ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জলবায়ু ও পরিবেশ

রাতারগুল রক্ষায় বাপার নৌসভা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৫
রাতারগুল রক্ষায় বাপার নৌসভা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সিলেট: সুয়াম্প ফরেস্ট ‘রাতারগুল’ রক্ষায় অভিনব নৌসভা করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)।

শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিলেটের রাতারগুল গ্রামসংলগ্ন রাতারগুল জলারবন পরিদর্শন শেষে এ নৌ-সভা অনুষ্ঠিত হয়।



নৌ-সভা আয়োজনে বাপা’কে সহযোগিতা করে ভূমিসন্তান বাংলাদেশ ও স্থানীয় এলাকাবাসী।

নৌ-সভায় বক্তারা বলেন,  “মাত্র তিন থেকে চার বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশের অন্যতম মিঠাপানির জলারবন ‘রাতারগুল’ তার নিজস্ব বৈশিষ্ঠ্য হারাতে বসেছে। এ জন্য বনবিভাগের অপরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দায়ী। তারা এই বনের ধ্বংস তরান্বিত করেছে। ”

বিশিষ্টজনেরা অবিলম্বে বন বিধ্বংসী প্রকল্প বাতিল করে বিশেষজ্ঞ পরামর্শের ভিত্তিতে এবং যুগোপযোগি বিজ্ঞানসম্মত পরিকল্পনা গ্রহণ করে এই বনের স্বকীয়তা রক্ষায় উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান।

অ্যাডভোকেট সুলতানা কামামের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কাজী খলিকুজ্জমান বলেন, “রাতারগুল সম্পর্কে আমরা অনেক শুনেছি, আজ নিজ চোখে দেখলাম। রাতারগুলে বনবিরোধী কর্মকাণ্ড দেখে আমরা বিস্মিত হয়েছি। অবিলম্বে রাতারগুলকে সংরক্ষণের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহবান জানাচ্ছি। ”

বিশেষজ্ঞদের মতামত না নিয়ে বন বিভাগের এমন কাজের কঠোর সমালেচনা করেন তিনি।

অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, “রাতারগুলে আমি এর আগেও এসেছি। আগে এখানে অনেক বন্যপ্রাণী দেখা গেলেও আজকে কোনো বন্যপ্রাণীর চিহ্ন দেখা যায়নি। এটি একটি বিশেষ ধরণের বন। এখানে সংরক্ষনের নামে বনবিভাগ নির্মিত ওয়াচ টাওয়ার এই বনের বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও দৃষ্টিকটু। ”
 
তিনি বলেন, “এখানে অপরিকল্পিত উন্নয়ন ও সংরক্ষণের নামে যা করা হচ্ছে, তা এই বনের ধ্বংসকে তরান্বিত করেছে। পর্যটন নয়, রাতারগুলকে শিক্ষা ও গবেষণার প্রয়োজনে ব্যবহার করা যেতে পারে। ”

সভায় বক্তব্য রাখেন বাপা’র সহ সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল, গোয়াইনঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম।

শরীফ জামিল ২০১২ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত রাতারগুল সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকাণ্ড সভায় তুলে ধরে বলেন, “পরিবেশবাদী ব্যক্তি ও সংগঠনের পাশাপাশি স্থানীয় জনসাধারণ ও সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞান ভিত্তিক জ্ঞানের সমন্বয়ে একটি সুচিন্তিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এটি সংরক্ষণ প্রয়োজন। ”

এ সময় তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, মানবাধিকার ও পরিবেশ কর্মী খুশি কবীর, বেলা’র নির্বাহী পরিচালক রেজওয়ানা হাসান, শাবিপ্রবি’র ফরেষ্ট্রি বিভাগের প্রধান ড. নারায়ণ সাহা, নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. নাজিয়া চৌধুরী, নর্থইষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভারমেন্ট সাইন্স বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. এম মজিদ, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এমাদ উল্লাহ শাহিদুল ইসলাম শাহিন, বাপা’ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম, বাপা’র আদিবাসী পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সিলেট বিভাগীয় আঞ্চলিক সমন্বয়ক ফাদার জোসেফ গোমেজ, পরিবেশবাদী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ভূমিসন্তান বাংলাদেশ’র সমন্বয়ক আশরাফুল কবীর, বাপা হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেলসহ সিলেটের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।

বাপা’র সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন জানান, এই সফর শেষে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে রাতারগুল রক্ষায় করণীয় নির্ধারণ করে একটি প্রতিবেদন সরকারের কাছে প্রস্তাব করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৫
এনইউ/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।