শ্রীমঙ্গল: ছলনা, প্রতারণা অথবা ছদ্মবেশ ধারণ- এ শব্দগুলো শুধু মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। প্রাণীরাও ধারণ করে ছদ্মবেশ।
এমন কিছু ছদ্মবেশী মাছ রয়েছে। এদের বলা হয় Camouflage Fish। সমুদ্রের তলদেশে থাকে। ছদ্মবেশী হয়ে শিকারে পরিণত হওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে এরা। শুধু তা-ই নয়, শিকার করার বিশেষ এক কৌশল হিসেবে ওরা এভাবে ছদ্মবেশ ধারণ করে।
ওরা যেখানে চুপটি করে বসে থাকে এর চারপাশ শরীরের রঙের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার। ফলে পাশ দিয়ে চলে যাওয়া অন্য প্রাণীরা বুঝতেই পারে না যে এটি একটি প্রাণী।
খুব ভালো করে না দেখলে ধরার কোনো উপায় নেই যে এখানে একটি ছদ্মবেশী মাছ বসে রয়েছে। ফলে হয় সে এই ছদ্মবেশি মাছের শিকার হয়; নয়তো অন্য কোনো ঘাতক প্রাণির হাত থেকে ছদ্মবেশী মাছটি নিজে রক্ষা করতে পারে।
এরা সমুদ্রের নিচের প্রবাল, আগাছা প্রভৃতির সঙ্গে ভালোভাবে জড়িয়ে থাকে এবং সেগুলো সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে। নিশ্চুপ হয়ে ঢেউয়ের তালে তালে দুলতে থাকে। এভাবেই অন্য মাছ বা প্রাণীকে ধোঁকা দেয়। ওদের শরীরে রয়েছে রং পাল্টানোর আশ্চর্য এক ক্ষমতা। প্রয়োজনে ওরা নিজের শরীরের রং হলুদ, সবুজ, লাল, সাদা কিংবা লুকানো স্থানের রঙের সঙ্গে সহজে মিলিয়ে নিতে পারে।
সাগরতলার ছদ্মবেশী বা ক্যামোফ্লেজ একটি মাছের নাম হলো পাথুরে মাছ বা Stonefish। এই জাতীয় মাছ পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত মাছ বলে পরিচিত। দেখলে মনে হয় অনেকটা আর্মি ম্যান। অর্থাৎ, সেনাবাহিনীর সদস্যদের মতো পোশাক পরে রয়েছে। তাদের দৈহিক গঠন, রং ও স্বভাব চরিত্রের জন্যই এমন নামকরণ করা হয়েছে।
পাথুরে মাছের কিছু কিছু প্রজাতি নদীতে বাস করলেও মূলত এরা ফ্লোরিডা, ক্যারিবিয়ান ও ইন্দো-প্যাসিফিক উপকূলীয় অঞ্চলে বাস করে। এরা সর্বোচ্চ ৩৫ সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে থাকে। এমন ক্ষুদ্র গড়ন এবং ধূসর ও বৈচিত্র্যময় রঙের কারণে এরা খুব সহজেই পাথরের সঙ্গে দেহকে মিশিয়ে রাখতে পারে।
পাথুরে মাছ চিংড়ি আর ছোট ছোট মাছ খেয়েই এরা জীবনধারণ করে। পিঠের উপরে ১৩ টা বিষাক্ত কাঁটা রয়েছে। যা এদেরকে বড় মাছের হাত থেকে রক্ষা করে। এরা আঘাত করলে সাময়িকভাবে ক্ষতস্থানটি অচেতন বা প্যারালাইজড হয়ে যায়। আর চিকিৎসা না করলে মৃত্যুও হতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১৫