ব্যাঙের সন্ধান পান। এর নাম রাখেন ইউফলিক্টিস সায়ানোফলিক্টি (Euphlyctis cyanophlycti)। তিনি ব্যাঙটির আকার ও জন্ম সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে গবেষণা করেন এবং বলেন এটি সম্পূর্ণ নতুন প্রজাতির ব্যাঙ।
গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে নতুন সন্ধান পাওয়া এই ব্যাঙের শরীরে মাইটোকন্ড্রিয়াল জিন ৫.৫ শতাংশের মধ্যে, প্রায় ১৮ শতাংশ ভিন্ন ব্যাঙ রয়েছে যাদের একই ধরনের জিন রয়েছে। এদের শরীরের রং ধূসর-বাদামি ও গোলাকার ছোপ ছোপ দাগের কারণে এরা দেখতেও আলাদা।
সাজিদ বলেন, নারী ব্যাঙ একদল পুরুষের সঙ্গ পছন্দ করে এবং পর্যায়ক্রমে সারা বছর পুরুষ ব্যাঙের সঙ্গে সময় কাটায়। সম্মতি পাওয়ার পরে দলবদ্ধ পুরুষ ব্যাঙ নারী ব্যাঙের সঙ্গে সময় কাটাতে প্রতিযোগিতা শুরু করে এবং প্রতিযোগিদের লাথি মেরে সরাতে পুরুষ ব্যাঙ পেছনের পা ব্যবহার করে থাকে।
বাংলাদেশের কলস গ্রামে প্রথম ১.৫ ইঞ্চি লম্বা (৩.৮ সেন্টিমিটার) এই ব্যাংঙের সন্ধান পান সাজিদ ও তার দল। তারা এর নাম রাখেন ইউফলিক্টিস কলসগ্রামেনসিস (Euphlyctis kalasgramensis)। পরবর্তী গবেষণায় তারা পান, এ প্রজাতির ব্যাঙ বিভিন্ন ধরনের পোকা, ছোট কাঁকড়া, শামুক, মাকড়শা খায়। পাশাপাশি ফসলেরও ক্ষতি করে থাকে। সাধারণত পানিতেই বসবাস করে এরা।
গবেষকরা বলেন, এই ব্যাঙের প্রধান আতঙ্ক মানুষ। কিছু মানুষ রান্না করে খাওয়ার জন্য এবং মাছ শিকারের জন্য এদের হত্যা করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৫