শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার): বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম রেডিও ট্রান্সমিটারযুক্ত অজগর আশাকে চিরমুক্ত করে দেওয়া হলো। প্রায় দু’বছর তিন মাস ক্ষুদ্র ট্রান্সমিটারটি আশার শরীর থেকে অপসারণের পর তাকে শনিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ফুলবাড়ি এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন লাউয়াছড়া বিটের কর্মকর্তা রেজাউল করিম, সৌখিন বন্যপ্রাণি আলোকচিত্রী অভিনেতা আদনান আজাদ সাইফ, অজগর গবেষণা প্রকল্পের সহযোগী গবেষক মুজাফফর ফয়সল, বিশ্ব মৎস্য সংস্থার গবেষণা সহযোগী জহুরুল ইসলাম প্রমুখ।
অজগর গবেষণা প্রকল্পের সহযোগী গবেষক মুজাফফর ফয়সল বাংলানিউজকে বলেন, দু’ বছর ৩ মাস পর আশার শরীর থেকে আমরা ট্রান্সমিটার খুলে তাকে বনে ছেড়ে দিয়েছি। ২০১৩ সালের ১৮ জুলাই আশার শরীরে প্রথম রেডিও ট্রান্সমিটার স্থাপনের মাধ্যমে দেশে বন্যপ্রাণী গবেষণার একটি ঐতিহাসিক শুভ সূচনা ঘটেছিল।
তিনি আরো বলেন, দু’বছর পর্যন্ত অজগরের শরীরের স্থাপিত ট্রান্সমিটারের ব্যাটারির কার্যকারিতা রয়েছে। ব্যাটারি দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে আশার ট্রান্সমিটারের ফ্রিকুয়েন্সি পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রতিটি অজগরের শরীরের স্থাপিত রেডিও ট্রান্সমিটারটি আমরা দু’বছর পর্যন্ত রাখবো। তারপর তাদের ট্রান্সমিটার মুক্ত করে বনে ছেড়ে দেওয়া হবে।
আশার কাছ থেকে প্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য তথ্য প্রাপ্তি সম্পর্কে ফয়সল বলেন, ওদের নিজস্ব টেরিটোরি বা বিচরণ এলাকা রয়েছে। ওই নিজস্ব এলাকা থেকে তাকে অনেক দূরে নিয়ে ছেড়ে দিয়ে দেখা গেছে, কিছুদিনের মধ্যেই আশা তার নিজস্ব এলাকায় ফিরে গেছে। এর থেকে প্রমাণিত হয় অজগর নিজস্ব বিচরণ বা বসবাস এলাকায় থাকতেই বেশি নিরাপত্তা বোধ করে।
অজগর গবেষণা প্রকল্প সূত্র জানায়, অজগরের শরীরে রেডিও ট্রান্সমিটার স্থাপনের উদ্দেশ্য হচ্ছে বিপন্ন অজগর প্রজাতিটিকে আমাদের বনে বাঁচিয়ে রাখতে নানা তথ্য সংগ্রহসহ গবেষণা। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের অধীনে বন বিভাগের সহযোগিতায় ‘কারিনাম’ এ অজগর গবেষণা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৫
বিবিবি/এএসআর