ঢাকা: হিমালয়ে প্রতি বছর শত শত পর্বতারোহীর ভিড় জমে। অনেকে গড়েন ইতিহাস, আবার অনেকে হারিয়ে যান শ্রভ্র বরফতলে।
কিন্তু স্বয়ং হুমকির মুখে এখন সেই এভারেস্ট। পর্বতারোহীদের ফেলে আসা বর্জ্যই এখন হুমকি হিমালয়ের জন্য।
নেপালের পর্বতারোহণ সমিতির সভাপতি অ্যাং শেরিং শেরপা গত মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যকে জানান, হিমালয়ে ফেলে আসা অভিযাত্রীদের এসব আবর্জনায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সংশ্লিষ্ট এলাকার পরিবেশ। একই সঙ্গে ছড়াচ্ছে রোগ ব্যাধি।
প্রতিটি সেশনে কম করে হলেও সাতশোর অধিক পর্বতারোহী ও পথনির্দেশক হিমালয়ের ঢালু এলাকায় অবস্থান করেন। ফলে তাদের মলমূত্র, খাবারের উচ্ছিষ্ট, বেভারেজ প্রভৃতিতে ভরে থাকে পুরো এলাকাটিই।
তিনি জানান, নেপাল সরকারকে হিমালয়ের পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। চলতি সপ্তাহ থেকে শুরু করে মে মাস পর্যন্ত চলবে নেপালের পর্বতারোহণ কাল। গত বছর এপ্রিলে হিমানী সম্প্রপাতে স্থানীয় ১৬ জন পথনির্দেশকের মৃত্যুর কারণে গত বছর এই কার্যক্রম ব্যাহত হয়।
এই সময়টাতে পর্বতারোহীদের চারটি ক্যাম্প অর্থাৎ সাড়ে সতেরো হাজার ফুট ও ঊনত্রিশ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত মূল দু’টি ক্যাম্পের আশপাশেই অবস্থান করে। তাদের কাছে মূলত তাবু ও খুব প্রয়োজনীয় কিছু উপকরণ ও সরঞ্জামাদি ছাড়া কিছু থাকে না।
ফলে টয়লেটের সুব্যবস্থা নেই বলে এসব এলাকা সহজেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অ্যাং শেরিং শেরপা আরও জানান- সাধারণত তারা বরফের গায়ে বড় গর্ত তৈরি করে সেখানে আবর্জনা ফেলে। মূল ক্যাম্পে উৎপন্ন হয় আরও আবর্জনা। এসব রান্নার আবর্জনা ও ড্রাম সংযুক্ত টয়লেট তাবুতে জমা আবর্জনা এক সময় নিচু এলাকায় নিয়ে এসে জমা করা হয়।
দাওয়া স্টিফেন শেরপা ২০০৮ সাল থেকে হিমালয় পরিষ্কার অভিযানের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি জানান, অনেকেই ট্রাভেল টয়লেট ব্যাগ ব্যবহার করেন ও এখানেই সেগুলোকে ফেলে যান। ফলে এটি স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক। যার যথাপোযুক্ত সুরাহা করা প্রয়োজন।
নেপাল সরকারের পর্বতারোহণ বিভাগের প্রধান পুষ্পা রাজ কতোয়াল জানান, এই সেশনের শুরু থেকেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মূল ক্যাম্পের আবর্জনার বিষয়টি কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। সরকারের নতুন নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক পর্বোতারোহী বেস ক্যাম্পে আট কেজির মত আবর্জনা রাখতে পারবে।
আর এই নিয়মের ব্যতিক্রম হলে তাদের চার হাজার ডলার সরকারের কাছে জমা দিতে হবে বলেও জানান তিনি।
২০১৩ সালে নেপাল ও ভারতের সেনাবাহিনী কর্মকর্তাদের উদ্যোগে ৯ এপ্রিলে শুরু করা যৌথ অভিযানে হিমালয়ের চূড়া থেকে যাত্রাপথে প্রায় চার হাজার কেজি আবর্জনা সংগ্রহ করা হয় বলে জানা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০১৫