ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জলবায়ু ও পরিবেশ

সাপের কী ছিলো পাঁচ পা!

সানজিদা সামরিন, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৫
সাপের কী ছিলো পাঁচ পা!

সাপ! বাপরে বাপ! প্রাণিজগতে এই উভচর প্রাণীটি যেমন ভয়ঙ্কর তেমনি কৌতূহলি। টিভির পর্দায় সাপের বিশাল হা দেখে এক ঝটকায় চোখ বুজলেও সাহস করে সবাই দেখতে থাকি তার কাণ্ড কারখানা।



সম্প্রতি পাওয়া গেছে অতি প্রাচীনকালের সাপের ফসিল। এই ফসিলগুলো বিগত বছরগুলোতে পাওয়া ফসিলের তুলনায় অনেক বেশি পুরনো বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা। সাম্প্রতিক পাওয়া ফসিলগুলো ১শ’ ৪০ থেকে ১শ’ ৬৭ মিলিয়ন বছরের পুরনো। যেখানে বিগত বছরগুলোতে পাওয়া ফসিলগুলোর বয়স মাত্র ৭০ মিলিয়ন বছর।


এই ফসিলগুলো পৃথিবীতে সাপের আগমন, বসবাস ও বংশবিস্তারের পূর্ণ ধারণা দিতে পারবে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা। এখন থেকে একশ’ বছর আগে সাপেরা দেখতে কেমন ছিল তা গবেষণার জন্যই মূলত ফসিলগুলো সংগ্রহ করা হচ্ছে।

এই গবেষণা মূলত কানাডার আলবার্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত। গবেষণাটির যাবতীয় তথ্য প্রকাশিত হয়েছে সেখানকার ন্যাচার কমিউনিকেশন পত্রিকায়।



চারটি সাপের ফসিল পাওয়া গেছে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ডসায়ার ও সোয়ানেজ, যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো ও পর্তুগাল সংলগ্ন লিরিয়াতে। তবে এটি কোনো নতুন অনুসন্ধান নয়। আগে সাপকে সরীসৃপের তালিকায় ধরা হতো। ফলে পূর্বের গবেষণাগুলো সেভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। এবার সাপকে সম্পূর্ণ আলাদা একটি প্রাণী হিসেবে গবেষণা করা হচ্ছে। ফলে আগের গবেষণার তথ্যগুলোকে পরিবর্ধন করা সম্ভব বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।


যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম আইবি টাইমস ইউকে জানায়, সবচেয়ে ছোট ও প্রাচীন সাপের নাম আন্ডারওডি। লম্বায় মাত্র দশ ইঞ্চির এই সাপটির পৃথিবীতে বিচরণ ছিল এখন থেকে প্রায় ১৬৭ মিলিয়ন বছর আগে। ধারণা করা হয় যে এই সাপটি ব্যাঙাচি ও পোকামাকড়ভোজী ছিল।

এরপর পৃথিবীতে আগমন ঘটে ডিয়াব্লোফিস গিলমোরির। ১৫৫ মিলিয়ন বছর আগে কলোরাডোতে এর বসবাস ছিল। এর পরবর্তী সময়ের সবচেয়ে বড় সাপের যে ফসিলটি পাওয়া যায় তা হলো পর্তুগালোফিস। এ  সময়ের সাপগুলোর আকার লম্বায় চার ফুটর মত হয়।


বর্তমান সময়ের সাপের সঙ্গে আদিকালের সাপের সাদৃশ্যের মধ্যে রয়েছে দাঁতের আকার ও গড়ন। কিন্তু তাদের বাহ্যিক গঠন এখনো অজ্ঞাত।

আগে সাপের পা ছিল কি নেই তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তবে এই গবেষণাটির মাধ্যমে জানা যাবে কি করে সাপেরা তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের পরিবর্তন সাধন করেছে।

আলবার্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যক্ষ ড. মাইকেল কাল্ডওয়েল মেইল অনলাইন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, জিনগত কারণে সাপের পায়ের বিলুপ্তি হতে পারে।

তিনি আরও বলেন ১শ’ মিলিয়ন বছরের পুরনো সাপেরও পেছনের পা ছিল। তবে তা কেন হঠাৎই বিলুপ্ত হয়ে গেল কে জানে!

তবে জানা যায়, এখন থেকে ১৬৭ বা ১০০ মিলিয়ন বছর আগে সাপের আকার এখনকার চেয়ে বেশি লম্বা ছিল ও তখন তাদের পা ছিল না।

তবে পৃথিবীতে ঠিক কোন সময়টাতে সাপের আগমন ঘটে ও ঠিক কেমন আকৃতি নিয়ে তারা এসেছিল তা আজও গবেষকদের কাছে ধোঁয়াটে।

বাংলাদেশ সময়: ০১২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।