ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

সাগর পেরুনো নাবিক মাকড়শা ‘এরাকনোফোবস’

পরিবেশ-জীববৈচিত্র্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ৩, ২০১৫
সাগর পেরুনো নাবিক মাকড়শা ‘এরাকনোফোবস’

ঢাকা: এরাকনোফোবস শব্দটির উৎপত্তি গ্রিক শব্দ থেকে। এরাকেন অর্থ মাকড়শা আর ফোবস অর্থ ভয়।

বাংলায় ভয়ঙ্কর মাকড়শা বললে বোধ হয় ভুল হবে না।

কেবল নামেই ভয়ঙ্কর নয়, এদের কর্মকাণ্ডও ভয়ঙ্কর। কিছু মাকড়শা তাদের পা নৌকা ও জাল বৈঠা হিসেবে ব্যবহার করে পানিতেও চলতে পারে, এরাকেনোফোবস তাদের মধ্যে একটি।

বিশেষজ্ঞদের কাছে এর মাধ্যমেই পরিষ্কার হয় কিছু কিছু প্রজাতির মাকড়শা কীভাবে সাগরের উপর দিয়ে দীর্ঘ পথ প‍ার হয়ে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যায়।

এটা অনেকেরই জানা মাকড়শা উড়তে পারে। বাতাসে জাল ছুড়ে উড়ে তারা একদিনে ১৮ মাইল পর্যন্ত যেতে পারে। বাতাসে উড়ার সময় তারা শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে না বলে বারবার পানিতে নামতে হয়। দুই শ্রেণীর মাকড়শা খোঁজ পাওয়া যায়, যাদের একটি পানিতে থেকে দিক নির্ধারণ করে কাঙ্ক্ষিত জায়গায় যেতে পারে।

অন্যটি তাদের পা নৌকার মতো ব্যবহার করে বাতাসে জাল ছুড়ে বৈঠার মতো ব্যবহার করে ঢেউ পার হয়ে ঠিক চলে যায় এবং দিক নির্ধারণ করে বাতাস থেকেই। ক্লান্ত হয়ে গেলে এরা জালের সাহায্যেই কোনো একটা পাথরে নেমে বিশ্রাম নেয়।

মাকড়শা কেন এত দীর্ঘ পথ পার হয়ে অন্য অঞ্চলে বা বিচ্ছিন্ন দ্বীপে যায়? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে গবেষকরা দেখেন, বংশ বিস্তার, অতি বৃষ্টি এবং খাদ্য স্বল্পতা থেকে বাঁচতে এরা সাগর পার হয়ে এক দেশ থেকে অন্য দেশে, কখনও কখনও বিচ্ছিন্ন দ্বীপে চলে যায়।

গবেষণাটিতে নেতৃত্ব দেন দ্য ন্যাচরাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের গবেষক মোরিটো হায়াসি বলেন, জালের সাহায্যে বাতাসে শরীর ভাসিয়ে এবং ঢেউয়ের উপর লাফিয়ে মাকড়শা দীর্ঘ পথ চলে যেতে পারে। এরা ধ্বংসাত্মক মানসিকতারও বটে, কারণ যখন মাকড়শা বাতাসে ভাসে তখন শরীরের উপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না এদের। কিন্তু তারপরও এরা ঝুঁকি নেয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা এমন মাকড়শার সন্ধানও পেয়েছি যারা পানিতে থেকেই দিক নির্ধারণ করতে পারে। প্রয়োজন মতো এরা পানিতে জাল ফেলে গতিও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

গবেষকরা ইংল্যান্ডের নটিংহামসিয়ারের একটি ছোট দ্বীপ থেকে ৩২৫ প্রজাতির প্রাপ্তবয়স্ক মাকড়শা সংগ্রহ করেন এবং পানির ভেতর ফেলে তাদের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করেন। প্রতিবারই আলাদা আলাদা পরিস্থিতিতে ফেলা হয় এদের।

গবেষণা সহযোগী দ্য ইউনিভার্সিটি অব নটিংহামের গবেষক সারা গুডক্রি বলেন, যেসব মাকড়শা পানিতে ভেসে থাকতে পারে তাদের জন্য দীর্ঘপথ নাবিকের মতো চলা খুব কঠিন কাজ না।

এসব মকড়শাদের আরেকটি বুজরুকি ক্ষমতা আবিষ্কার করেন গবেষকরা। ইংরেজিতে একে বলা হচ্ছে ‘ডেথ মিমিক্রি’। সাধারণত ৠাফট মাকড়শার এ ধরনের ধ্বংসাত্মক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এরা পানিতে ৬০ সেকেন্ডের কিছু বেশি সময়ে বেঁচে থাকতে পারে।

এর আগে ৠাফট মাকড়শাদের নেভিগেশনের ক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা ছিল না গবেষকদের।

সম্প্রতি একটি জার্নালে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০১৫
এটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।