রাজশাহী: রাজশাহীর শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা থেকে নেট দিয়ে ঘেরা খাঁচার ফাঁক গলিয়ে পালিয়ে গেছে অজগর সাপ। গত ২৪ এপ্রিল থেকে অজগরটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও রাসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার মাহবুবুর রহমানকে প্রধান করে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- চিড়িয়াখানার ভেটেরিনারি সার্জন ডা. ফরহাদ উদ্দিন ও সুপারভাইজার আবদুল খালেক স্বপন। সময় উল্লেখ না করা হলেও কমিটিকে শিগগিরই এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে, সাপটি খুঁজে না পাওয়ায় চিড়িয়াখানার দর্শনার্থী ও আশপাশের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাওয়ায় দর্শনার্থীও কমতে শুরু করেছে। কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা দর্শনে গিয়ে অজগর বেরিয়ে যাওয়ার খবরে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। তবে অজগরটি উদ্ধারে চিড়িয়াখানা ও আশপাশের এলাকায় তল্লাশি অব্যাহত রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) সকালে চিড়িখানায় বেড়াতে যাওয়া পবা উপজেলার পিল্লাপাড়া এলাকার ফজলুল করিম বাবলু বাংলানিউজকে জানান, ছয় বছরের ছেলে ফরহাদের আবদারে এখানে এসেছিলেন। কিন্তু লোক মুখে অজগর বেরিয়ে যাওয়ার কথা শুনে আবার চলে যাচ্ছেন। সংরক্ষিত একটি স্থান এমন কাণ্ডে বিব্রত উল্লেখ করে তিনি এ ধরনের ঘটনার জন্য চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা ও অবহেলাকেই দায়ী করেন।
চিড়িয়াখানার সুপারভাইজার আবদুল খালেক স্বপন জানান, দু’মাস আগে অজগরটি নওগাঁয় ধরা পড়ে। পরে বিভাগীয় বনবিভাগ তাদের কাছে অজগরটি হস্তান্তর করে। এর আগেও তিনবার খাঁচা থেকে অজগরটি বেরিয়ে পড়ে। কিন্তু অনেক খোঁজাখুঁজি করে চিড়িয়াখানার মধ্যেই পাওয়া যায়।
তিনি দাবি করে বলেন, সাপটি চিড়িয়াখানার মধ্যেই আছে। খোঁজ চলছে, শিগগিরই উদ্ধার করা সম্ভব হবে। কেউ সন্ধান পেলে আতঙ্কিত না হয়ে চিড়িয়াখানায় খবর দেওয়ার অনুরোধ করেন। তবে, চিড়িয়াখানার দীর্ঘদিনের জরাজীর্ণ খাঁচাগুলো মরিচা পড়ে নষ্ট এবং ফুটো হয়ে যাওয়ার পরও কেন সংস্কার করা হয়নি- এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি সুপারভাইজার আবদুল খালেক স্বপন।
এছাড়া, ঘটনার পর চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলেও অজগর প্রশ্নে মুখ খুলছেন না কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং রাসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার মাহবুবুর রহমান।
দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আজাহার আলী বলেন, ‘খাঁচাগুলো নতুনভাবে অন্যত্র শিফট করা হবে। এজন্য সংষ্কার করা হয়নি। তবে কোথাও ফুটো ছিল না। অজগরটি নিজেই কামড়ে ফুটো করে বেরিয়ে গেছে। এর আগে ইঁদুরের গর্ত দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল। পরে সিমেন্ট দিয়ে সেই ফুটো বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেইবার ভেতরেই পাওয়া যায় অজগরটি। ’
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় প্রথমে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। আজ তা বর্ধিত করে ১০ সদস্যের করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদনে কারও দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া, অজগরটি খুঁজে বের করার কাজও চলছে। চিড়িয়াখানার কর্মচারীরা সতর্ক রয়েছেন। এজন্য আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৫
এসএস/এইচএ/