ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

বাদামি কাঠবিড়ালি ও তার সন্তানেরা

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, এনভায়রনমেন্ট স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০১৫
বাদামি কাঠবিড়ালি ও তার সন্তানেরা ছবি: সৈয়দ আব্বাছ/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার): মানুষের মধ্যে যেমন, তেমনি পশু-পাখিদের মধ্যেও রয়েছে মাতৃস্নেহ। আমরা যেমন কেউই বঞ্চিত হইনি আমাদের মায়ের স্নেহ-মমতা থেকে, ঠিক সেভাবেই তারাও তাদের প্রিয় গর্ভজাত সন্তানদের জড়িয়ে রাখে মমতার পরম বন্ধনে।

মাতৃস্নেহের অসামান্য পরশে আমার যেভাবে বাঁচে থাকার প্রেরণা পাই, তাদের বেলাও তার ব্যতিক্রম ঘটে না।

প্রকৃতির এসব বিরল দৃশ্য বেশির ভাগ সময়ই আমাদের চোখ এড়িয়ে যায়। আমরা কখনো কখনো হয়তো মুখোমুখি হতে পারি এমন দুয়েকটি বিরল দৃশ্যের।

বাদামি কাঠবিড়ালি তার সন্তানদের পরম মমতার বন্ধনে বেঁধে রেখেছিল। গাছের ডালে বসেই তার সন্তানদের মাতৃদুগ্ধ পান করাচ্ছিল। তাদের সম্মতি দিয়েছিল গাছের ডালে ডালে ছোটাছুটি করার।  

বাদামি কাঠবিড়ালির সেই সন্তানরা এতো দিনে নিশ্চয়ই পূর্ণ বয়স্ক কাঠবিড়ালি হয়ে গেছে। তারাও নতুন মাতৃত্বের স্বাদ নিয়ে তাদের মাতৃস্নেহ ছড়িয়ে দেবে সন্তানদের।   

সন্তানগুলো মায়ের দিকে যখনই তাদের ক্ষুধার্ত মুখ তুলে দিয়েছে কাঠবিড়ালি মা অনায়াসে তার দুধ পান করিয়েছে সন্তানদের। এক সন্তান কিছুক্ষণ টেনে যাবার পর পরবর্তী সন্তান আবার এসে মুখ গুজেছিল মাতৃদুগ্ধে।  

কাঠবিড়ালি বৃক্ষবাসী স্তন্যপায়ী প্রাণী। এ বাদামি কাঠবিড়ালির ইংরেজি নাম Irrawaddy Squirrel এবং বৈজ্ঞানিক নাম Callosciurus pygerythrus। এর মাথা ও শরীরের দৈর্ঘ্য ২১ সেন্টিমিটার। শুধু লেজের দৈর্ঘ্য ১৮ সেন্টিমিটার। শরীর লম্বাটে, লেজ লম্বা ও লোমাবৃত।

এদের সামনের পা খাটো, পায়ের আঙুলে ধারালো নখ, যা দিয়ে তারা স্বচ্ছন্দে গাছে ওঠানামা করে। পেছনের লম্বা পা লাফ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি যোগায়।

আশ্চর্যের ব্যাপাল হলো- এদের দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ম এবং গাছের ডালপালার মধ্যকার দূরত্ব মাপার মতো প্রখর বোধশক্তি।

বাংলাদেশে প্রায় আট প্রজাতির কাঠবিড়ালির দেখা পাওয়া গেছে। বন্যপ্রাণী আলোকচিত্রী সৈয়দ আব্বাছ বাংলানিউজকে বলেন, বাদামি কাঠবিড়ালিকে ইরাবতি কাঠবিড়ালি বলে। এই ছবিগুলো আমি কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা থেকে চলতি বছরের মে মাসে তুলেছি। একদিন বিকেলে দেখলাম, ইরাবতি কাঠবিড়ালি তার তিন সন্তানকে দুধ পান করাচ্ছে। মাঝে মাঝে খেলাও করছে তাদের সঙ্গে।

তিনি আরও বলেন, এ দৃশ্যটি ছিল ভীষণ হৃদয়কাড়া। ইরাবতি কাঠবিড়ালি গাছের রঙের সঙ্গে মিশে থাকে বলে মানুষের চোখে খুব কম ধরা পড়ে। আর সন্তানসহ মায়ের দেখা পাওয়ার তো সত্যিই বিরল।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৫
বিবিবি/আরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।