বদরগঞ্জ (রংপুর): অনেক আশা নিয়ে মধুপুর বোর্ড ঘরের কৃষক বাদশা মিয়া গ্রিন বাংলাদেশ ও স্বনির্ভর বাংলাদেশ নামে কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে ২৫০/৫০০টাকা দরে প্রতিটি পাম চারা ক্রয় করেন। সে সময় তারা প্রতিশ্রুতি দেন পরিণত গাছের পাম ফল ক্রয় করবেন তারা।
স্বপ্ন পূরণের প্রত্যয়ে ৫/৬ বছর আগে কৃষক বাদশা মিয়া ৭০ শতাংশ জমিতে ৬৪টি পাম গাছ রোপন করেন। চারা রোপনের দুই বছরের মধ্যেই গুচ্ছাকারে কালো ফল আসতে শুরু করে। কিছুদিন পর তিনি লক্ষ্য করেন ফলগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলছে পরের বছরগুলো।
একদিকে ফল-ফল শুকিয়ে যাওয়া অন্যদিকে পাম ফল নিয়ে তিনি কি করবেন -এজন্য গ্রিন বাংলাদেশ ও স্বনির্ভর বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন তিনি। বারবার যোগাযোগেও তাদের সাড়া মেলেনি। তাই মনের দুঃখে জমির চারপাশের সীমানা ঘেঁষে পাম গাছ রেখে বাকিগুলো কেটে ফেলেন।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, পাম চাষ না করে যদি আমের বাগান করতাম তাহলে এ কয় বছরে লাখ টাকা আয় করতে পারতাম।
সরেজমিনে উপজেলার কাঁচাবাড়ি, মীরাপাড়া পৌরশহরের ফেচ্কি পাড়া , কাশীগঞ্জ এলাকার পাম বাগান ঘুরে দেখা গেছে কমবেশি সব পামচাষি পাম বাগান তুলে ফেলেছেন।
কথা হয় কাশীগঞ্জের পাম চাষি সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, পাম গাছের চারা নেওয়ার সময় কোম্পানির লোকজন অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো, ফল শুকিয়ে যেতে দেখে তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও যখন পাইনি তখন উপজেলা কৃষি অফিসের স্মরণাপন্ন হই। কৃষি অফিসের পরামর্শে ওকোজিম নামে ওষুধ দিয়েও কাজ না হলে মনের দুঃখে বাগান তুলে ফেলি।
এ বিষয়ে গ্রিন বাংলাদেশের এরিয়া ম্যানেজার আব্দুর রফিকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কোম্পানি আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, আপনারা কাজ করে যান, কোন সমস্যা হবে না। একপর্যায়ে কোম্পানি আমাদের বেতন-ভাতা বন্ধ করে দেয়। তখন আমি চাকরি ছেড়ে দেই।
পাম চাষিদের এখন কি হবে -এমন প্রশ্নে দুঃখিত বলে ফোন রেখে দেন তিনি।
উপজেলা সহকারী কৃষি-কর্মকর্তা কনক চন্দ্র রায় জানান, পাম গাছটি দেশীয় কোনো গাছ নয়। এটি আমাদের দেশের উপযোগীও নয়। অনেক এনজিও কৃষকদের মধ্যে পামগাছের চারা সরবরাহ করেছিল। কৃষকরা আশা নিয়ে বাগান গড়েছিলেন। কিন্তু তাদের আশায় গুড়েবালি।
পাম গাছের বাগান তুলে দেশীয় প্রজাতির ফলের বাগান করলে কৃষকরা বেশি লাভবান হবেন বলে জানান কনক চন্দ্র।
বাংলাদেশ সময়: ০৪২০ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৫
এমজেড