ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

জলবায়ু ও পরিবেশ

লালবাগ কেল্লায় কার পার্কিং নির্মাণ বন্ধের দাবি

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫০ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৫
লালবাগ কেল্লায় কার পার্কিং নির্মাণ বন্ধের দাবি ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: দেশের অন্যতম প্রধান প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন মুঘল স্থাপত্য লালবাগ কেল্লার দেয়াল ভেঙে ভেতরে কার পার্কিং নির্মাণের কাজ বন্ধের দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন। একইসঙ্গে ঐতিহ্যের ধারক লালবাগ কেল্লার প্রাচীর পুনর্নির্মাণ করে এটিকে আগের আদলে ফিরিয়ে আনারও দাবি জানিয়েছে তারা।



শনিবার (২৭ জুন) সকালে লালবাগ কেল্লার সামনে মানববন্ধন করে এ দাবি জানায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) সহ ১৬টি সংগঠন।

মানববন্ধনে সংগঠনগুলোর নেতারা বলেন, লালবাগ কেল্লা অবৈধ দখলের খপ্পরে পড়েছে। কেল্লার দেয়াল ভেঙে ভেতরে কার পার্কিংয়ের জায়গা করা হচ্ছে। যা প্রত্ন আইনের পরিপন্থি। দেশের প্রত্নসম্পদ সংরক্ষণে সরকারের আর্থিক দৈন্যতার অজুহাত থাকলেও লালবাগের মতো স্থাপত্য ধ্বংসে খুব সহজেই টাকার বরাদ্দ মিলেছে। আমাদের ঐতিহ্যের ধারক লালবাগ কেল্লার প্রাচীর পুনর্নির্মাণ ও কেল্লার ভেতরের নির্মাণ কাজ অনতিবিলম্বে বন্ধ করে আগের আদলে ফিরিয়ে আনতে হবে।

তারা বলেন, ৩০০ বছরের পুরনো মুঘল কীর্তি লালবাগ কেল্লার মহিমা বিনষ্ট করে প্রাচীর ভেঙে কেল্লার ভেতরে পার্কিং অবকাঠামো নির্মাণ করা জাতির জন্য লজ্জাজনক। খোদ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর পুরাকীর্তি বিনষ্টের এই দায়িত্ব নিয়েছে। বিদেশি পর্যটকদের গাড়ি পার্কিংয়ের কথা বলে কর্তৃপক্ষ একটি বিশেষ গোষ্ঠীর ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষা করছে। অথচ বিদেশি পর্যটকেরা বরং অধিক ঐতিহ্য সচেতন। তারা দূর পথও পায়ে হেঁটে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন দেখতে মনস্তাত্ত্বিকভাবে প্রস্তুত থাকে। সারা দুনিয়াতে যেখানে প্রত্নতত্ত্ব সম্পদ সংরক্ষণে মূল নকশাকেই  সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়া হয়। সেখানে লালবাগের কেল্লার ভেতরে অবকাঠামো নির্মাণ করে মূল নকশার পরিবর্তন ঘটানো হচ্ছে। যা ১৯৬৮ পুরাকীর্তি আইনের পরিপন্থি। পার্কিংয়ের মাধ্যমে গাড়ির শব্দ ও ধোঁয়ার দূষণে এই প্রত্ননিদর্শনের বরং ক্ষতিই বয়ে আনবে। এই কার পার্কিং সুবিধা তৈরি করে দেওয়ার মাধ্যমে এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হবে।

বক্তারা অভিযোগ করেন, লালবাগ কেল্লার চারপাশের সব অবৈধ স্থাপনা অপসারণে হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টের নির্দেশনার বাস্তবায়ন না করে স্বার্থান্বেষী মহলের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে মুছে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

দেশের ঐতিহ্য রক্ষার স্বার্থে অবিলম্বে এই আত্মঘাতী কার্যক্রম বন্ধ করার দাবি জানানো হয় মানববন্ধনে।   সেইসঙ্গে লালবাগ কেল্লার মহিমা রক্ষায় কেল্লার প্রাচীর আগের আদলে পুনর্নির্মাণ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে যারা পরিকল্পিতভাবে লালবাগ কেল্লা বিনিষ্টের সঙ্গে জড়িত তাদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। দাবি মানা না হলে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণাও দেওয়া হয় মানববন্ধনে।

পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে ও সমন্বয়কারী আতিক মোরশেদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিদুল হক খান, যুগ্ম-সম্পাদক আলমগীর কবির, বিআইপির যুগ্ম-সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম, গ্রিন মাইন্ড সোসাইটির সভাপতি আমির হোসেন, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট’র ন্যাশনাল অ্যাডভোকেসি অফিসার মারুফ হোসেন, প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর আমিনুল ইসলাম সুজন, স্থপতি সাজ্জাদুর রশিদ, পবার সহ-সম্পাদক নজরুল ইসলাম, মো. সেলিম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাজী আলেয়া পারভীন রনজু, পিসের মহাসচিব ইফমা হুসাইন, দেবীদাস ঘাট সমাজ কল্যাণ সংসদের সভাপতি মো. মুসা, ইন্টারন্যাশনাল ট্যুরিজম স্টুডেন্টস কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট মো. আশিকুর রহমান অভি, পরিবেশ উন্নয়ন সোসাইটির সভাপতি বুরহান উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৫
এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।