ব্রাহ্মণবাড়িয়া: জোঁকের উপদ্রবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়নের ৩৮০ হেক্টর জমির বোরো ধান কাটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। জোঁক সমস্যা এতোটাই বেড়েছে যে অনেকের ক্ষেতের পাকা ধান জমিতেই ঝড়ে পড়ছে।
জোঁক আতঙ্কে ধান কাটা শ্রমিকরাও জমিতে নামতে চাইছে না। ফলে বিপাকে পড়েছেন অন্তত আট/১০ গ্রামের কৃষক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শাহজাদাপুর ইউনিয়নের দেওড়া, মলাইশ, নিয়ামতপুর, গাজীপুর ও ধাউরিয়াসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের জমিতে অসংখ্য জোঁক থাকায় কৃষকরা তাদের পাকা ধান কাটা নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন।
স্থানীয়রা কৃষকরা জানান, জমিতে জোঁক কিলবিল করছে। শ্রমিকরা ধান কাটতে নামলেই জোঁকগুলো দুই পা বেয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানের রক্ত চুষে নেয়। এ থেকে রক্ষা পেতে তারা কৃষি কার্যালয় কর্তৃক সরবরাহকৃত লবণ-চুন আর স্থানীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন। কিন্তু কোনোভাবেই জোঁকের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না তারা। বেশি টাকা দিয়েও শ্রমিকদের জমিতে নামানো যাচ্ছে না।
মলাইশ গ্রামের কৃষক মোছা মিয়া বলেন, শ্রমিক না পেয়ে আমরা দুই পা’য়ে পলিথিন মুড়িয়ে ধান কাটতে জমিতে নেমেছি।
নিয়ামতপুর গ্রামের কৃষক আসমত আলী বলেন, গেল বছর ধান কাটা শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ছিল চারশ’ টাকা। এবার জোঁকের সমস্যায় ছয়শ’ টাকায়ও মিলছে না শ্রমিক। এলাকার জমিগুলোতে জোঁক থাকার খবর শুনে শ্রমিকরাও এই এলাকায় আসতে চান না। ফলে পাকা ধান কাটা নিয়ে আমরা আছি বিপাকে।
বিল ও হাওড়ের খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় ক্ষেতে পানি জমে গেছে। ফলে জমিতে জোঁকের প্রকোপ দেখা দিয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
এ বিষয়ে সরাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাধন মজুমদার বলেন, শাহজাদাপুরে জোঁকের প্রকোপ একটু বেশি। সেখানকার কৃষকদের জোঁকের আক্রমণ থেকে বাঁচতে গামবুট পরে বা পায়ে পলিথিন জড়িয়ে ধান কাটার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সরাইলের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মুজিবুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষি অফিসের দেওয়া পরামর্শই কৃষকদের কাজে লাগানো উচিত। জোঁকের হাত থেকে রক্ষা পেতে আপাতত এছাড়া আর কোনো বিকল্প পদ্ধতি নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০১৫
এসআই