শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার): হঠাৎ গাছের ডাল ভেঙে পানিতে ঝপ্পাস! তারপর মানুষের মতো হাত-পা নেড়ে সাঁতার কেটে ভেসে থাকার প্রাণবন্ত চেষ্টা। কিন্তু এ তো আর বন-জঙ্গল নয়, এ যে পুকুর! চারদিকে পানি দেখে ভয় পেয়ে যায় বানরটি।
এদিকে, পুকুরে গোসল করছিলো একদল কিশোর। তারাও বিষয়টিতে বেশ মজা পেলো! নিতান্ত কৌতুকবশত তারা ছুটে এসে বানরটিকে ধরে ফেললো।
ছেলের দল বানরটিকে লালন-পালন করবে বলে নিয়ে যায় তাদের বাড়িতে। তবে এক বনকর্মী বিষয়টি জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে তিনি বানরটিকে উদ্ধার করে বন্যপ্রাণি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হাতে তুলে দেন।
অবশেষে বানরটির ঠাঁই হলো আপন ঠিকানায়। এর মধ্য দিয়েই পৃথিবীব্যাপী বিপন্ন চশমা বানরটি রক্ষা পেলো।
এরপর অজগর গবেষণা প্রকল্পের উদ্যোগে শনিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে লাউয়াছড়ার জানকিছড়ায় একে অবমুক্ত করা হয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন লাউয়াছড়া বিটের কর্মকর্তা রেজাউল করিম, সৌখিন বন্যপ্রাণি আলোকচিত্রী ও অভিনেতা আদনান আজাদ সাইফ, বন্যপ্রাণি গবেষণা সংস্থা ‘ক্যারিনাম’র বন্যপ্রাণি গবেষক মুজাফফর ফয়সল, বিশ্ব মৎস্য সংস্থার গবেষণা সহযোগী জহুরুল ইসলাম প্রমুখ।
বন্যপ্রাণি গবেষণা সংস্থা ‘ক্যারিনাম’ এর বন্যপ্রাণি গবেষক মুজাফফর ফয়সল বাংলানিউজকে বলেন, কমলগঞ্জ উপজেলার বালিগাঁও থেকে এ চশমা বানরটিকে লাউয়াছড়ার গেটম্যান মজিদ মিয়া উদ্ধার করে আমাদের কাছে নিয়ে আসেন। পরে আমরা একে জানকিছড়ায় ছেড়ে দেই।
তিনি আরও বলেন, চশমা বানর পৃথিবীব্যাপী বিপন্ন বৃক্ষচারী প্রাণী। ইংরেজি নাম Phayre’s Leaf Monkey। চার-পাঁচ বছর আগেও লাউয়াছড়ায় আমি অনেক চশমা বানর দেখেছি। কিন্তু এখন তেমন একটা দেখছি না। এরা সম্পূর্ণভাবে গাছের উপর নির্ভরশীল প্রাণী। গাছ না থাকলে এরাও থাকবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৫
বিবিবি/এসএস