ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

ঝরা পাতার কান্না!

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, স্পেশালিস্ট এনভায়রনমেন্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৫
ঝরা পাতার কান্না! বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন / ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শ্রীমঙ্গল: রবীন্দ্রনাথ আপেক্ষ করে একটি গানে বলেছেন- ‌‌‘ঝরাপাতা গো আমি তোমারই দলে’। প্রকৃতিকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন বলেই হয়তো কবি সেদিন শুনতে পেয়েছিলেন ঝরা পাতার কান্না, জানিয়েছিলেন সমবেদনা।



ধরায় এসেছে বসন্ত। কচি কিশলয়ের দ্যুতি প্রকৃতিতে। বিদায় প্রবীণ! বিদায় শুকনো ঝরা পাতা! ফুরিয়েছে প্রয়োজন তাদের। এখন প্রাণহীন তারা। পড়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে বাংলার পথে-প্রান্তরে। পায়ের চিহ্ন তাদের উপর পড়তেই সম্মিলিতভাবে তোলে বিষণ্ন মর্মর ধ্বনি। যেন কাঁদছে, হাহাকার ধ্বনি তুলছে বাঁচাও বলে! কিন্তু বাঁচবে কি করে! তারা তো এখন প্রাণহীন!

প্রকৃতি এখন নতুন সাজে সাজবে বলে আমাদের চারপাশে এক প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে যেন। প্রতিটি গাছে গাছে পাঠিয়ে দিয়েছে প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী। কার আগে কে সেজে উঠতে পারে! প্রকৃতির এই প্রতিযোগিতায় স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া দিয়েছে প্রতিটি ছোট বড় বৃক্ষই। প্রতিটি গাছ তাদের প্রবীণ-জরাজীর্ণ-কর্মহীন শুকনো পাতাদের ডাল থেকে বিতাড়িত করেছে।

এই ঝরাপাতারাই একদিন চিরসবুজ ছিল; ছিল গাছটিকে বাঁচিয়ে রাখার ক্ষেত্রে অসীম কর্তব্যপরায়ণ ও নিবেদিতপ্রাণ। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে পাতাগুলো যেই বয়োবৃদ্ধ হয়ে পড়েছে, গাছ তাদের অমনি গলাধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে মাটিতে! এটাই প্রকৃতির এক আশ্চর্য নিয়ম। নতুনদের জন্য এভাবেই ছেড়ে দিতে হবে স্থান।

সেই ঝরাপাতাদের ক্রন্দনে মুখর চারপাশ। আমাদের চারপাশে তাদের দেখে বড় মায়া হয়, বেদনা জাগে। কেননা ওরাই যে ছিল একদিন নবীন, চিরদ্যুতিময়। মানুষও একদিন এমন ঝরাপাতা হয়ে যায়! সংসার-সমাজ তখন হয়তো ঝরাপাতাদের মতোই বসবাসরত ঠিকানা থেকে দূরে ঠেলে দেবে। হয়তো এটাই পৃথিবীর অনিবার্য সত্যের স্বাভাবিক আসন্ন আহ্বান।

তবু কি ফুরোয় ঝরা পাতার প্রয়োজন?

বাংলাদেশ সময়: ০০৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।